জুয়াড়ির সাথে সাকিবের যেসব কথপোকথন হয়েছিলো
স্পোর্টস ডেস্কঃ ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব গোপন রাখার অভিযোগে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে বাংলাদেশের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে আইসিসি। তবে, দোষ স্বীকার করার কারণে, তার ১ বছরের শাস্তি স্থগিত করেছে আইসিসি। ফলে তিনি এক বছর পরই আবার খেলতে পারবেন। তবে এর মধ্যে নতুন করে কোনো আইন ভাঙতে পারবেন না। তাহলেই শুধু তার একবছরের সাজা বাতিল হবে।
তিনটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগে ভিত্তিতে তাকে এ সাজা দেয় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
জানা গেছে, আইসিসির দুর্নীতি নিয়ন্ত্রক সংস্থা (আকসু) সাকিবকে ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি প্রথম জিজ্ঞাসাবাদ করে। এরপর আবার একই বছরের ২৭ আগস্ট জিজ্ঞাসাবাদ করে। এ সময় দীপক আগারওয়াল নামে এক জুয়াড়ির সাথে কথা হওয়ার বিষয়ে জানান তিনি।
জিজ্ঞাসাবাদে সাকিব জানান, সাকিবের এক পরিচিত আগারওয়ালের কাছে সাকিবের নম্বর দেয়। ২০১৭ সালের নভেম্বরের দিকে এ ঘটনা ঘটে। এরপর আগারওয়ালের সাথে সাকিবের হোয়াটসআপ ম্যাসেজ চালাচালি হয় এবং আগারওয়াল সাকিবের সাথে দেখা করতে চায়।
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ত্রি দেশীয় সিরিজের সময় আবারও আগারওয়াল ও সাকিবের মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয়। এ সময় দেখা যায় ২০১৮ সালের ১৯ জানুয়ারিতে একটা ম্যাসেজে ম্যান অব দি ম্যাচ হওয়ায় অভিনন্দন জানিয়ে আগারওয়াল ম্যাসেজ করে ‘do we work in this or i wait till the ipl’। সেসময় বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং জিম্বাবুয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ চলছিলো।
এই ম্যাসেজে ‘work’ শব্দ দ্বারাই সাকিবকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে বলে জানায় আইসিসি। কিন্তু এ কথপোকথনের কথা আকসুকে কিছু জানাননি সাকিব।
এরপর ২০১৮ সালে ২৩ এ জানুয়ারি আগারওয়াল আবারও সাকিবকে ম্যাসেজ করে। ম্যাসেজে লেখে ‘bro anything in this series?’
এই ম্যাসেজের ব্যাপারে সাকিব জিজ্ঞাসাবাদে জানান যে, আগারওয়াল এই ম্যাসেজের মাধ্যমে ত্রি দেশীয় সিরিজের তথ্য জানতে চেয়েছিলো। এ বিষয়েও আকসুকে জানাননি সাকিব।
এরপর ২০১৮ সালে ২৬ এপ্রিল আইপিএলে কিংস এলেভেন পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে সানরাইজার্স হায়দ্রাবদের হয়ে খেলার সময় আবারও ম্যাসেজ দেয় আগারওয়াল। এবং নির্দিষ্ট এক খেলোয়াড় খেলবে কিনা তা জানতে চায়, কিছু ভিতরের তথ্য জানতে চায়।
এ সময় বিট কয়েন, ডলার ও সাকিবের ডলারের অ্যাকাউন্ট নিয়ে সাকিব ও আগারওয়ালের সাথে ম্যাসেজ চালাচালি হয়।
তদন্ত রিপোর্টে আরও বলা হয়, ২৬ এপ্রিলের পর থেকে আগারওয়ালের অনুরোধে হোয়াটসঅ্যাপের ম্যাসেজগুলো ডিলেট করে দেন সাকিব।
তদন্তে রিপোর্টে বলা হয়, সাকিব ২০১৮ সালের ১৯ ও ২৩ জানুয়ারি এবং ২৬ এপ্রিলে আগারওয়ালের সাথে কথপোকথন হলেও জানাননি আকসুকে। তাই তার বিরুদ্ধে অনৈতিক প্রস্তাব পেয়েও না জানানোর অভিযোগ আনা হয়। এরপর সাকিব আল হাসানকে সবধরনের ক্রিকেট থেকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে আইসিসি।