3594

মানুষের কল্যাণে ও জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাব: অর্থমন্ত্রী

মাইনুল হক: অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর নিকট আমাদের অনেক ঋণ। এটা আমাদের মনে প্রাণে বিশ্বাস করতে হবে। এই ঋণভার পরিশোধ করার জন্য আমাদেরকে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেক কাজ করতে হবে। আমরা আগামী বৎসর জানুয়ারী মাস থেকে শুরু করে পুরো বৎসর ব্যাপী বঙ্গবন্ধুর জস্ম শতবার্ষিকী উদযাপন করব এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার ৫০ বৎসর উদযাপন করব। আমাদের দুটো উদযাপনই বড়। বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে, আমরা একটি মাস সকল ট্রেনগুলোকে বঙ্গবন্ধুর ছবি দিয়ে ছাপিয়ে দিব। সকল ট্রেন সারা দেশে বঙ্গবন্ধুর ছবি নিয়ে চলবে। আমাদের বিমানগুলোও বঙ্গবন্ধুর ছবি নিয়ে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যাবে । সেখানেও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে তারা কথা বলবে। বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে সারা বিশ্ববাসীকে জানান দেওয়ার চেষ্টা করবে। আমরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে সারা বিশ্বের কাছে দেশের সকল মানুষের মাধ্যমে উপস্থাপন করতে চাই। আমরা সবাই যদি একই সময় বঙ্গবন্ধুর একটি পোস্টার বা প্লেকার্ড হাতে নিয়ে বাজারে থাকলে বাজারে, স্কুল থাকলে স্কুলে, বাড়িতে থাকলে বাড়িতে দাঁড়াই, তাহলে একই সময় সারা বিশ্বের কাছে দেখানোর ব্যবস্থা করতে পারব৷ আপনারা শুনে খুশি হবেন ইউনেস্কো আমাদের সাথে একাত্ম হয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী একসাথে উদযাপন করবে। সারাবিশ্বে উদযাপন হবে বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু তার সারা জীবন উৎসর্গ করেছেন আমাদের এই দেশের মানুষের জন্য৷ আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে স্বপ্ন ছিল, সে স্বপ্নকে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। স্বপ্নটি কিন্তু পরিষ্কার৷ আমাদের এই দেশটি অনেক রক্ত দিয়ে স্বাধীন হয়েছে৷ পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি রক্ত দিয়ে স্বাধীন করা দেশ হল দুটি। একটি হলো বাংলাদেশ অপরটি হল কম্বোডিয়া৷ এই দুইটি দেশের মানুষ অনেক রক্ত দিয়ে তাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে এনেছে৷ এই স্বাধীনতা আমাদেরকে অক্ষুন্ন রাখতে হবে৷ স্বাধীনতার যে মর্যাদা সে মর্যাদাকে রক্ষা করে সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে৷ সোনার বাংলাদেশ যদি আমরা গড়তে চাই, এর জন্য যে অবকাঠামো আছে সে অবকাঠামোকে আমাদের বিনির্মাণ করতে হবে। এই দেশে আগামী ১০ বছরের মধ্যে কোনো গরিব থাকবে না ইনাআল্লাহ৷ কোনো মানুষকে না খেয়ে বিছানায় শুয়ে থাকতে হবে না। আমরা ক্ষুধা মুক্ত করবো দেশকে। আমরা দারিদ্র মুক্ত করবো এদেশকে। সেই লক্ষ্যে আমাদের প্রক্ষেপণ। সেই প্রক্ষেপণ বাস্তবায়নের পর আমাদের লক্ষ্য হবে ২০৪১ সালে পৃথিবীর প্রথম সারির বিশটি দেশের মধ্যে একটি দেশ হওয়া। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে দায়িত্ব আমাকে দিয়েছেন, সেটি হল এই দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি। সেই কাজটি করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কে সাহায্য করতে হবে এটা আমার প্রতিশ্রুতি। এই সাহায্যের হাত ধরেই আপনাদেরকে আগামী দিনের জন্য কিছু স্বপ্নের কথা বলে যাই। ২০২৩ সাল নাগাদ আমাদের দেশের তিন কোটি ছেলে মেয়েদেরকে চাকরির ব্যবস্থা করব ইনশাআল্লাহ। এই দেশের কোন ছেলে মেয়ে লেখাপড়া শিখে শিক্ষিত হয়ে বেকার থাকবে ২০৩০ সালের পরে আমরা দেখতে চাই না। এর আগেই আমরা তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করব। তারা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিবে এবং দেশ গড়ার কাজে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করবে। বিশ্বাস করি আমাদের দেশের যুব সমাজ অনেক কর্মঠ এবং পরিশ্রমী। তাদের হারাবার কিছু নেই, যা হারিয়েছি আমরা একবারই হারিয়েছি৷ কিছু জীবন আমরা হারিয়েছি৷ কিন্তু আমরা জীবনের বিনিময় ও রক্তের বিনিময়ে পেয়েছি আমাদের সোনার বাংলাদেশ। আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি, একটি লাল সবুজের পতাকা পেয়েছি এবং একটি সুন্দর দেশ পেয়েছি। যার জন্য আমরা গর্ব করতে পারি।

