50515

পাকিস্তান সফরে ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি তিন দিনের সরকারি সফরে পাকিস্তান পৌঁছেছেন। দেশটিতে নতুন সরকার গঠনের পর এটিই প্রথম কোনো রাষ্ট্রপ্রধানের সফর।

সোমবার সকালে রাজধানী ইসলামাবাদের নূর খান বিমান ঘাঁটিতে অবতরণ করে ইরানি প্রেসিডেন্টকে বহনকারী বিমান। এসময় ইরানি প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানান পাকিস্তানের গৃহায়ন ও পূর্তমন্ত্রী মিয়া রিয়াজ হোসেন পীরজাদা।

ads

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার স্ত্রী এবং একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল রয়েছে। দলটিতে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্য এবং সিনিয়র কর্মকর্তারাও রয়েছেন।

মন্ত্রণালয় বলেছে, পাকিস্তান-ইরান সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে এবং বাণিজ্য, সংযোগ, জ্বালানি, কৃষি এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য উভয় পক্ষের বিস্তৃত এজেন্ডা থাকবে। তারা সন্ত্রাসবাদের অভিন্ন হুমকি মোকাবিলায় আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নানা ঘটনা এবং দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা করবেন।

ads

বিবৃতি আরও বলা হয়, তিন দিনের সফরে দেশের পূর্বাঞ্চলীয় শহর লাহোর এবং দক্ষিণের বন্দর শহর করাচি পরিদর্শন করার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এবং অন্যান্য কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করবেন ইরানি প্রেসিডেন্ট রাইসি।

এদিকে ইরানি প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তায় ব্যাপক প্রস্ততি নিয়েছে পাকিস্তানের পুলিশ। রাইসির নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে ইসলামাবাদের প্রধান মহাসড়কগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে, এছাড়া করাচিতে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছিল।

রাইসির সফর ইসলামাবাদের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। কারণ চলতি বছর অভূতপূর্ব পাল্টাপাল্টি সামরিক হামলার পর দুই মুসলিম প্রতিবেশী সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চাইছে। এছাড়াও ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলাসহ উত্তেজনা চলছে, এমন সময়ে রাইসির পাকিস্তান সফরে অন্য দিক দিয়েও গুরুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত কয়েক দশক ধরে পাকিস্তান ও ইরানের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে। তবে চলতি বছরের জানুয়ারিতে পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর মুসলিম প্রধান দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সাময়িক কূটনৈতিক উত্তেজনাও দেখা দেয়।

প্রথমে পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে বিমান হামলা চালায় ইরান। এতে দুই শিশু নিহত এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন। প্রথম দিকে হামলার ঘটনায় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাত ছিল বলে দাবি করে তেহরান। তবে তারা বেলুচিস্তানে জইশ আল-আদল নামে এক সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর দুটি ঘাঁটিতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা স্বীকার করে বিবৃতি দেয়।

এর একদিন পরই ইরানের সিস্তান-বেলুচিস্তান প্রদেশে সন্ত্রাসী আস্তানাগুলোর বিরুদ্ধে হামলা চালায় পাকিস্তান। এতে শিশুসহ সাতজন নিহত হয়।

এদিকে এরপরই পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম কূটনৈতিক উত্তেজনাও দেখা দেয়। ইরান থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করেছে পাকিস্তান। একইসঙ্গে পাকিস্তানে নিযুক্ত ইরানি রাষ্ট্রদূতকেও ইসলামাবাদে না ফিরতে বলা হয়। তবে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে আলোচনার পর পাকিস্তান ও ইরানের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়।

সূত্র: ডন, রয়টার্স

ad

পাঠকের মতামত