2705

কুমিল্লার ধনুয়াখলায় গৃহবধুর রহস্যজনক মৃত্যু শশুর গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার ধনুয়াখলায় কাকলি বেগম (২৫) নামের দুই সন্তানের জননীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় শশুর ফরিদ মিয়া (৬৫) গ্রেফতার হয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে কোটবাড়ী এলাকা থেকে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট ফাঁড়ির পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। অপর দিকে স্বামী ইউসুফ ও শাশুড়ী পলাতক রয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার ধনুয়াখলা স্বামীর বাড়ি থেকে গৃহবধু কাকলী বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে। কাকলির পরিবারের অভিযোগ স্বামী ও স্বামীর পরিবারের লোকজন কাকলীকে হত্যা করে আত্মহত্যা ঘটনা সাজানোর চেষ্টা করেছে। আর স্বামীর পরিবার বলছে কাকলী আত্মহত্যা করেছে। স্থানীয়রা জানান, নিহতের স্বামীর পরিবারের বাহিরে অন্য কেউ কাকলীর ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়নি। ঘটনা রহস্যজনক। পুলিশ বলছেন ময়নাতদন্ত রির্পোট পাওয়া গেলে হত্যা না আত্মহত্যা নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে এ বিষয়ে নিহত কাকলী আক্তারের মা সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে কাকলীর স্বামী-শশুর ও শাশুড়িকে আসামী করে কোতয়ালী মডেল থানায় আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলা করেন।

ads

জানা যায়, গত ২৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার কালির বাজার ইউনিয়নের ধনুয়াখলা গ্রামের স্বামীর বাড়ি থেকে দুই সন্তানের জননী কাকলি বেগমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।ঘটনার পর থেকে স্বামী ইউসুফ ও শশুর ফরিদ মিয়া ও শাশুড়ী পলাতক রয়েছেন। গতকাল দুপরে কোটবাড়ী এলাকা থেকে পুলিশ মামলার দ্বিতীয় আসামী ফরিদ মিয়াকে গ্রেফতার করেন।

উল্লেখ্য, ৭-৮ বছর আগে আদর্শ সদর উপজেলার কালির বাজার ইউনিয়নের কামাইরবাগ গ্রামের নির্মান শ্রমিক শাহ আলমের কন্যা কাকলি আক্তারের সাথে একই ইউনিয়নের পাশ্ববর্তী গ্রাম ধনুয়াখলা গ্রামের ফরিদ মিয়ার পুত্র প্রবাসী ইউসুফ মিয়ার সাথে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে সাবা ও ইরা দুইটি কন্যা সন্তান রয়েছে। সাবার বয়স ৫ বছর ও ইরার বয়স ২ বছর। নিহত কাকলী বেগমের স্বামী ইউসুফ সৌদি প্রবাসী। চলতি অক্টোবর মাসে ছুটিতে দেশে আসে। ইউসুফ দেশে আসার পর স্ত্রী কাকলী বেগমের সাথে পারিবারিক কলহ চলে আসছিল। এ বিষয়টি উভয় পরিবারই জানত।

ads

নিহত কাকলী বেগমের বড় বোন বিউটি আক্তার জানান, বৃহস্পতিবার সকালে কাকলী আক্তার তার মা সুফিয়া বেগমকে ফোন দিয়ে তাকে মারধর করার বিষয়টি জানায়। বিকেলে তাঁর মা সুফিয়া বেগম কাকলীর শ্বশুর বাড়ীতে এসে দেখে বাড়িতে কাকলীর লাশ পরে আছে। কাকলীর পরিবারের অভিযোগ তাকে স্বামী-শশুর মিলে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আত্মহত্যার ঘটনা সাজানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। তার গায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অপরদিকে স্বামীর পরিবারের লোকজন জানিয়েছে কাককি ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। রুমের দরজা ভেঙ্গে তাকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে নিলে ডাক্তার মৃত ঘোষনা করে। পরে লাশ বাড়িতে নিয়ে আসে।

ক্যান্টনমেন্ট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক শেখ মাহমুদুল ইসলাম রুবেল জানান, এ বিষয়ে আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলা হয়েছে। সোমবার মামলার ২ নং আসামী ফরিদ মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে ঘটনার পর থেকে স্বামী পলাতক রয়েছে। তাকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ad

পাঠকের মতামত