ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে নিরাপত্তা গ্যারান্টি চেয়েছেন জেলেনস্কি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মার্কিন নির্বাচনের পর নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বিষয়ক যে কোনও আলোচনায় ইউক্রেনের নিরাপত্তা গ্যারান্টির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিতে বলেছেন। ৭ ডিসেম্বরের আলোচনার সঙ্গে পরিচিত দুটি সূত্র ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়েছে। এক প্রতিবেদনে এই খবর জানিয়েছে সংস্থাটি।
প্যারিসে এই বৈঠকের আয়োজন করেছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। বৈঠকে ট্রাম্পের সঙ্গে একটি সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন ইউক্রেনের নেতা। ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ক্ষমতায় যাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই সংঘাতের অবসান ঘটাবেন তিনি। তার এই প্রতিশ্রুতি কিয়েভের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। কেননা, দেশটি মনে করছে, এটি মূলত মস্কোর শর্তানুযায়ী হতে পারে। আর এমনটি হলে নিজ ভূখণ্ডের কিছু অংশ হয়তো তাদের হারাতে হবে ইউক্রেনকে।
বৈঠকের বিষয়ে ব্রিফ করা হয়েছে এমন পাঁচজনের সঙ্গে কথা বলেছে রয়টার্স। তাদের মধ্যে চারজন জানিয়েছে, উপদেষ্টাদের ছাড়াই তিন নেতা রয়টার্সের সঙ্গে ৩৫ মিনিট কথা বলেছেন। এ সময় অবশ্য শান্তির জন্য কোনও দৃষ্টিভঙ্গির সুনির্দিষ্ট বিবরণ নিয়ে আলোচনা করেননি তারা। তবে ট্রাম্প পুনরাবৃত্তি করেছিলেন, অবিলম্বে তিনি যুদ্ধবিরতি ও যুদ্ধ দ্রুত শেষ করা নিয়ে আলোচনা চান।
বৈঠকে ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত অবসানের আলোচনা কীভাবে কার্যকর হতে পারে এ নিয়ে কিছু প্রাথমিক সূত্রের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যদিও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আলোচনায় জড়িত করার প্রক্রিয়াটি জটিল এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা এখনও স্পষ্ট নয়।
একটি সূত্র জানিয়েছে, সাক্ষাতের সময় ট্রাম্প একটি বন্ধুত্বপূর্ণ, সম্মানজনক ও খোলামেলা আচরণ করেছিলেন। এ সময় কিছু বলার চেয়ে তিনি বরং শোনতেই বেশি আগ্রহী ছিলেন বলে মনে হয়েছিল।
এই প্রতিবেদনের জন্য ট্রাম্প শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে অবিলম্বে কোনও সাড়া পায়নি রয়টার্স।
ট্রাম্প কিংবা তার ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তা যারা ইউক্রেনের সঙ্গে কাজ করছেন, তারা ঠিক কীভাবে যুদ্ধের সমাধানের পরিকল্পনা করছেন এবং যে কোনও মীমাংসার অংশ হিসেবে ইউক্রেনের সুরক্ষা গ্যারান্টির দাবিটিকে দেখছেন এসব বিষয় এখনও স্পষ্ট করেননি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের একটি সূত্র বলেছেন, ‘বৈঠকের সময় কিছু মূল বিষয়ের উল্লেখ করা হয়েছিল—উদাহরণস্বরূপ, বলা হয়েছিল, শান্তির নিশ্চয়তা প্রয়োজন, কেননা একটি যুদ্ধবিরতিই কেবল যথেষ্ট নয়। যথাযথ গ্যারান্টি ছাড়াই পুতিন আবারও এটি ভঙ্গ করতে পারেন, যেমন তিনি আগেও করেছেন।’
বৈঠকে এ বিষয়টি কীভাবে গ্রহণ করা হয়েছিল জানতে চাইলে সূত্রটি ট্রাম্পকে উল্লেখ করে বলেছিলেন, ‘তিনি সব বিবরণ নিয়ে ভাবছেন।’
ন্যাটো সামরিক জোটে যোগদানের আমন্ত্রণের জন্য বিদায়ী মার্কিন প্রশাসনকে চাপ দিয়ে আসছে কিয়েভ। দীর্ঘদিন ধরে তারা বলে আসছে, পরবর্তীতে সম্ভাব্য কোনও নতুন রুশ আক্রমণ ঠেকাতে তাদের নিরাপত্তা গ্যারান্টির প্রয়োজন হবে।
তবে, ইউক্রেনে শান্তি অর্জনের জন্য মস্কোর সব বাহিনীকে দেশটি থেকে প্রত্যাহার করতে হবে—পূর্বের এমন জেদ ছেড়ে জেলেনস্কি সম্প্রতি স্বীকার করেছেন, যুদ্ধের একটি কূটনৈতিক সমাধান জীবন রক্ষা করবে।