মধ্যপ্রাচ্য ছেড়ে যাবে না যুক্তরাষ্ট্র : বাইডেন
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তার দেশ মধ্যপ্রাচ্য ছেড়ে যাবে না। শনিবার আরব উপসাগরীয় নেতাদের সাথে এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, তিনি চেষ্টা করছেন বিশ্বের অস্থিতিশীল অঞ্চলগুলোতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে।
সেই সাথে বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান গ্যাসের দাম নিয়ন্ত্রণে তেলের সরবরাহ বৃদ্ধির বিষয়েও তিনি প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানান বাইডেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রথম মধ্যপ্রাচ্য সফরের চতুর্থ ও শেষ দিনে তিনি গাল্ফ কো-অপারেশন কাউন্সিলে এ মন্তব্য করেন।
‘আমরা সরে যাব না এবং কোনো শূন্যস্থান রেখে যাব না, যেটা চীন, রাশিয়া বা ইরান পূরণ করবে। আমরা সক্রিয়, নীতিগত, আমেরিকান নেতৃত্বের সাথে এই মুহূর্তটি গড়ে তোলার চেষ্টা করব,’ বলেন বাইডেন।
যদিও মার্কিন বাহিনী এই অঞ্চলে ‘সন্ত্রাসী’দের লক্ষ্যবস্তু করে চলেছে এবং মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে ঘাঁটি মোতায়েন রেখেছে, কিন্তু বাইডেন বলছেন, তিনি ইরাক ও আফগানিস্তানে তার দেশের আক্রমণের পর পৃষ্ঠাটি ঘুরিয়ে দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘আজ আমি গর্বের সাথে বলতে সমর্থ হচ্ছি যে এ অঞ্চলে স্থল যুদ্ধের যুগে যে বিপুল সংখ্যক মার্কিন ফোর্স নিয়োজিত ছিল, তারা এখন আর নিয়োজিত নেই।’
আরব-মার্কিন এ সম্মেলনে সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান বলেন, বিশ্ব অর্থনীতিকে সহযোগিতার জন্য একটি একীভূত প্রচেষ্টার প্রয়োজন ছিল এবং জ্বালানির উৎসগুলো নিয়ে অবাস্তব নীতিগুলো কেবল মুদ্রাস্ফীতির দিকে পরিচালিত করবে।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ ও ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক অর্থনীতিকে সহযোগিতা করার জন্য আরো যৌথ প্রচেষ্টার প্রয়োজন সৃষ্টি করেছে এবং পরিবেশগত ঝুঁকিগুলো মোকাবেলায় টেকসই শক্তির উৎসগুলো ধীরে ধীরে রূপান্তরের জন্য একটি ‘বাস্তববাদী ও দায়িত্বশীল’ কর্মপরিকল্পনা প্রয়োজন।
বাইডেন অন্যান্য রাষ্ট্রপ্রধানদের প্রতি আহ্বান জানান তারা যেন নারীদের অধিকারসহ সকল মানবাধিকার নিশ্চিত করেন এবং তাদের নাগরিকদের খোলামেলা মত প্রকাশের সুযোগ দেন।
১ বিলিয়ন ডলার খাদ্য সহায়তা
বাইডেন জানিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় ক্রমবর্ধমান খাদ্য অনিশ্চয়তা দূরীকরণে যুক্তরাষ্ট্র এক বিলিয়ন ডলার দেবে।
সৌদি যুবরাজ বলেন, তিনি আশা করছেন এর মাধ্যমে আরব দেশগুলো ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরো গভীর করার ক্ষেত্রে ‘যৌথ অংশীদারিত্বের নতুন যুগের’ সূচনা করবে।
ইসরাইলের সম্পর্কোন্নয়নে আরব নেতাদের সাথে বাইডেনের বৈঠক
বাইডেন এর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক ও মিসরের নেতাদের সাথে সিরিজ বৈঠক করেন। সেখানে তিনি সৌদি আরবে আরব সম্মেলনে আঞ্চলিক ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতা তৈরি করতে চেয়েছেন।
‘আমরা বিশ্বাস করি এই অঞ্চলে যতটা সম্ভব সক্ষমতা অর্জন করার অনেক গুরুত্ব রয়েছে এবং অবশ্যই ইসরাইলের উল্লেখযোগ্য বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ক্ষমতা রয়েছে, যেমনটি তাদের প্রয়োজন। তবে আমরা এই দেশগুলোর সাথে দ্বিপক্ষীয়ভাবে এই আলোচনা করছি,’ সাংবাদিকদের বলেছেন প্রশাসনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা।
এর আগে ‘ইরান হুমকি’র উদ্বেগ প্রকাশ করা ইসরাইল বাইডেনের সৌদি সফরকে উৎসাহিত করেছে। ইসরাইল আশা করছে, এ সফরের মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের সাথে গড়ে উঠা কূটনৈতিক সম্পর্কের পর সৌদি আরবের সাথে ইসরাইলের সম্পর্ক উষ্ণ হবে। ওই দেশ দু’টির সাথে ইসরাইলের সম্পর্কোন্নয়নে মার্কিন উদ্যোগে রিয়াদের সমর্থন ছিল বলে ধরা হয়।
সূত্র : এপি/গালফ নিউজ