জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি মন্টু ও সা. সম্পাদক খশরু
নিউজ ডেস্ক: আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন জাতীয় শ্রমিক লীগের নতুন সভাপতি ফজলুল হক মন্টু ও আজম খসরুকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই বছরের জন্য শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া আবুল কালাম আজাদ কার্যকরী সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে।
শনিবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে কাউন্সিল অধিবেশনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শ্রমিক লীগের ৩৫ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির বাকি সদস্যদের নাম কয়েকদিনের মধ্যে ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়।
এর আগে আজম খসরু আগের কমিটিতে প্রচার সম্পাদক ও আবুল কালাম আজাদ সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। নব-নির্বাচিত সভাপতি ফজলুল হক মন্টু একজন মুক্তিযোদ্ধা। সদ্য বিদায়ী কেন্দ্রীয় কমিটিতে সভাপতি ছিলেন শুক্কুর মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সিরাজুল ইসলাম।
এর আগে সকাল ১১টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রথম অধিবেশনের পর বিকেল ৩টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে দ্বিতীয় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। অধিবেশন শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তাদের নাম ঘোষণা করেন।
অধিবেশনে প্রার্থীর নাম চাওয়া হলে সাতজন সভাপতি ও ১৩ জন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করা হয়। এর পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ নেতারা প্রার্থীদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন।
বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ শীর্ষ নেতারা সমঝোতার চেষ্টা করেন। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় সভাপতি ফজলুল হক মন্টু, সাধারণ সম্পাদক কে এম আজম খশরু ও মোল্লা আবুল কালাম আজাদকে কার্যকরী সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।
পরে কমিটির নাম ঘোষণা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে যাদের নাম এসেছে তাদের নিয়ে আমরা সমঝোতায় বসেছিলাম। সমঝোতায় কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত না আসায় সবাই প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ওপর দায়িত্ব দিয়েছেন। শেখ হাসিনা শ্রমিকলীগের এ তিনজনের নাম বলেছেন। আশা করি, আপনারা এ কমিটি নিয়ে শ্রমিক লীগ সুসংগঠিত করে রাখবেন।
এর আগে সকালে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে আরও ছিলেন- যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রমুখ।
জাতীয় শ্রমীক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জনতা ব্যাংক ট্রেড ইউনিয়নের নেতা সিরাজুল ইসলাম। আমন্ত্রিত বিদেশি অতিথির মধ্যে বক্তব্য রাখেন, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কান্ট্রি ডিরেক্টর তুমো জোহানেস পুটিয়ানেন, আই টি ইউ সি এপিএর জেনারেল সেক্রেটারি শুইয়া ইয়াশিদা, সার টুক এর জেনারেল সেক্রেটারি লাক্সমেন বাহাদুর বাসনেট। এছাড়া শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজসহ শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। এছাড়া সম্মেলনে সারা দেশ থেকে ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার প্রায় আট হাজার কাউন্সিলর ও ডেলিগেট অংশ নেন।
এর আগে ১৯৬৯ সালের ১২ অক্টোবর জাতীয় শ্রমিক লীগ যাত্রা শুরু করে। সংগঠনটির সর্বশেষ সম্মেলন হয় ২০১২ সালের ৯ জুলাই। তখন সভাপতি নির্বাচিত হন নারায়ণগঞ্জের শ্রমিক নেতা শুক্কুর মাহমুদ এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন জনতা ব্যাংক ট্রেড ইউনিয়নের নেতা সিরাজুল ইসলাম। ২ বছর মেয়াদের ওই কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত চার বছর পূর্বে। জাতীয় শ্রমিক লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০১২ সালের ১৯ জুলাই।
কমিটি ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাধারণ সম্পাদক আজম খশরু বলেন, সারাদেশে শ্রমিক লীগকে সুসংগঠিত করতে আমরা কাজ করে যাবো। প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বাস অক্ষুণ্ন রাখবো।
ফজলুল হক মন্টু সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে শ্রমিকলীগের সভাপতি পদে দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করবো।