সংগীত গবেষক মোবারক হোসেন আর নেই
নিউজ ডেস্ক: চলে গেলেন বিশিষ্ট সংগীত গবেষক ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক মোবারক হোসেন খান। ইন্নালিল্লাহে ওয়া….. রাজিউন। মোবারক হোসেন খান কাল শনিবার দিবাগত রাতে নিজ বাসভবনে ঘুমন্ত অবস্থায় পরপারে পাড়ি জমান। মৃত্যুকালে মোবারক হোসেন খানের বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। সংগীত পরিচালক ফরিদ আহমেদ তার মৃত্যুর খবরটি জানিয়েছেন।
বর্তমানে তার মরদেহ বারডেম হাসপাতালের এর হিমঘরে রাখা হয়েছে।মরহুমের জানাজা ও দাফন তার সন্তান দেশে এলে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। তিনি উপমহাদেশের বিশিষ্ট সংগীতজ্ঞ ওস্তাদ আয়াত আলী খানের তৃতীয় পুত্র ।
মোবারক হোসেন খান ১৯৩৮ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারি তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের এক সঙ্গীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁ একজন প্রখ্যাত শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী এবং মাতা উমর-উন-নেসা খানম। তার চাচা ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতজ্ঞ। ছয় ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ।
তার বড় তিন বোন আম্বিয়া, কোহিনূর, ও রাজিয়া এবং বড় দুই ভাই প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ আবেদ হোসেন খান ও বাহাদুর হোসেন খান। মোবারক হোসেন খানের কর্মজীবন শুরু হয় বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠান প্রযোজক হিসেবে ১৯৬২ সালের ২০শে অক্টোবর। পরে তিনি বেতারের মহাপরিচালক হিসেবে ৩০ বছর দায়িত্ব পালন করেন। পবর্তীতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।
এসময়ে তিনি বেশ কিছু গ্রন্থ রচনা করেছেন। তার সঙ্গীত বিষয়ক লেখা প্রকাশের দায়িত্ব নেন রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই। লেখালেখি সূত্রে তার পরিচয় ঘটে কবি আল মাহমুদের সঙ্গে। আল মাহমুদ তখন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহকারী পরিচালক। তার মাধ্যমে ১৯৮০ সালে শিল্পকলা একাডেমি থেকে প্রকাশ করেন তার প্রথম সঙ্গীত বিষয়ক বই ‘সঙ্গীত প্রসঙ্গ’।
বিভিন্ন পত্রিকায় তার সঙ্গীত বিষয়ক লেখা নিয়ে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশ হয় দ্বিতীয় বই ‘বাদ্যযন্ত্র প্রসঙ্গ’। এরপর তিনি রচনা করেন ‘সঙ্গীত মালিকা’। এই বইটিও প্রকাশ করে বাংলা একাডেমি। পরবর্তীতে তিনি সঙ্গীত ও শিশু বিষয়ক ৫০টির মতো গ্রন্থ রচনা করেন। মোবারক হোসেন খান সঙ্গীতশিল্পী ফৌজিয়া ইয়াসমিনকে বিয়ে করেন।
তাদের তিন সন্তান কন্যা রিনাত ফৌজিয়া সঙ্গীতশিল্পী, পুত্র তারিফ হায়াত খান স্থপতি এবং অপর পুত্র তানিম হায়াত খান। সঙ্গীতে অবদানের জন্য তিনি ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত একুশে পদক, ১৯৯৪ সালে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারে ভূষিত হন এবং ২০০২ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।
