12052

পেরুলের খলিলপুরে মসজিদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মুসল্লীদের দুটি পক্ষ মুখোমুখি

লালমাই প্রতিনিধি: লালমাই উপজেলার পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহি খলিলপুর জামে মসজিদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মুসল্লীদের দুটি পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন। এর জেরে যে কোন সময় বড় ধরনের সংঘর্ষ বা হতাহতের আশংকা দেখা দিয়েছে। যতদ্রুত সম্ভব বিষয়টি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সমাধান করে দিতে লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও লালমাই থানার অফিসার ইনচার্জসহ জনপ্রতিনিধিদের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন খলিলপুর গ্রামের কয়েকজন মুরব্বী।

গ্রামবাসী ও মুসল্লীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিষ্ঠার পর থেকে শান্তিপূর্ণভাবেই মসজিদের কার্যক্রম চলে আসছিল। প্রতি তিন বছর অন্তর মুসল্লীদের ঐক্যমতের ভিত্তিতে কমিটি পূর্ণগঠনও হয়ে আসছে। ২০১৭ সালের ২৪ ফ্রেবুয়ারি হরিশ্চর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক খলিলপুর গ্রামের বাসিন্দা আবদুস সাত্তার মজমুদার কে সভাপতি করে মসজিদের কমিটি গঠিত হয়। মেয়াদ শেষ হওয়ায় চলতি বছরের ১৩ মার্চ সভাপতির বাড়ীতে কমিটি পূর্ণগঠনের লক্ষ্যে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় ইউপি মেম্বার মোবারক হোসেনসহ ওই সভায় উপস্থিত কয়েকজন মুসল্লী প্রস্তাব করেন আবদুস সাত্তার মজুমদারকে সভাপতি রেখে আরো ৩ বছরের জন্য একটি কমিটি গঠন করতে। কিন্তু উপস্থিত মুসল্লীদের অনেকেই পূর্বের কমিটি বহাল না রেখে প্রস্তাব সমর্থনের ভিত্তিতে কমিটি পূর্ণগঠনসহ ইমাম পরিবর্তনের দাবী তোলেন। ওই সময় মুসল্লীদের দুপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে কয়েকজন লোক চেয়ার ভাংচুর শুরু করলে সভা প- হয়ে যায়। এরপর থেকে মুসল্লীদের একটি অংশ ওই মসজিদে নামাজ পড়া বন্ধ করে পাশ্ববর্তী মসজিদে চলে যায়। মুসল্লীদের ওই অংশটি সম্প্রতি একটি সভা ডেকে প্রস্তাব সমর্থনের ভিত্তিতে অবসরপ্রাপ্ত রেলওয়ে কর্মকর্তা আবদুল লতিফ মজুমদারকে সভাপতি করে নতুন একটি কমিটি গঠন করে।

ads

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খলিলপুর গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান, মসজিদ পরিচালনায় গঠিত দুই কমিটির সভাপতিদ্বয় উচ্চ শিক্ষিত ও সম্মানিত। তারা কেউই এলাকায় থাকেন না। একজন ঢাকায়, আরেকজন চট্টগ্রামে বসবাস করেন। সভাপতিদ্বয়ের অনুপস্থিতির সুযোগে দু’পক্ষের লোকজন দলাদলিতে জড়িয়ে পড়েছেন। স্থানীয়দের মধ্য থেকে সর্বজন গ্রহনযোগ্য একজন কে সভাপতি করে নতুন কমিটি গঠন করলে চলমান দ্বন্ধটি নিরসন করা সম্ভব হবে। তখন মসজিদ ও গ্রামে শান্তি ফিরে আসবে।

মসজিদ পরিচালনা কমিটির (মেয়াদোত্তীর্ণ) সভাপতি আবদুস সাত্তার মজুমদার বলেন, মসজিদের ইমাম সাহেব একজন কোরআনে হাফেজ। তারপরও মুসল্লীদের আপত্তি সাপেক্ষে সময় দিলে ইমাম সাহেব নিজ দায়িত্বে চলে যাবেন। তবে একজন আলেমকে অসম্মান করা ঠিক হবে না।

ads

পেরুল দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান এজিএম শফিকুর রহমান বলেন, লালমাই উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয়ের নির্দেশে মসজিদের মুসল্লীদের মধ্যে দ্বন্ধের বিষয়ে কথা বলতে গত ১৯ আগস্ট আমি ইউপি কার্যালয়ে ইমাম সাহেবকে ডেকেছিলাম। কিন্তু একজন ইউপি মেম্বারের বাঁধার কারনে ইমামের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

লালমাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মালেক বলেন, মসজিদের বিরোধ নিয়ে খলিলপুর গ্রামের সর্দার আমার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। আমি পেরুল দক্ষিণের চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দিয়েছি। তারপরও সমাধান না হলে আমার অফিসে ডেকে মুসল্লীদের বিরোধ সমাধানের চেষ্টা করবো।

উল্লেখ্য খলিলপুর জামে মসজিদটি ওই মৌজার সাবেক দাগ ১৫৩ ও হাল দাগ ২২১ এর ৪ শতক জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। বিএস খতিয়ান অনুযায়ী ওই সম্পত্তির মালিক খলিলপুর গ্রামের সফিউল্যাহ মজুমদার। শীঘ্রই এই সম্পত্তি মসজিদকে ওয়াকফ করে দিবেন বলে তিনি প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন।

ad

পাঠকের মতামত