32978

সুইডেন-ফিনল্যান্ডের ন্যাটোর সদস্য হওয়া নিয়ে যা বলছে যুক্তরাজ্য

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ সম্ভাব্য ন্যাটো সদস্য হিসেবে সুইডেন ও ফিনল্যান্ডকে সমর্থন দিয়েছে যুক্তরাজ্য। এমনটাই জানিয়েছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস। বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘সুইডেন ও ফিনল্যান্ড কারও হস্তক্ষেপ ছাড়াই তাদের নিজ নিজ ভবিষ্যৎ বেছে নিতে পারে। এক্ষেত্রে তাদের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানাবে যুক্তরাজ্য।’

সুইডেন ও ফিনল্যান্ড মূলত নর্ডিক দেশগুলোর অন্তর্ভুক্ত। উত্তর ইউরোপ ও উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরীয় অঞ্চলের অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত নর্ডিক অঞ্চল। দেশগুলো হচ্ছে ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, নরওয়ে ও সুইডেন। এ ছাড়া ফারো দ্বীপপুঞ্জ, গ্রিনল্যান্ড, সভালবার্দ ও অলান্দ দ্বীপপুঞ্জও এর আওতায় পড়েছে। ইউক্রেনের মতোই রাশিয়ার সঙ্গে দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে ফিনল্যান্ডের। তবে বাকি দেশগুলোর নেই।

ads

ইউক্রেনে মস্কোর সামরিক অভিযানের প্রেক্ষিতে ফিনল্যান্ড ও তার প্রতিবেশী সুইডেন ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার চিন্তা করছে। তবে এ ব্যাপারে প্রতিবেশি দেশ দুটিকে বারবার সতর্ক করে আসছে রাশিয়া। এ উত্তেজনার মধেই নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করল ন্যাটোর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য যুক্তরাজ্য।

বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) এক টুইটার বার্তায় ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ট্রাস বলেন, ‘নর্ডিক ও বাল্টিক দেশগুলোকে রাশিয়ার হুমকি-ধামকি নতুন কিছু নয়। তবে এই হুমকি আমাদের সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে।’

ads

ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার ব্যাপারে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে বুধবার (১৩ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে জানান ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সানা মারিন। এর প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়া বলেছে, সুইডেন ও ফিনল্যান্ড যদি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোয় যোগ দেয় তাহলে বাল্টিক অঞ্চলে নিজের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করবে মস্কো। সেক্ষেত্রে এ অঞ্চলে পরমাণু অস্ত্রও মোতায়েন করা হবে।

বাল্টিক দেশ তিনটি। দেশগুলো হচ্ছে- এস্তোনিয়া, লিথুয়ানিয়া ও লাটভিয়া। এ তিনটি দেশেরই রাশিয়ার সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে। সম্প্রতি পূব-ইউরোপের এ দেশগুলোতে ব্যাপক সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো।

বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমানে সিকিউরিটি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সুইডেন ও ফিনল্যান্ড ন্যাটোতে যোগ দিলে ওই অঞ্চলে সামরিক ভারসাম্য ঠিক রাখতে রাশিয়াকে বাল্টিক সাগরে তার স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীর শক্তি বাড়ানোর দরকার হবে।

বাল্টিক সাগরের তীরে অবস্থিত এবং পোল্যান্ড ও লিথুয়ানিয়ার মাঝে ‘স্যান্ডউইচ’ হয়ে থাকা রুশ ভূখণ্ড কালিনিনগ্রাদ মস্কোর জন্য কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহযোগী মেদভেদেভ আরও বলেন, সুইডেন ও ফিনল্যান্ড ন্যাটোতে গেলে ‘পরমাণু অস্ত্রমুক্ত’ বাল্টিক নিয়ে আর কোনো কথা হবে না।

মেদভেদেভ বলেন, ‘সুইডেন, ফিনল্যান্ড ন্যাটোতে গেলে বাল্টিকের পরমাণু অস্ত্রমুক্ত অবস্থা নিয়ে কোনো কথা হতে পারে না, ভারসাম্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতেই হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আজ পর্যন্ত রাশিয়া এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, নিতে চায়ওনি। কিন্তু কেউ যদি আমাদের বাধ্য করে… মনে রাখবেন, আমরা এমনটা করার প্রস্তাব দেইনি।’

তবে রাশিয়ার এই হুমকির পর তৎক্ষণাৎ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে অন্যতম বাল্টিক দেশ লিথুয়ানিয়া। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইনগ্রিদা সিমোনিয়েতে বলেন, বাল্টিক অঞ্চলে সামরিক শক্তি বাড়ানোর রুশ হুমকি ‘নতুন কিছু নয়’।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। সম্প্রতি পুতিন বলেন, রাশিয়াকে নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে ফেলতে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে ইউক্রেনকে ব্যবহার করছিল তাতে ইউক্রেন অভিযান জরুরি হয়ে পড়েছিল। তিনি আরও বলেন, রুশ ভাষাভাষীদের ইউক্রেনের নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষায় মস্কোকে লড়াইয়ে নামতে হয়েছে।

ad

পাঠকের মতামত