ads

শনিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় লালমাই উপজেলা যুবলীগের আয়োজনে উপজেলার বাগমারা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এফসিএ এমপি এসব কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া যুবলীগের কোনও নেতাকর্মীর নীতি হতে পারে না। একটা দেশ গড়ে তুলতে হলে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন যুব সমাজের মেধা, শক্তি ও তাদের মননকে কাজে লাগানো। তাই সবসময় আমাদের মনে রাখতে হবে সততাই বড় শক্তি। একজন মানুষের জীবনে তার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো দুইটি। একটি হলো সততা এবং অন্যটি হলো লেখাপড়া। যদি লেখাপড়া থাকে তাহলে সততা অত্যান্ত সুন্দরভাবে গড়ে উঠবে। যদি লেখাপড়া না থাকে সততা কখনও ব্যবহার করতে পারবেন না। আপনি চাইলেও সত্যবাদী হতে পারবেন না। সততার পথ থেকে আপনাকে বারবার পিছু হাঁটতে হবে। আমার অনুরোধ থাকবে আজকে এইখানে যারা আছেন আপনারা নিজেদেরকে আলোকিত করুন এবং বাংলাদেশকে আলোকিত করুন৷ আপনাদের ছেলেমেয়েদেরকে লেখাপড়া থেকে বঞ্চিত করবেন না।

ads

ছোট ভাইদের কাছে অনুরোধ থাকবে, যারা আজকে ছাত্রলীগ করো তোমরা একদিন যুবলীগ করবে এবং তোমরা একদিন আওয়ামী লীগ করবে। তোমাদের কাছে আমরা একটি দেশ রেখে যাব আমানত হিসাবে। বঙ্গবন্ধুর যে স্বপ্ন, এদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধাদের যে স্বপ্ন এবং এদের সবার যে অবদান সে অবদানটা তোমাদের কাছে আমানত হিসেবে রেখে যাব৷ যেখানে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেষ করে যাবে, যেখানে আমি শেষ করে যাব, যেখানে আমরা রেখে যাব সেখান থেকেই তোমরা শুরু করবে, এদেশকে আরো সামনে এগিয়ে নিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নটা পূরণ করার জন্য। আমার জীবনের সর্বশেষ সবটুকু দিয়ে হলেও এ দেশের মানুষের কল্যাণে জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমি কাজ করে যাব। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সর্বক্ষণ কাজ করেন শুধু একটাই চিন্তা এদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি। মানুষের স্বাধীনতা কে প্রকৃত অর্থে স্বাধীন করার জন্য যে কাজটি দরকার সেটা হচ্ছে আর্থিক স্বাধীনতা এবং অর্থনৈতিক স্বাধীনতা। এই অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজকে আত্মসমর্পণ করেছেন এ জাতির প্রতি আপনাদের প্রতি। উনি অনেক কষ্ট করে যাচ্ছেন। আসুন আমরা তাঁর হাতকে শক্তিশালী করার জন্য আরও ভালোভাবে ও মনোযোগী হয়ে কাজগুলো করে, আমাদের যে স্বপ্ন সোনার বাংলা তৈরি করার সে কাজটি আমরা করব।

সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সদর দক্ষিণ উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি গোলাম সারোয়ার, লালমাই উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক, লালমাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: আব্দুল হামিদ, সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাবলু, লালমাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কে এম রতন সিংহ, লালমাই কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক মমিন, বাগমারা উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: আব্দুল কাসেম, লালমাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আয়াত উল্লাহ, লালমাই উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মজুমদার, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ইসরাক মাহমুদ (মাসুদ), লালমাই উপজেলা যুব লীগের সদস্য বাবু রাখাল দেবনাথ, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন-আহবায়ক আমান উল্লাহ আমান প্রমুখ৷

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এম. এ. মোতালেব হোসেন৷

ad

পাঠকের মতামত