50322

১০৪ স্পটে পর্যটকদের নিরাপত্তা দেবে ট্যুরিস্ট পুলিশ, ছুটি বাতিল

নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশে দেড় হাজারের বেশি পর্যটক স্পট। এর মধ্যে ১০৪টি স্পটে ট্যুরিস্ট পুলিশ নিরাপত্তা দিচ্ছে। বাকি স্পটগুলোতেও পর্যটকরা যান। সেখানে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইজিপির সঙ্গে কথা বলেছি। আগামী ঈদে লম্বা ছুটি। এ ছুটিতে পর্যটকদের ঢল নামবে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ট্যুরিস্ট ‍পুলিশের সব সদস্যের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। নিরবচ্ছিন্ন ও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা যাতে নিশ্চিত করা যায়, সেজন্য আমরা জেলা পুলিশেরও সহযোগিতা চেয়েছি।

রোববার (৩১ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর পল্টনে প্রধান কার্যালয়ে ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে ট্যুরিস্টদের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন ট্যুরিস্ট পুলিশ প্রধান অতিরিক্ত আইজি (ভারপ্রাপ্ত) মো. আবু কালাম সিদ্দিক।

ads

তিনি বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ ঘোড়ার গাড়ি ও ময়ূরপঙ্খি বিচ বাইকের মাধ্যমে পর্যটকদের নিরাপত্তায় টহল ডিউটি প্রদান করা হচ্ছে। বাংলাদেশের সব পর্যটন স্পটে স্বল্প সংখ্যক ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্যদের দিয়ে নিরাপত্তা প্রদান করা সম্ভব নয়। তবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে ট্যুরিস্ট পুলিশ সংশ্লিষ্ট জেলা পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছে। সমন্বয় করে পর্যটকদের নিরাপত্তা প্রদান করা হবে। যেকোনো ট্যুরিস্ট যেকোনো সহযোগিতায় ট্যুরিস্ট পুলিশ হেল্পলাইন নম্বর ০১৩২০-২২২২২২ এবং ০১৮৮৭-৮৭৮৭৮৭ এর মাধ্যমে ফোন করার মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা সেবা পাবেন।

ছুটির সময়ে পর্যটকদের ঢল নামে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আপনাদের সার্ভিলেন্স সিস্টেম কতটা কার্যকর হবে– জানতে চাইলে ট্যুরিস্ট পুলিশ প্রধান বলেন, আসন্ন ঈদুল ফিতরে লম্বা ছুটি পেতে যাচ্ছে দেশবাসী। সংগত কারণে চাপ বাড়বে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে। ঈদ টার্গেট করে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ১২টি, পতেঙ্গা বিচে ১২টি ও কক্সবাজারে ২০টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। পল্টনে ট্যুরিস্ট পুলিশ কার্যালয়ে স্থাপন করা হয়েছে সেন্ট্রাল কন্ট্রোল রুম। সেখান থেকে সব কিছু মনিটরিং করা হবে।

ads

ঈদে পর্যটকদের নিরাপত্তায় পর্যটন কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন
ঈদে ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধে সতর্ক করা হবে
বিরোধীদলীয় নেতা ও উপনেতাকে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা

তিনি বলেন, পাশাপাশি কক্সবাজারের প্রতিটি বিচকে ইন্টারকমিং সিস্টেমের আওতায় আনা হচ্ছে। এর ফলে পর্যটকরা তাদের সমস্যা সরাসরি ইন্টারকমের মাধ্যমে টুরিস্ট পুলিশকে অবগত করতে পারবেন। বিচে নির্দিষ্ট স্থানে সুইচ থাকবে। বিপদগ্রস্ত বা সমস্যাগ্রস্ত কোনো পর্যটক সেই সুইচ চাপ দিলে নিকটস্থ ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্য সেখানে উপস্থিত হবেন।

আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, এসব কার্যক্রম কিন্তু বিচ কেন্দ্রিক। বিচের দূরে হোটেল কেন্দ্রিক, খাবারের দোকান কেন্দ্রিক, ফটোগ্রাফারদের দ্বারাও পর্যটক হয়রানির বিষয় আছে। আমরা যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি তাতে পর্যটন স্পটে কোনো পর্যটক যাতে ছিনতাই, চাঁদাবাজির শিকার না হয়। আগামী মৌসুমে পর্যটনস্পটগুলোতে যেসব হোটেল-মোটেল পর্যটক হয়রানি করবে, প্রমাণ সাপেক্ষে আমরা ব্ল্যাক লিস্টেট করব। আমরা কথা বলছি। অযথা কোনো কিছুর দাম দ্বিগুণ-তিনগুণ যাতে নিতে না পারে, সেটাও আমরা কথা বলে একটা সিস্টেমের মধ্যে আনার চেষ্টা করছি।

এ ব্যাপারে টুরিস্ট পুলিশের চট্টগ্রাম বিভাগের প্রধান এডিশনাল ডিআইজি বিধান ত্রিপুরা বলেন, কক্সবাজার ও কুয়াকাটায় ট্যুরিস্ট বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি আছে। ডিসি মহোদয় এ কমিটির প্রধান। সেখানে আমাদের রিজনাল এসপি আছেন তারা বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটিতে অংশগ্রহণ করবেন। যার যে দায়িত্ব তারা যদি সেটা পালন করেন তাহলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে। তবে ট্যুরিস্ট পুলিশের মূল কাজ হচ্ছে বিচে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

তিনি বলেন, বিশ্বের অন্য দেশের মতো আমাদের বিচগুলোর অবস্থা নয়। বিচের কাছে ১০০ মিটার পরপর চেঞ্জিং রুম, ওয়াশরুম নেই। আমরা বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটিকে এসব সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে বলেছি।

বান্দরবান থেকে সাজেকগামী চান্দের গাড়ি চলাচলে অব্যবস্থাপনা রয়েছে। চান্দের গাড়ি দুর্ঘটনায় পর্যটকও মারা যাচ্ছে। সেখানে কোনো ব্যবস্থাপনা ট্যুরিস্ট পুলিশ প্রধান করবে কি না জানতে চাইলে আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমাদের পার্বত্য এলাকার কর্মকর্তা ও পার্বত্যমন্ত্রীকে বলেছি। এটা কীভাবে সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসা যায়, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

এডিশনাল ডিআইজি বিধান ত্রিপুরা বলেন, আমরা ইতোমধ্যে মালিক সমিতির সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের লাইসেন্স থাকবে। প্রত্যেক গাড়ির কাগজপত্র থাকবে, চালকের লাইসেন্স থাকতে হবে। ট্যুরিস্ট পুলিশ কর্তৃক এনলিস্টেড হতে হবে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এটা একটা সিস্টেমের মধ্যে আনার ব্যবস্থা করা হবে। কারণ ট্যুরিস্ট তো জানে না কার লাইসেন্স আছে বা গাড়ির কাগজ আছে বা নেই। যাতে কোনো পর্যটকের নিরাপত্তা অনিশ্চয়তায় না পড়ে, সেজন্য ইতোমধ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি।

মতবিনিময় সভায় ট্যুরিস্ট পুলিশের ঢাকা, গাজীপুর ইউনিটের প্রধান, অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় সভায় ১০৪টি ট্যুরিস্ট পুলিশের কর্মকর্তারা অনলাইনে অংশ নেন।

ad

পাঠকের মতামত