27748

ইউক্রেন সংকট সমাধানে মার্কেলের উদ্যোগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকার পর বিদায়ের সিদ্ধান্তের আগেই যেন কিছুটা ম্লান হয়ে পড়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল। একেবারে শেষ মুহূর্তে কোনো বড় সাফল্য তার ভাবমূর্তি আবার উজ্জ্বল করে তুলতে পারে। সেই চেষ্টা চালাতে তিনি সপ্তাহান্তে মস্কো ও কিয়েভ সফর করলেন।

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে ২০১৪ সাল থেকে চলে আসা সংঘাত ও জটিল সম্পর্কের জট অন্তত কিছুটা ছাড়াতে পারলেও তার অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে, এমনটাই আশা করছেন মার্কেল।

ads

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রতি রাশিয়ার সমর্থন এবং ক্রাইমিয়া উপদ্বীপ বেদখলের সাথে সাথে ইউক্রেনের মধ্য দিয়ে ইউরোপে রাশিয়া থেকে গ্যাস সরবরাহের ভবিষ্যৎ বর্তমানে কিয়েভে দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে।

তবে এই সংকট মেটানোর প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে নিজেকে নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তুলে ধরতে পারছেন না মার্কেল। ইউক্রেনকে এড়িয়ে রাশিয়া থেকে সরাসরি জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহের লক্ষ্যে ‘নর্ড স্ট্রিম-২’ নামের প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ হতে চলেছে। জার্মানি, ইউরোপ, আমেরিকা ও ইউক্রেনে এই প্রকল্পকে ঘিরে চরম বিতর্ক সত্ত্বেও এর পক্ষে সমর্থনে অবিচল রয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর। ইউক্রেনের ‘ক্ষতিপূরণ’ হিসেবে সে দেশে পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানির উন্নতির লক্ষ্যে বিশাল অংকের তহবিল গড়ার উদ্যোগও কিয়েভের মন জয় করতে পারছে না।

ads

এমন প্রেক্ষাপটে রোববার কিয়েভ সফরে গিয়ে ম্যার্কেল ইউক্রেনে শান্তি ফেরাতে এক বহুপাক্ষিক শীর্ষ সম্মেলনের পক্ষে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেছেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে একক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি রাশিয়া, ইউক্রেন, ফ্রান্স ও জার্মানির শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের প্রস্তাব দেন।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালে পরিকল্পনা সত্ত্বেও এমন উদ্যোগ কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। মার্কেল ও জেলেনস্কি রাশিয়ার উদ্দেশ্যে ‘নর্ড স্ট্রিম-২’ প্রকল্পকে ‘রাজনৈতিক হাতিয়ার’ হিসেবে অপব্যবহার করার বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন। আমেরিকার সাথে বোঝাপড়া অনুযায়ী মার্কেল প্রয়োজনে রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর হুমকিও দিয়েছেন। জেলেনস্কি বলেন, শুধু ইউক্রেন নয় গোটা ইউরোপের জন্য এই পাইপলাইন বিপজ্জনক হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে।

রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহের মূল ট্রানজিট হিসেবে ইউক্রেনের গুরুত্ব কমেই চলেছে। ‘নর্ড স্ট্রিম-১’ পাইপলাইন এবং জাহাজের মাধ্যমে রাশিয়া ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে ট্রানজিট ফি বাবদ ইউক্রেনের আয়ও কমে চলেছে। শুক্রবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মস্কোয় মার্কেলকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ২০২৪ সালে ইউক্রেনের সাথে চুক্তির মেয়াদ শেষ হবার পর বাজারের চাহিদা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করা হবে। ফলে মার্কেলের প্রস্থানের পর ইউক্রেন এ ক্ষেত্রে কোনো আশ্বাস পাচ্ছে না।

ad

পাঠকের মতামত