4003

উন্নত দেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে: এমপি বাহার

নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘খাদ্য অধিকারের সঙ্গে মানুষের বসবাস, ক্ষুধা, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ও পুষ্টিহীনতা থেকে মুক্ত জীবনযাপনের অধিকার ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত। অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন দেখিয়েছেন, ক্ষুধা ও অপুষ্টি শুধুৃমাত্র খাদ্যের অপ্রতুলতার জন্য ঘটে না, সামাজিক আয়- বৈষম্যই দারিদ্র্য মানুষকে পর্যাপ্ত খাদ্য পাবার অর্থনৈতিক অভিগম্যতা থেকে বিরত রাখে। বিগত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ নিম্ম মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি অর্জন করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্থিতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, বিশেষত সার্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা, নবজাতক ও পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার হ্রাস ইত্যাদি ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি লাভ করেছে। কিন্তু খাদ্য অধিকারের ক্ষেত্রে সম্প্রতি প্রকাশিত “বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তা সূচক ২০১৭” দেখা যাচ্ছে বিশ্বের ১০৯ টি দেশের মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তার দিক দিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৯ তম।’ গত ১২ ডিসেম্বর বিকাল ৩.৩০ মিনিটে খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি) বাংলাদেশ ও দর্পণ এর যৌথ উদ্যোগে খাদ্য অধিকার আইন চাই এই দাবিকে সামনে রেখে ১০-১৬ ডিসেম্বর ‘১৯ খাদ্য অধিকার প্রচারাভিযান সপ্তাহ উপলক্ষে কুমিল্লা প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে এক সমাবেশে বক্তাগন এসব কথা বলেন। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার। সভাপতিত্ব করেন সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) এর সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব শাহ মোহাম্মদ আলমগীর খান।

সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দর্পণ এর নির্বাহী পরিচালক মো: মাহবুব মোর্শেদ। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাগ্রত মানবিকতার চেয়ারম্যান সূচনা বাহার, কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি জহিরুল হক দুলাল, কুমিল্লা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাদিক মামুন, কুমিল্লা রিপোর্টার্স ইউনিটির সহ-সভাপতি ওমর ফারুকী তাপস, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন জাকির, বাসদ কুমিল্লা জেলা নেতা নাসিরুল ইসলাম মজুমদার, সিপিবি কুমিল্লা জেলা নেতা বিকাশ চন্দ্র দেব, সাংবাদিক অশোক বড়ুয়া, সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলম বাবু, সাংবাদিক জামাল উদ্দীন দামাল, ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন, দর্পণের সহকারী প্রকল্প পরিচালক নাজনীন আক্তার তপা, ডিস্ট্রিক্ট ক্যাম্পেইন ফেসিলিটেটর সালমা আক্তার চৈতি, নারী উদ্যোক্তা নাছিমা আক্তার, মায়া নাসরীন, সালমা ইসলাম নুপুর, সাংস্কৃতিক সংগঠক অচিন্ত দাস টিটু, কবি শফিকুল ইসলাম ঝিনুক সহ প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ।

ads

প্রধান অতিথির বক্তব্যে কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার বলেন, ২০১৫ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খাদ্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় তার সরকারের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি ও উল্লেখিত প্রেক্ষাপট ও আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার বিবেচনায় খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়ন এখন একটি প্রধানতম রাজনৈতিক অগ্রাধিকার হিসেবে সরকার বিবেচনায় নিচ্ছে। আইন কমিশন বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ২০১৬ সালে খাদ্য নিরাপত্তা আইন, ২০১৬ এবং সম্প্রতি “বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা আইন প্রবর্তন এর নিমিত্তে সুপারিশ এবং আাইনের খসড়া ‘বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা আইন, ২০১৮” প্রণয়ন এবং কার্যকর করা হয়েছে। বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, “বর্তমান সরকারের কৃষি উন্নয়ন নীতির ফলে বাংলাদেশ আজ দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। কৃষক, শ্রমিক ও দরিদ্র মানুষসহ সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের অংশগ্রহণে এবং সরকারের নেতৃত্বে ২০১৫ সালের আগেই বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ১৫ শতাংশের বেশি কমিয়ে সহস্রাব্দের লক্ষ্যমাত্রা (MDG)পূরণ করেছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমানে বাংলাদেশ নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ। বর্তমান সরকার এদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে দেশে যেমন একটি ভাল খাদ্য নীতি রয়েছে, তেমনি খাদ্য নিরাপত্তাহীন মানুষের খাদ্যে অভিজ্ঞম্যতা নিশ্চিতকরণে সরকারের শতাধিক সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি রয়েছে।”

সমাবেশে বক্তাগন যেসব দাবিগুলো উপস্থাপন করেন সেগুলো হল: খাদ্য অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে, বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে হবে, উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণে রাষ্ট্রীয় প্রণোদনা নিশ্চিত করতে হবে, পুষ্টি বিষয়ে পারিবারিক জ্ঞান ও ধারণার বিকাশ করতে হবে ৫/ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে জনগণের অগ্রাধিকার ও সিদ্ধান্ত বিবেচনায় নিতে হবে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় টেকসই ও যুগোপযোগী কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, আদিবাসী কৃষক ও লোকজ কৃষি উন্নয়নে কার্যকরী কর্মসূচি প্রণয়ন করতে হবে, মোটা চালের দাম বছরজুড়ে অতিদরিদ্র মানুষের ক্রয় সামর্থের মধ্যে রাখতে হবে এবং বর্ষা মৌসুমে দুর্গম চর ও পাহাড়ী এলাকায় খাদ্য রেশনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। ।

ads

সমাবেশটি আয়োজনে সহযোগিতায় ছিলেন দর্পণের প্রোগ্রাম অফিসার ফারজানা আক্তার। সার্বিক সমন্বয় করেছেন দর্পণের অর্থ প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফারহানা আক্তার।

ad

পাঠকের মতামত