26912

ইতিহাস বিকৃতকারীদের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করতে হবে: নওফেল

নিউজ ডেস্ক: শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, বঙ্গবন্ধু যে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন তা শোষিত মানুষের বাসযোগ্য ভূমির জন্য। শুধু ভৌগোলিক স্বাধীনতা জাতির জন্য যথেষ্ট পরিচয় নয়, মূল লক্ষ্য সাম্য-মৈত্রী-শান্তি ও প্রগতির জয়যাত্রা রচনা করা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সে আরাধ্য জয়যাত্রার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। রাজনীতিতে আমাদের পরিশুদ্ধ হতে হবে।

ads

যারা একদিন ইতিহাসের চাকাকে উল্টো পথে পরিচালনা করেছে ইতিহাস নিয়ে মিথ্যাচার করেছে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে যারা ভূলুণ্ঠিত করে পাকিস্তানি ভাবধারায় এদেশকে পরিচালনা করেছিল তারা আজও ঘাপটি মেরে আছে, তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে এবং ইতিহাস বিকৃতিকারীদের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করতে হবে। কিছু ভুঁইফোড় সংগঠন আজ ডালপালা মেলেছে।

এদের কাছ থেকে সতর্ক থাকতে হবে।
রোববার (১৫ আগস্ট) বিকেলে থিয়েটার ইনস্টিটিউটে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদত বার্ষিকীর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ads

তিনি বলেন, কখনো কখনো শোক শক্তির উৎস হয়। শোককে শক্তিতে পরিণত করতে পেরেছি বলেই বাংলাদেশ আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং দাঁড়াবেই।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বিশ্বের রাজনৈতিক ইতিহাসের বর্বরতম ও নৃশংস কালো অধ্যায় বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্তরা ইতিহাসের নিকৃষ্টতম খলনায়ক। বঙ্গবন্ধুর হত্যার মাস্টারমাইন্ড ও প্রধান সুবিধাভোগী জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার ও শাস্তি বিধান নিশ্চিত করে ইতিহাসের দায়মুক্তি ঘটানো সময়ের দাবি।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে শারীরিকভাবে হত্যা করলেও তাঁর আদর্শ ও স্বপ্নের মৃত্যু হয়নি। পৃথিবীতে যতদিন আকাশ-বাতাস এবং চন্দ্র-সূর্য-গ্রহ-তারা থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধু অম্লান, অমলিন ও চিরঞ্জীব থাকবেন। এই সত্যকে যারা অস্বীকার করে তাদের পৃথিবীতে বেঁচে থাকার অধিকার নেই।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি করার অধিকার নেই। যারা বঙ্গবন্ধুর হত্যার ইন্ধনদাতা ও বেনিফিসিয়ার তাদের রাজনীতিও নিষিদ্ধ করতে হবে।

তিনি প্রশ্ন করেন, একজন মানুষের ৬টি জন্মদিন হয় কীভাবে? ১৫ আগস্ট শোকদিবসকে কালিমালিপ্ত করে যারা ভুয়া জন্মদিন করে তাদের জীবন্ত কবর দিতে হবে।

তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ব্যক্তি বড় নয়, দল ও দেশ বড়। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ছন্নছাড়ার মতো সস্তা জনপ্রিয়তার মোহে এমন কিছু করা যাবে না, যাতে সরকার, দল ও নেতৃত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে ৭৫’র ১৫ আগস্ট সপরিবারে হত্যা করে একাত্তরের পরাজিত অপশক্তির দোসররা ভেবেছিল আবার পাকিস্তান কায়েম হবে। সেদিন যা ঘটেছিল তা একটি পৃথিবীর জঘন্যতম অপরাধ। এ অপরাধকে আড়াল করতে হত্যাকারীদের অপরাধের দায়মুক্তির জন্য রাতারাতি ইনডেমিনিটি আদেশ জারি হয়। যাকে জিয়াউর রহমান আইন সিদ্ধ করেন এবং হত্যাকারীদের পুর্নবাসিত ও পুরস্কৃত করেন। এ অপপ্রয়াস ইতিহাসের পাপবিদ্ধ অধ্যায়।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলহাজ শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সহ সভাপতি আলহাজ নঈম উদ্দিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, আলহাজ খোরশেদ আলম সুজন, জহিরুল আলম দোভাষ, আলহাজ আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, উপদেষ্টা শেখ মাহমুদ ইসহাক, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, হাসান মাহমুদ শমসের, অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, আহমেদুর রহমান সিদ্দিকী, হাজি মোহাম্মদ হোসেন, হাজি জহুর আহাম্মদ, মাহবুবুল হক মিয়া, জোবাইরা নার্গিস খান, দিদারুল আলম চৌধুরী, আব্দুল আহাদ, মো. আবু তাহের, ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী, শহীদুল আলম, জহর লাল হাজারী, কার্যনির্বাহী সদস্য আবুল মনসুর, সৈয়দ আমিনুল হক, ইঞ্জিনিয়ার বিজয় কৃষাণ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট কামাল উদ্দিন আহমেদ, বখতিয়ার উদ্দিন খান, সাইফুদ্দীন খালেদ বাহার, মহব্বত আলী খান, ডা. নেছার উদ্দীন মঞ্জু, হাজি বেলাল আহমেদ, থানা আওয়ামী লীগের হাজি সিদ্দিক আলম, মমিনুল হক, মো. ইলিয়াস, রেজাউল করিম কায়সারসহ ৪৩ সাংগঠনিক ওয়ার্ড আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতারা।

সভার শুরুতে বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এর আগে সকালে দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন, কালোব্যাজ ধারণ, জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, খতমে কোরআন, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল শেষে সকাল ১০টায় হালিশহরস্থ বড়পোল মোড়ে দেশের সর্ববৃহৎ ও সর্বোচ্চ বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়। মহানগর আওয়ামী লীগের ১০টি টিম ট্রাকযোগে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল, শাহ আমানত (র.) শাহ দরগাহ, গরিবুল্লাহ শাহ (র.) মাজার, ইসমাইল এতিমখানা, টাকশা (র.) মাজার, অপরাজেয়, উপলব্ধি, নজির শাহ, বাওয়া চিলড্রেন, মাদানি মসজিদ এবং প্রবর্তক সংঘে ৭০০০ রান্না করা খাবার প্যাকেট বিতরণ করে।

ad

পাঠকের মতামত