50127

নেত্রকোনায় তরমুজের অতিরিক্ত দামে, ভোগান্তিতে ক্রেতারা

নেত্রকোনা প্রতিনিধি: রমজান আর চৈত্রের খরতাপে কিছু দিন ধরে একটানা গরম থাকায় চাহিদা বেড়েছে তরমুজের। রোজার মাসে অনেকেই ইফতারে পানীয় হিসেবে তরমুজ খেয়ে পিপাসা দূর করেন। আর এই সুযোগে তরমুজ ব্যবসায়ীরা দিগুন দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে তরমুজ কিনতে গিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে ক্রেতাদের।

সরেজমিনে নেত্রকোনা পৌরশহরের রড় বাজার  মাছ বাজার, ঘুসের বাজার ও জেলার বিভিন্ন উপজেলার ছোট বড় ফলের দোকানগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক দিনের ব্যবধানে বাজারেগুলোতে প্রতি কেজি তরমুজের দাম বেড়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। বর্তমানে বাজারে খুচরায় তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে।  হঠাৎ করে তরমুজের দাম বৃদ্ধিতে ক্রেতাদের মধ্যে অসন্তুষ্টি দেখা দিয়েছে এবং দাম নিয়ে বাগবিতণ্ডায় জড়াচ্ছেন ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই। অন্যদিকে কোন উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।

ads

ক্রেতারা বলছেন, গত কয়েকবছর ধরেই কেজি হিসেবে কিনতে হচ্ছে তরমুজ। তবে এত দাম এর আগে কখনও দেখেননি।

তবে বিক্রেতারা বলছেন, আড়ত থেকেই কেজি হিসেবে কিনে বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। আর আড়তদারদের দাবি, পঁচে যাওয়া, পরিবহন খরচ মিলিয়ে পিস হিসেবে তরমুজ বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না।

ads

কৃষকরা বলছেন, তরমুজের ক্ষেতে সরাসরি আমাদের কাছ থেকে পিস হিসেবে কিনে নিয়ে এসে তারা সিন্ডিকেট করে কেজি মাপে ইচ্ছে মতো দাম হাঁকছেন। এতে তরমুজ বিক্রেতারা লাভবান হলেও ঠকছেন  গ্রাহকরা। প্রতিদিনই আমরা পিস হিসাবে তরমুজ বিক্রি করছি। 

এদিকে, জেলা ভোক্তা অধিকার ও উপজেলা প্রশাসন অভিযান শুরু করলেও থেমে নেই ব্যবসায়ীদের কেজি মাপে ইচ্ছে মতো দাম। অভিযানের পর প্রশাসনের লোকজন চলে যাওয়ার পর আগের মতোই দাম নিচ্ছে ক্রেতাদের কাছ থেকে।

নেত্রকোনা সাতপাই এলাকার রনি নামে একজন ক্রেতা বলেন, ‘অনেক ইচ্ছা ছিল একটি তরমুজ কিনব। রোজার সময় বাড়ির সবাইকে নিয়ে ইফতারি করব। কিন্তু তরমুজের আকাশ ছোঁয়া দামের কারণে সেটা আর হলো না।

বারহাট্টা উপজেলা সদরের গোপালপুর এলাকার আজাদ মিয়া বলেন, ‘আমি ২টি তরমুজ কিনেছি। ছোট সাইজ হওয়ার পরও কেজি দরে কিনায় প্রতি পিস দাম পড়েছে ৩০০ টাকা করে। এতো দামের কারণে তরমুজ আর সামনের দিনে কপালে আর জুটবে বলে মনে হচ্ছে না। মাঠ পর্যায় থেকে সরাসরি সঠিক তদারকি প্রয়োজন তরমুজসহ প্রতিটি জিনিসের।’

নেত্রকোনা শহরের বড় বাজারের তরমুজ ব্যবসায়ী সুজন মিয়া ও মোহনগঞ্জ বাজারের শেরেকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ১০০ পিস তরমুজ ২৮ হাজার টাকা দিয়ে পাইকারি কিনে এনেছি। এখন ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে না বিক্রি করলে চালান বাঁচবে না।’

সাধারণ মানুষের দাবি তরমুজ ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে অতিরিক্ত মূল্য দরে কেজিতে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। বাজার মনিটরিং করলে কেজি কাহিনী উন্মোচন হবে বলে মনে করছেন তারা।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জনা যায়, জেলার প্রতিটি উপজেলাতেই বিভিন্ন বাজারে মনিটরিং সেল কাজ করছে। ফাঁক পেলেই কিছু ব্যবসায়ী তরমুজসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি করে। এদের ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

ad

পাঠকের মতামত