জিনজিয়াংয়ে ‘অবৈধ ধর্মীয় কর্মকাণ্ড’ নিয়ন্ত্রণে কঠোর হওয়ার আহ্বান শি’র
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং জিনজিয়াং প্রদেশে একটি অঘোষিত সফর করেছেন। সফরে তিনি আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের কঠোরভাবে অর্জিত সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে অবৈধ ধর্মীয় কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে প্রচেষ্টা আরও জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রায় এক দশক আগে এই অঞ্চলের উইঘুর এবং তুর্কি মুসলিম জনসংখ্যার ওপর দমন-পীড়ন শুরুর পর এটি ছিল প্রদেশটিতে তার দ্বিতীয় সফর। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, উরুমকি শহরে শনিবার পৌঁছান শি। সেখানে তিনি সরকারি কাজের প্রতিবেদন শুনেন এবং কমিউনিস্ট পার্টি ও সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে একটি ভাষণ দেন। সফরে তিনি কর্মকর্তাদের ইসলামের চীনাকরণের প্রচার ও কার্যকরভাবে অবৈধ ধর্মীয় কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিয়ে ফেরার পথে জিনজিয়াং সফর করেন তিনি। এর আগে গত বছর জুন মাসে তিনি প্রথম অঞ্চলটি সফর করেন।
চীনা প্রেসিডেন্ট জোর দিয়ে বলেছেন, সামাজিক স্থিতিশীলতাকে সব সময় অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এটিকে কাজে লাগাতে হবে। অঞ্চলটি এখন আর প্রত্যন্ত নয়, বেল্ট ও রোড উদ্যোগের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। এটি দেশীয় ও বিদেশি পর্যটনের জন্য উন্মুক্ত হওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেছেন, স্থানীয় কর্মকর্তাদের অবশ্যই ইতিবাচক প্রচার এবং জিনজিয়াংয়ের উন্মুক্ততা ও আত্মবিশ্বাসকে তুলে ধরতে হবে। একই সময়ে মিথ্যা জনমত ও নেতিবাচক বা ক্ষতিকর বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করতে হবে। চীনা ধাঁচের আধুনিকায়নের প্রক্রিয়ায় আমরা একটি সুন্দর জিনজিয়াং গড়ে তুলব। যা হবে ঐক্যবদ্ধ, সম্প্রীতির, সমৃদ্ধ ও ধনী।
জিনজিয়াং প্রদেশে এবং এর মুসলিম উইঘুর জনগোষ্ঠীর ওপর শি জিনপিংয়ের দমন-পীড়নকে কিছু সরকার, মানবাধিকার গোষ্ঠী এবং আইনি সংস্থাগুলো গণহত্যার চেষ্টা হিসেবে অভিহিত করেছে।
চীনা কর্তৃপক্ষ অন্তত ১০ লাখ মানুষকে বন্দি শিবির ও পুনঃশিক্ষা কেন্দ্রে আটক করেছে। ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি ঠেকাতে নিপীড়ন এবং ব্যাপক নজরদারি জারি করেছে। গবেষণা গোষ্ঠীর মতে, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক স্থানগুলো ধ্বংস করা হয়েছে বা ধর্মীয় পর্যবেক্ষকদের জন্য অনেকাংশে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘ গত বছর উইঘুর জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন এবং অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পেয়েছে। আর মার্কিন মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো সংগঠন বলছে, মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে।
শি এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা স্পষ্টভাবে অভিযোগগুলো প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা বলছেন, চীনকে অপমান করতে পশ্চিমাদের চক্রান্তের অংশ হলো এই অভিযোগ। তাদের নীতিটি একটি জঙ্গিবিরোধী এবং দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি।