41205

যেসব উপায়ে শেষ হতে পারে ইউক্রেন যুদ্ধ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: এক বছর হয়ে গেলেও ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। মস্কো-কিয়েভ দুই পক্ষই যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চাচ্ছে। এতে অদূর ভবিষ্যতে শান্তি আলোচনা হওয়ায়ও কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তবে কি যুদ্ধ চলতেই থাকবে? যুদ্ধ অবসানে সম্ভাব্য পাঁচটি পরিস্থিতি আলোচনা করেছেন দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা সম্পাদক ড্যান সাব্বাগ।

রাশিয়ান আক্রমণ সফল হলে

ads

ইউক্রেনের হাতে পশ্চিমের অত্যাধুনিক অস্ত্র আসছে। এগুলো হাতে পেলে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে সহজে পরাস্ত করা যাবে না। তাই প্রতিরোধ গড়ার আগেই পূর্ব ইউক্রেনে শক্ত অবস্থানে থাকতে হবে রুশ বাহিনীকে।

এ ক্ষেত্রে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, তাদের সঙ্গে আছে ৩ লাখ সদস্যের একটি শক্তিশালী বাহিনী, যারা সবাই যুদ্ধ জয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ ছাড়া রাশিয়াকে গোপনে চীন সহায়তা করতে পারে বলে শক্ত গুঞ্জন রয়েছে বিশেষজ্ঞ মহলে।

ads

ইউক্রেন ঘুরে দাঁড়ালে

ইউক্রেন সেনাবাহিনীর হাতে শতাধিক লেপার্ড ১ এবং ২ ট্যাংক আছে। এ ছাড়া অনুরূপ সংখ্যক সাঁজোয়া যানও আছে কিয়েভ বাহিনীর কাছে; যা কর্দমাক্ত মৌশুম শেষ হলে, ব্যবহার করা যাবে।

এ ছাড়া রুশ স্থলবাহিনীকে আটকাতে রাশিয়ার সঙ্গে ক্রিমিয়ার সংযোগকারী রেললাইন ও রাস্তাগুলো গুড়িয়ে দিতে হবে। এসবের পর পশ্চিমা অস্ত্রের সহায়তায় একের পর এক দখল হয়ে যাওয়া অঞ্চলগুলোকে মুক্ত করতে হবে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে। এই অবস্থায় রুশ বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হবে।

অচলাবস্থা

বসন্ত ও গ্রীষ্মে ইউক্রেনীয় বাহিনীর খুব একটা অগ্রগতি চোখে পড়েনি। এ জন্য অবশ্য পশ্চিমা অস্ত্র সরবরাহের ঘাটতিও বড় একটা কারণ। এতে লড়াইয়ের উদ্যোম ও গতি হারাতে বসেছে ইউক্রেনীরা।

এমন পরিস্থিতে শান্তি আলোচনার জন্য চাপে পড়বে ইউক্রেন সরকার। এটা আসতে পারে চীনের পক্ষ থেকে। ইউক্রেন তখন তার দখল হয়ে যাওয়া অঞ্চলগুলো ফেরত চাইবে; যা পুতিন কখনই মেনে নেবেন না।

এই অবস্থায় সৃষ্টি হবে এক ধরনের অচলাবস্থা; যেমনটা ২০১৪ সালে ক্রিমিয়ার ক্ষেত্রে ঘটেছিল। পূর্ব সীমান্ত স্থিতিশীল রাখতে কয়েক বছর পশ্চিমা সমর্থনের প্রয়োজন হবে কিয়েভের।

পশ্চিমা অবসাদ

ইউক্রেন যুদ্ধ পশ্চিমকে দীর্ঘ মেয়াদে প্রক্সি যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলতে পারে বলে মনে করে রাশিয়া। এই অবস্থায় শুরুতে সামরিক এবং পরে রাজনৈতিকভাবে নিঃশেষ হয়ে যাবে পশ্চিমের দেশগুলো। ঠিক আফগানিস্তানের ঘটনার মতো। ২০ বছর পর তালেবানদের হাতে ক্ষমতা দিয়ে কাবুল ছাড়েন মার্কিন সেনারা।

এখন পর্যন্ত রাশিয়াকে মোকাবিলায় ইউক্রেনের পাশে আছে ঐক্যবদ্ধ পশ্চিম। তবে জো বাইডেন যদি ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প বা অন্য বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন, তবে শক্ত বিপদে পড়তে পারে ইউক্রেন।

জার্মানির কিয়েল ইনস্টিটিউটের বলছে, ইউক্রেনকে ৪৬ বিলিয়ন ইউরোর সামরিক সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপ দিয়েছে ১৮.৭ বিলিয়ন ইউরো। সরকার বদলালে সব হিসাব-নিকাশও বদলে যেতে পারে।

নেতৃত্বের পরিবর্তন

যুদ্ধ সাধাণরত পরিকল্পনামাফিক শেষ হয় না। প্রত্যাশিত বিজয় অর্জনে ব্যর্থতা প্রায়শই সরকার পরিবর্তনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। কূটনীতিক ক্ষেত্রে ইউক্রেন তাদের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ওপর ভরসা রাখলেও, তার সামরিক কৌশল নিয়ে সন্দেহ আছে অনেকেরই।

তবে এক্ষেত্রে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন আছেন বেশি ঝুঁকিতে। যদি পুতিন অপ্রত্যাশিতভাবে ক্ষমতাচ্যুত হন, তবে তার উত্তরসূরি হয়তো অন্য পন্থা ব্যবহার করতেই পারেন। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

ad

পাঠকের মতামত