28411

ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি উদ্ধারের পথ খুঁজুন: অর্থমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক: আন্ত-কমনওয়েলথ বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ বাড়িয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের উপায় এবং পথ খুঁজে বের করতে আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) কমনওয়েলথ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১ উপলক্ষে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এ আহ্বান জানান তিনি।

ads

সভায় কমনওয়েলথ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কাউন্সিলের চেয়ারম্যান লর্ড মারল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমন্ত্রী এবং বাণিজ্য বোর্ডের সভাপতি এলিজাবেথ ট্রাস এমপিসহ আরও বিশিষ্ট ব্যক্তি বক্তব্য রাখেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা সবাই অবগত কোভিড-১৯ মহামারির কারণে গত বছর বৈশ্বিক অর্থনীতি ৩ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। যেখানে কমনওয়েলথভুক্ত অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে প্রায় ১০ শতাংশ, যা বৈশ্বিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ হ্রাসের অন্যতম প্রধান নিয়ামক। আনকাড- এর একটি প্রতিবেদনে ইঙ্গিত করা হয়েছে, ২০২০ সালে গ্লোবাল ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট হ্রাস পেয়েছে ৪২ শতাংশ। আর এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কমনওয়েলথ অর্থনীতি ৫০ শতাংশ এরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই পটভূমিতে, কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ উভয় ক্ষেত্রেই একটি শক্তিশালী পুনরুদ্ধারের পথ খুঁজে বের করাই এই সভার উদ্দেশ্য।

ads

জাতির পিতার দিক-নির্দেশনা ও প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় নেতৃত্বের উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কমনওয়েলথের ২০তম শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিয়ে সম্পদের ব্যাপক ব্যবহার এবং উন্নয়নশীল অর্থনীতির জনশক্তির জন্য একটি নতুন অর্থনৈতিক ব্যবস্থা তৈরির আহ্বান জানিয়েছিলেন। জাতির পিতার সেই অর্থনৈতিক দর্শন অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ গত এক দশকে অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। তার দূরদর্শী নেতৃত্বে, প্রাথমিক পর্যায়ে এই মহামারির ক্ষতিকর প্রভাবের তীব্রতা অনুধাবন করে মহামারি থেকে আমাদের অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার করতে জিডিপির ৬.২৩ শতাংশ এর সমান ২২.০৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের ২৮টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন, ইতোমধ্যে বাংলাদেশ যার সুফল ভোগ করে চলেছে।

তিনি বলেন, ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে আইএমএফ-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্ব অর্থনীতিতে গড় ৪.৪ শতাংশের নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা যায়, সে সময়ে অতি অল্প কয়েকটি ইতিবাচক অর্থনীতির মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের জরিপ অনুযায়ী, মহামারি প্রতিকূলতার মধ্যেও বাংলাদেশ শীর্ষ পাঁচটি সহনশীল অর্থনীতির মধ্যে রয়েছে।

ভার্চুয়াল সভায় উপস্থিত সব প্রতিনিধিদের আহ্বান জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ হওয়া সত্ত্বেও বিশ্ব অর্থনীতিতে কমনওয়েলথ দেশগুলির ভূমিকা মাত্র ১৩ শতাংশ। বৈশ্বিক এফডিআইয়ের মাত্র ২০ শতাংশ এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যের ১৪শতাংশ। আন্তকমনওয়েলথ বাণিজ্যে ৫৪টি দেশের মোট বাণিজ্যে মাত্র ১৮ শতাংশ। যুক্তরাজ্যের মোট বাণিজ্যের মাত্র ৯.১ শতাংশ রয়েছে সমস্ত কমনওয়েলথ দেশগুলোর।

মুস্তফা কামাল বলেন, এই পরিসংখ্যানগুলো ইঙ্গিত দেয় বাণিজ্য সম্পর্কিত কমনওয়েলথের বিদ্যমান নীতি এবং কৌশলগুলো কমনওয়েলথ দেশগুলোর জন্য সন্তোষজনক নয়। কমনওয়েলথের একটি গৌরবময় অতীত আছে, ১৭৬৯ সালে যুক্তরাজ্য থেকে বাষ্প ইঞ্জিন আবিষ্কারের মাধ্যমে প্রথম শিল্প বিপ্লবের যাত্রা, যা সত্যিই বিশ্ব অর্থনৈতিক উন্নয়নের শিখা জ্বালিয়েছিল। ১৭৭১ সালে সত্যিকারের কারখানা বলতে যা বোঝায় সেটি প্রথম যুক্তরাজ্যের ডার্বিশায়ারের ক্রমফোর্ড গ্রামে নির্মিত হয়েছিল। সর্বজনবিদিত একটি একটি সত্য হচ্ছে, সপ্তদশ শতাব্দীতে ভারত উপমহাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশ ছিল।

ad

পাঠকের মতামত