3600

নবান্ন উৎসবে মাতল বুড়িচংবাসী

মাইনুল হক: সাবেক আইন বিচার ও সংসদ বিষয় মন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু বলেছেন, বাংলার কৃষিভিত্তিক জীবনে নবান্ন উৎসব বহু প্রাচীন। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে কৃষক যে ফসল ফলান, সেই ফসল ঘরে তোলার আনন্দের তুলনা হয় না। সেই আনন্দের বহিঃপ্রকাশই নবান্ন উৎসব। অগ্রহায়ণের নবান্ন নিয়ে আসে খুশির বার্তা। নতুন ধান ঘরে উঠানোর কাজে ব্যস্ত থাকে কৃষাণ কৃষাণীরা। আর ধান ঘরে উঠলে ঢেঁকির তালে মুখর হয় বাড়ির আঙিনা। অবশ্য যান্ত্রিকতার ছোঁয়ায় এখন আর ঢেঁকিতে ধান ভানার শব্দ খুব একটা শোনা যায় না। অথচ খুব বেশি দিন আগের কথা নয়, ঢেঁকি ছাঁটা চাল দিয়েই হতো ভাত খাওয়া। পিঠে পায়েস খাওয়ার ধুম পড়ে যেত। সুস্বাদু খাবারের গন্ধে ভরে ওঠত চারপাশ। পাড়ায় পাড়ায় চলত নবান্ন উৎসব। গ্রাম বাংলায় নতুন এক আবহের সৃষ্টি হত। নবান্ন উৎসবের সাথে মিশে আছে বাঙালিয়ানার হাজার বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সংহতির নানা দিক। প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালি জাতি ধর্ম বর্ণকে উপেক্ষা করে নবান্নকে কেন্দ্র করে উৎসবে মেতে ওঠত। একে অন্যের মধ্যে তৈরি হত এক সামাজিক মেলবন্ধনের।

ads

গ্রাম বাংলার হারানো এ ঐতিহ্য কে ফিরিয়ে আনতে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশব্যাপী নবান্ন উৎসবের আয়োজন করছেন।

ads

শনিবার দুপুরে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক ও বুড়িচং উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবং পীর যাত্রাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ জাকির হোসেন জাহের এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে হেমন্তের নতুন ধানে ভরে উঠে কৃষকের ঘরে নবান্নেরআনন্দ, এ আনন্দ ঘন উৎসব উদযাপনের লক্ষ্যে নানাবিধ অনুষ্ঠানের মধ্যে পীরযাত্রা পুর ইউনিয়ন পরিষদের মাঠে এবং জোবেদা খাতুন কলেজ মাঠে ৭০ প্রকারের পিঠার উৎসবের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোঃ আবুল ফজল মীর, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কায়জার মোহাম্মদ ফারাবী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ মাইন উদ্দিন, সদ্য পদোন্নতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোঃ শাখাওয়াত হোসেন, ডি আই ওয়ান মোঃ মাহাবুব আলম, আর্দশ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিয়া আফরিন, ব্রাক্ষণপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক অ্যাড. আব্দুল বারি, বুড়িচং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শামীম হোসেন, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ শহীদুল করিম, সমাজ সেবা কর্মকর্তা মোঃ শহীদুর রহমান খান, যুব উনয়ন অফিসার গোলাম আজম প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরুল হাসান৷ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা কালচারাল অফিসার আয়াজ মাবুদ।

অনুষ্ঠানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গ্রাম বাংলার ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে আলোচনা এবং গ্রামীণ ভাটিয়ালি, বাউল, পল্লী গীতি সহ বিভিন্ন মনোমুগ্ধকর সংগীত পরিবেশন করেন বিখ্যাত কন্ঠ শিল্পী বৃন্দ। দিন ব্যাপি এই মনোমুগ্ধকর নবান্ন উৎসবের আয়োজনে এলাকার হাজার হাজার কৃষক সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন উপভোগ করেন।

ad

পাঠকের মতামত