33298

ভারতে বরিস জনসন, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির সম্ভাবনা

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ভারতে পৌঁছেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) দুই দিনের সফরে গুজরাটের আহমেদাবাদে অবতরণ করেন তিনি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, শুক্রবার (২২ এপ্রিল) দিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বরিস জনসন। তাদের আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষার মতো বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে।

ads

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সফরে রাশিয়ার তেল ও প্রতিরক্ষা সামগ্রীর ওপর থেকে নির্ভরতা কমাতে ভারতকে সহায়তার প্রস্তাব দেবেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া মোদির সঙ্গে বৈঠকে নিরাপত্তা সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা করবেন তিনি। এর আগে গত মাসে ভারত সফর করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস। প্রায় একই সময় নয়াদিল্লি সফর করছিলেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।

ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের পর ভারতকে এর বিরুদ্ধে নিন্দা জানানোর আহ্বান জানায় পশ্চিমা দেশগুলো। তবে রাশিয়ার অস্ত্র এবং জ্বালানির বড় ক্রেতা ভারত জাতিসংঘে রুশবিরোধী প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থাকে। মস্কোর ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি নয়াদিল্লি। তবে ইউক্রেনে বেসামরিক হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছেন মোদি।

ads

রাশিয়ার তেল কেনা নিয়ে ভারতকে সতর্ক করে আসছে পশ্চিমারা। চলতি মাসের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, রাশিয়া থেকে বেশি তেল কিনে ভারতের স্বার্থসিদ্ধি হবে না। তবে বরিস তার সফরকালে নতুন করে বিষয়টির অবতারণা করবেন না বলে জানিয়েছেন তার এক মুখপাত্র। অবতারণা করলেও ভারত তাতে কতটুকু গুরুত্ব দেবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

দিল্লির সোসাইটি ফর পলিসি স্টাডিজের পরিচালক উদয় ভাস্কর যেমনটা বলছেন। তিনি বলেন, ‘শ্রদ্ধার সঙ্গে দেওয়া হলে জনসনের বার্তা সতর্কতার সঙ্গে শুনবে ভারত সরকার। কিন্তু কৌশলগত মিত্র হিসেবে রাশিয়ার বদলে যুক্তরাজ্যকে গ্রহণ করার সুযোগ সীমিত।’ ভাস্কর আরও বলেন, ‘সমস্যা হচ্ছে রাশিয়ার ওপর ভারতের নির্ভরতার সমাধান যুক্তরাজ্য করতে পারবে না। তাদের যথেষ্ট তেল নেই কিংবা বিক্রির জন্য সঠিক ধরনের সামরিক সরঞ্জাম নেই।’

গত কয়েক বছরে পশ্চিমের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছে ভারত। তবে এখনো অর্ধেকের বেশি অস্ত্রের জন্য রাশিয়ার ওপর নির্ভর করে দিল্লি। চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধের সময়ও সেই রুশ অস্ত্রের ওপরই ভরসা রেখেছে ভারত।

বরিস ভারত সফরে এলেও তার নজর থাকবে লন্ডনেই। কারণ, তার বিরুদ্ধে করোনাভাইরাস লকডাউন ভেঙে ডাউনিং স্ট্রিটে মদের আসর বসানোর অভিযোগ বিষয়ে পার্লামেন্টারি তদন্ত হবে কি না, তা নিয়ে বৃহস্পতিবার ভোটাভুটির কথা রয়েছে। সেই ভোটেও অনুপস্থিত থাকবেন জনসন।

ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, মোদির রাজ্য গুজরাট থেকে ভারত সফর শুরু করবেন জনসন। শুক্রবার (২২ এপ্রিল) সেখান থেকে নয়াদিল্লি আসবেন। সেখানে মোদির সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। বৈঠকে দুই নেতা প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এবং একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা করবেন। এই বছরের শুরুতে এই চুক্তি নিয়ে দুই দেশের আলোচনা শুরু হয়।

চলতি শতকের শুরুতে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বাণিজ্য সহযোগী ছিল যুক্তরাজ্য। তবে গত বছর তারা ১৭তম স্থানে নেমে গেছে বলে ভারত সরকারের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে। এখন ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য সহযোগী হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।

ad

পাঠকের মতামত