51683

ফিলিস্তিনিদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করছে মাইক্রোসফট!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন বিদেশে থাকা কয়েকজন ফিলিস্তিনি। কোনো সতর্কবার্তা ছাড়াই মার্কিন টেক জায়ান্টটি তাদের ই-মেইল অ্যাকাউন্ট মুছে দিচ্ছে। এ ছাড়া অনলাইনের অন্যান্য সেবা থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, মাইক্রোসফট তাদের নিজেদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং চাকরির বিজ্ঞপ্তিগুলো অ্যাকসেস করতে দিচ্ছে না। পাশাপাশি স্কাইপ ব্যবহার করে তারা যুদ্ধাক্রান্ত গাজায় নিজেদের আত্মীয়দের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারছেন না।

ads

মাইক্রোসফটের দাবি, ওই ফিলিস্তিনিরা শর্ত ভঙ্গ করেছেন। তবে ফিলিস্তিনিরা এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।

সৌদি আরবে বাস করা ইয়াদ হামেতো নামের এক ফিলিস্তিনি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেন, ‘অনলাইনে তারা আমাকে মেরে ফেলেছে। আমি ২০ বছর ধরে যে ই-মেইল অ্যাকাউন্টটি ব্যবহার করে আসছিলাম, সেটি তারা স্থগিত করেছে। আমি সব কাজের ক্ষেত্রে এটিই ব্যবহার করতাম।’

ads

তিনি আরও জানান, স্কাইপ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া তার পরিবারের জন্য একটি বড় ধাক্কা।

গাজায় ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর অভিযানের সময় প্রায়ই ইন্টারনেট বন্ধ থাকে। আর আন্তর্জাতিক কল সেখানে খুবই ব্যয়বহুল।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকে গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ৩৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি এতে নিহত হয়েছে।

স্কাইপের সাবস্ক্রিপশন কিনে কম খরচে গাজায় মোবাইলে ফোন করা সম্ভব। এমনকি ইন্টারনেট সুবিধা বাধাগ্রস্ত হলেও। ফলে এই সুবিধা অনেক ফিলিস্তিনির কাছেই অত্যন্ত মূল্যবান।

বিবিসির সঙ্গে কথা বলা কয়েকজন মনে করছেন, হামাস সম্পৃক্ততার অভিযোগে তাদের সন্দেহ করা হচ্ছে। হামাসকে বিশ্বের অনেক দেশেই সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।

ইয়াদ হামেতো এ ধরনের কোনো যোগাযোগ থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের রাজনৈতিক কোনো ব্যাকগ্রাউন্ড নেই। আমরা একেবারেই সাধারণ মানুষ যারা পরিবারের খোঁজ খবর রাখার চেষ্টা করছি।’

হামাসের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগেই কি অ্যাকাউন্টগুলো বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে মাইক্রোসফট সরাসরি কোনো মন্তব্য করেনি। তবে প্রতিষ্ঠানটির একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, কোনো একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে ফোন করার জন্য তারা কাউকে নিষিদ্ধ করে না।

বিষয়টির বিস্তারিত কোনো ব্যাখ্যা না দিয়ে তিনি বলেন, ‘সাধারণত জালিয়াতির মতো কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকলে এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়।’

আমেরিকায় বসবাস করা সালাহ ইলসাদি গত এপ্রিলে বিবিসিকে বলেছিলেন, তার মাইক্রোসফটের হটমেইল অ্যাকাউন্টের সঙ্গে সম্পর্কিত সব সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি ১৫ বছর ধরে হটমেইল ব্যবহার করছি। আমাকে কোনো কারণ ছাড়াই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি আমি কোনো শর্ত ভঙ্গ করেছি তাও স্পষ্ট করা হয়নি। আমি অন্তত ৫০টি ফর্ম ফিলাপ করেছি, এবং তাদের সঙ্গে অজস্রবার যোগাযোগ করেছি।

খালিদ ওবাইদ নামের আরেক ফিলিস্তিনি জানান, তিনি আর মাইক্রোসফটকে বিশ্বাস করেন না। তিনি বলেন, ‘আমি ফোন করার জন্য একটি প্যাকেজ কিনেছিলাম। কিন্তু ১০ দিন পর কোনো কারণ না জানিয়েই আমাকে নিষিদ্ধ করা হলো। এর একটাই কারণ, আমি ফিলিস্তিনি আর গাজায় ফোন করছিলাম।’

ad

পাঠকের মতামত