49414

সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারীর খোশরোজ সম্পন্ন

নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রাম ফটিকছড়ির মাইজভাণ্ডার দরবার শরিফে লাখো ভক্ত-জনতার অংশগ্রহণে গতকাল শনিবার আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে হযরত শাহ্সূফী সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী (ক.) এর ৮৭তম খোশরোজ শরিফ। এ উপলক্ষে আন্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারিয়াসহ বিভিন্ন সংগঠন নানান কর্মসূচির আয়োজন করে।রহমানিয়া মইনীয়া হেফজখানা ও এতিমখানার হেফজকৃত ১০ জন কুরআনে হাফেজকে দস্তারবন্দি করা হয়।

দেশবাসীর শান্তি-সমৃদ্ধি, মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ, দেশে-দেশে নিপীড়িত মানুষের মুক্তি ও জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস, হানাহানি থেকে পরিত্রাণে আল্লাহর রহমত কামনায় ওরশ শরিফে আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করেন হুজুর কেবলার স্থলাভিষিক্ত খেলাফতপ্রাপ্ত আওলাদ মাইজভাণ্ডার দরবারে শরিফের সাজ্জাদানশীন, রাহবারে শরিয়ত ও ত্বরীকত হযরত শাহ্সূফী মাওলানা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী (ম.জি.আ.)। শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) থেকে আন্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়ার উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী ওরশ শরীফের কর্মসূচি শুরু হয়। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ছিল খোজরোজ শরিফের শেষ ও প্রধান দিবস। দেশের নানা প্রান্ত থেকে শতশত পরিবহনসহ বিভিন্নভাবে আসা ভক্ত-জনতার ভীড়ে মাইজভাণ্ডার দাবার শরীফ ছিল মুখরিত। হযরত সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী (ক.)’র রওজা শরিফে জিয়ারত, পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত, দরুদ শরীফ পাঠ, মিলাদ-কিয়াম, জিকির ও সেমা মাহফিলে অংশ নেন ভক্ত-ফরিয়াদি জনতা।

ads

রাতে হুজুর কেবলার জীবন-দর্শনের ওপর আলোচনা ও মিলাদ মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে হযরত শাহ্সূফী সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসনী (ম.জি.আ.) বলেন, হযরত সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী (ক.) তাঁর ঐশ্বরিক ক্ষমতা বলে বিশ্ববাসীকে মানবমুক্তির স্বপ্ন দেখিয়েছেন। নিরাহংকার-সদালাপী এ মহান বুজুর্গ ব্যক্তিত্ব বিশ্বে শান্তি-স্বস্তি, জননিরাপত্তা, সম্প্রীতি, ঐক্য ও মনুষ্যত্ববোধ জাগিয়ে তুলতে আজীবন কাজ করেছেন জাতিসংঘসহ দেশে দেশে। আজ দেশে দেশে জোর করে চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধ সংঘাতে বিশ্ববাসীর নিরাপত্তায় হুমকী হয়ে দাঁড়িয়েছে। যুদ্ধ সংঘাত , বোমাবাজি-সন্ত্রাস, দুর্নীতি, খুন-জখম, জোর করে মানুষকে দেশ হতে বিতাড়ন নিত্যনৈমত্তিক ব্যাপার। নবী-ওলীর মাজার শরীফ ঐতিহাসিক স্থাপত্যশৈলী, মসজিদ-উপাসনালয়, কর্মস্থল; এমনকী বাসস্থলেও মানুষ নিরাপদ নয়; বিশ্বে মানুষের নিরাপত্তা শান্তি স্বস্তি একেবারেই উধাও। সাম্য-ইনসাফ-সম্প্রীতি ও উদারতার অভাবে বিশ্বে দ্রুত সংঘাত ছড়িয়ে পড়ছে। এহেন শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে মাইজভাণ্ডারী দর্শনের অনুসৃতির মাধ্যমে সংঘাতমুক্ত সম্প্রীতিপূর্ণ মানবিক বিশ্ব গড়ার আহবান জানান তিনি। তিনি আরো বলেন সিন্ডিকেট এর কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে দেশের মানুষ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এই অবস্থায় শোনা যাচ্ছে গ্যাস এবং বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হবে। এটা হবে আত্মঘাতি; বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে সকল কিছুর দাম আবারো বেড়ে যাবে। তখন হয়ত দেশে দুর্ভীক্ষ দেখা দিবে। তিনি বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর মত আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত থেকে সরকারকে সরে আসার আহবান জানান। সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ি অবিলম্বে বাজার সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে রাখার দাবী জানান।

খোশরোজ মাহফিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন মইনীয়া যুব ফোরাম সভাপতি শাহ্জাদা সৈয়দ মেহবুব-এ-মইনুদ্দীন আল্-হাসানী (মা.জি.আ.), কার্যকরী সভাপতি শাহজাদা সৈয়দ মাশুক-এ-মইনুদ্দীন আল্-হাসানী (মা.জি.আ.), হযরত সৈয়দ মইনুদ্দিন আহমদ মাইজভাণ্ডারী ট্রাস্টের মহাসচিব এড. কাজী মহসিন চৌধুরী, আনজুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়ার মহাসচিব খলিফা আলমগীর খান মাইজভাণ্ডারী। অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা রুহুল আমিন ভূঁইয়া চাঁদপুরী, স্থায়ী পরিষদ সদস্য ও দপ্তর সম্পাদক মো: ইব্রাহিম মিয়া, মইনীয়া যুব ফোরাম সাধারণ সম্পাদক মো: আসলাম হোসাই, মুফতী এইচএম মাকসুদুর রহমান প্রমুখ। পরে সালাত-ছালাম পরিবেশন শেষে দেশ ও বিশ্ববাসীর নাজাত কামনায় মুনাজাত পরিচালনা করেন পীরে ত্বরীকত মাওলানা সৈয়দ সাইফুদ্দীন।

ads
ad

পাঠকের মতামত