945

কথা রাখলেন কুমিল্লার পুলিশ সুপার, ১০৩ টাকায় চাকরি পেল ৩০৭ জন

কোনো ধরনের ঘুষ বা অনৈতিক সুবিধা ছাড়াই পুলিশে নিয়োগের যে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল তার বাস্তবায়ন করলেন কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম, বিপিএম (বার), পিপিএম। ১০৩ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ৩০৭ জন। সোমবার এই নিয়োগ পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হয়।                                                                                                                                              এর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বিনা পয়সায় পুলিশে নিয়োগের কথা দিয়েছিলেন পুলিশ সুপার। সেসময় তিনি নিয়োগ প্রত্যাশীদের সরকার নির্ধারিত ১০০ টাকার ব্যাংক ড্রাফট ও ৩ টাকা মূল্যের ফরমে আবেদন করতে বলেন। পাশাপাশি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ঘুষ ও অনৈতিক সুবিধা দিয়ে চাকরির প্রলোভন দেখানো দালালদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণাও দিয়েছিলেন তিনি। এছাড়া পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ কে শতভাগ স্বচ্ছতা ও মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের লক্ষে কুমিল্লা জেলা পুলিশ জেলার ১৭ উপজেলায় জনসচেতনতামূলক লিফলেটও বিতরণ করে। সেই ঘোষণা অনুযায়ী ১০৩ টাকায় কুমিল্লা জেলায় পুলিশে চাকরি পেয়েছেন ৩০৭ জন। নানা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সোমবার নিয়োগ পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হয়। গতকাল সোমবার রাতে নিয়োগ প্রাপ্তদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়।

ads

গত ১ জুলাই বাংলাদেশ পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে প্রাথমিকভাবে শারীরিক পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে। পরে ৬ জুলাই ২ হাজার ৬৫৪ জনকে লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হয়। পরবর্তীতে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে ৫’শ জন মৌখিক পরীক্ষার জন্য উত্তীর্ণ হয়। এদের মধ্য থেকে গতকাল ৩০৭ জনকে এ পদের জন্য নির্বাচিত করা হয়। রাতে জেলা পুলিশ কার্যালয়ের সামনে নিয়োগ প্রাপ্তদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়। এ সময় পুলিশ সুপার সৈয়দ নূরুল ইসলাম, পদোন্নতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন, পদোন্নতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার সাখাওয়াত হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডিএসবি আজিমুল আহসান, ডিআইওয়ান মাহবুবুর রহমান সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। নতুন নিয়োগ প্রাপ্তদের উদ্দেশ্যে জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গিকার ছিল স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যোগ্যদের নির্বাচিত করা। কুমিল্লা জেলা পুলিশ সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার মাধ্যমে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। নিয়োগ প্রাপ্তদের মধ্যে দরিদ্র পরিবারের মেধাবী ও যোগ্যদেরই স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচিত করা হয়েছে। যারা নতুন নিয়োগ প্রাপ্ত হবে তাদেরকে সৎ ও দুর্নীতির উর্ধ্বে উঠে কর্তব্য পালন করতে হবে। এর ফলে একটি দুর্নীতি মুক্ত সুখী ও সম্বৃদ্ধ দেশ গড়ে উঠবে।

ads

জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নিয়োগ প্রাপ্তদের মধ্যে এতিম কোটায় ২জন পুরুষ, ১জন মহিলা, আনসার কোটায় ৩জন পুরুষ, মুক্তিযোদ্ধার কোটায় ৪৬জন পুরুষ, ৩জন নারী, মুক্তিযোদ্ধার পোষ্য কোটায় ৭জন পুরুষ, ১জন নারী সহ মোট ১৭৩ জন পুরুষ ও ১৩৪ জন নারী রয়েছেন। এছাড়া নিয়োগ প্রাপ্তদের অনেকেই অতি দরিদ্র পরিবারের সন্তান। কারো বাবা রিক্সা চালক, কারো আবার দিন মজুর, মা চাকরী করেন স্বল্প বেতনে ইপিজেড কিংবা অন্য প্রতিষ্ঠানে, কেউবা করেন দর্জির সহকারীর কাজ, আবার কেউবা গৃহকর্মী। আবার কারো বাবা-মা কেউ নেই, দারিদ্রতার কারণে এসএসসি পর্যন্ত লেখা পড়া করতে পারেনি, এ ধরনের যোগ্য প্রার্থীদেরকেই এবার নির্বাচিত করা হয়েছে। এ ধরনের স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিয়োগ পেয়ে অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পরে। এ সময় কেউ কেউ খুশিতে কেঁদে ফেলে।

ad

পাঠকের মতামত