26395

পরিস্থিতি বুঝে আবারও লকডাউন দেওয়া হতে পারে: ওবায়দুল কাদের

নিউজ ডেস্ক: মানুষের জীবন ও জীবিকার স্বার্থে সরকার কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করলেও পরিস্থিতি বিবেচনায় আবারও কঠোর লকডাউন দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আজ সোমবার (৯ আগস্ট) সড়ক ও জনপথ অধিদফতরে গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে পণ্য পরিবহনের উৎসমূলে এক্সেল নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন শীর্ষক প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর এবং নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের মধ্য চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী, বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন এবং নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাসহ অন্যরা।

ads

করোনার প্রকোপ ভয়াবহ আকার ধারণ করলে গত ১ জুলাই থেকে সারাদেশে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। এ সময় জরুরি পরিষেবা ছাড়া গণপরিবহন, দোকানপাট, অফিস-আদালতসহ সবকিছু বন্ধ ছিল। গেলো মাসের মাঝামাঝি সময়ে ঈদুল আজহা উপলক্ষে কিছুটা শিথিল করে সরকার। ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে ফের এই বিধিনিষেধ জারি আছে; যা এক দফায় মেয়াদ বেড়ে শেষ হচ্ছে আগামীকাল মঙ্গলবার (১০ আগস্ট)।

এর আগেও লকডাউনের পর গণপরিবহন চালু করা হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক আসন খালি রাখা হতো, এজন্য বাড়ানো হয়েছিল ভাড়াও। তবে আগামী ১১ আগস্ট থেকে পূর্ণ আসনে যাত্রী নিয়েই চলাচল করবে গণপরিবহন। আর এবার মহামারি শুরু হওয়ার আগে যে ভাড়া ছিল সে ভাড়াতেই গণপরিবহন চলবে, বর্ধিত ভাড়ায় নয় জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এবং জনস্বার্থে সব স্টেকহোল্ডার ও মালিক-শ্রমিকের সহযোগিতা কামনা করছি।

ads

সড়কে চলাচলের আগে গাড়ি জীবাণুমুক্ত, পরিষ্কার করার নির্দেশনা দিয়ে মন্ত্রী বলেন, যাত্রীদের শতভাগ মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি এ বিষয়ে বিআরটিএকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।

দেশের সড়ক-মহাসড়কে এত উন্নয়নের পরও শৃঙ্খলা ফিরে না আসায় এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, যেকোনও মূল্যে সড়ক-মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে।

তিনি বলেন, সড়ক নির্মাণ করতে হবে কাজের শতভাগ গুণগত মান বিবেচনায় নিয়ে। যেসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজের মান ভালো করে না এবং একই প্রতিষ্ঠান একাধিক কাজ ভাগিয়ে নেয়, সেসব প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাক লিস্ট করতে হবে। এ সময় কিছু সংখ্যক প্রকৌশলীকেও দোষারোপ করেন ওবায়দুল কাদের।

এদিকে গণটিকা কর্মসূচিতে জনগণের ব্যাপক সাড়া দেখে কাণ্ডজ্ঞানহীন সমালোচনা প্রকৃতপক্ষে বিএনপি নেতাকর্মীদের ‘গণহতাশার’ বহিঃপ্রকাশ উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, এ নিয়ে বিএনপি কর্মীদের চেয়ে তাদের নেতারাই বেশি হতাশাগ্রস্ত।

‘গণটিকা লোক দেখানো নয়’ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ভ্যাকসিন গ্রহণে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ততা বিএনপি নেতারা চোখ খুলে দেখলেই দেখতে পাবেন।

বিএনপিকে শেখ হাসিনার জনকল্যাণমুখী রাজনীতি থেকে শিক্ষা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, জনগণের প্রতি শেখ হাসিনার ডিপ অ্যান্ড এবাইডিং কমিটমেন্ট থেকে বিএনপি চাইলে অনেক কিছুই শিখতে পারতো। কিন্তু ইতিহাসের নির্মম সত্য হচ্ছে বিএনপি ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি। রক্তাক্ত ষড়যন্ত্রে বিএনপির অতীত কলঙ্কিত।

অল্প সময়ের ব্যবধানে সরকার প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন সংগ্রহে সফল হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি ভেবেছিল টিকা পেতে বছরের পর বছর লেগে যাবে। পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন মজুত নিয়ে সরকার সফলভাবে গণটিকা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ায় বিএনপির সহ্য হচ্ছে না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা অন্তর্দহনে দগ্ধ হচ্ছে। এমনিতেই আগস্ট মাস এলে বিএনপি অতীতের রক্তাক্ত বিশ্বাসঘাতকতায় অন্তর্জ্বালায় ভোগে। ভ্যাকসিন নিয়ে সরকারের সাফল্যে বিএনপির অস্থিরতা এবং মর্মযন্ত্রণা বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণে। তাই তো তারা আবোল-তাবোল বকছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জনগণের সঙ্গে প্রতারণা আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনা কখনও করে না, করবেও না। বরং বিএনপির দলীয় প্রধানের একাধিক ভুয়া জন্মদিন পালন করে নিজেরাই এখন জনগণের কাছে প্রতারক হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে।

জনগণের প্রতি বিএনপির যদি ন্যূনতম দায়িত্ববোধ থাকতো তাহলে অন্তত টিকাদানের সময় সরকারের সমালোচনা বন্ধ করে মানুষের পাশে দাঁড়াতো, বলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, অবশ্য তাদের অব্যাহত মিথ্যাচার আর জনবিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে জনরোষের শিকার হওয়ার আশঙ্কা থেকেই নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করছে।

ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, রাজনীতি মানে সবকিছু নিয়ে মিথ্যাচার নয়, অন্ধ সমালোচনা নয়।

অকপটে সত্য উচ্চারণের সাহস রাজনৈতিক দলের থাকতে হয়, কিন্তু বিএনপি অব্যাহত মিথ্যাচার চর্চায় সেটিও হারিয়ে ফেলছে বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

ad

পাঠকের মতামত