2564

বুড়িচংয়ে গভীর রাতে হিন্দু পরিবারকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি

নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ষোলনল গ্রামের পশ্চিম পাড়া এলাকার  গনেশ চন্দ্র দাশের ঘরে  সোমবার দিবাগত রাত আনুমানিক ৩টায় মুখ বাঁধা ৮/৯ জনের একটি সশস্ত্র  দূর্বৃত্ত দল   প্রবেশ করে। এসময় গনেশ নিমসার বাজরে আড়তে এবং বড় ছেলে  কালি পদ শ্বশুর বাড়িতে অবস্থান করায় পুরো বাড়িটি পুরুষ শূন্য ছিলো। গভীর রাতে  সন্ত্রাসীদের ভয়ে চিৎকার শুরে করে গনেশের দুই কণ্যা সবিতা রাণী ( ২৫) ও তার বোন।  এসময়  দুজন গনেশের মেয়ে সবিতা রাণীর ১বছর বয়সী ঘুমন্ত শিশুপুত্র অভি দাশ কে গলায় ছুড়ি ধরে জিম্মি করে চিৎকার চেচামেচি করতে নিষেধ করলে ঘাবড়ে যায় তারা। পরে দুর্বৃত্তদল ঘরের সকল মালামাল বাক্সপেটরা,  ড্রয়ার, সুকেইস ভেঙ্গে চালের ড্রাম ও বিছানার তোষক সহ সবকিছু এলোমেলো করে। টেবিল ও সুকেসের ড্রয়ারে থাকা আনুমানিক ৫ হাজার টাকা, একজোড়া কানের জিনিস ও কয়েকটি সেন্টের বোতল নিয়ে যায়। এছাড়াও দুর্বৃত্তদল ঘরের আসবাবপত্র ও দুটি লক্ষী মুর্তি ভাংচুর করে এবং গৃহকর্তা গনেশ কোথায় আছে জানতে চায়। যাওয়ার সময় দুর্বৃত্তদল এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি ধমকি দেয় অন্যথায় বাড়িঘর পুড়িয়ে দেবে বলেও শাসিয়ে যায় বলে জানায় ভুক্তভোগী পরিবারটি।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, স্থানীয় প্রভাবশালী ও সুদের কারবারি হারুন মিয়ার সাথে জমি নিয়ে মামলা ও দ্বন্দ্ব রয়েছে। এ বিষয় নিয়ে গনেশ ও তার পরিবারের উপর কয়েকবার হামলা ও মারধর করেছে প্রভাবশালী হারুন মিয়া ও তার লোকজন। এলাকায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও মাতাব্বরগন এর আগে বহুবার বিচার শালিস করলেও বিষয়টি সুরাহা করতে পারেন নি। এবিষয়ে একটি মামলা এখনো চলমান রয়েছে আদালতে।  অসহায় সংখ্যালঘু পরিবারটির অভিযোগ, প্রতিনিয়তই জমি ও ভিটার দখল ছাড়তে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে প্রভাবশালী প্রতিবেশী হারুন ও তার লোকজন। ভুক্তভোগী  পরিবারটির দাবী এর আগে গত বৎসর ২১ ডিসেম্বর রাতে হারুন মিয়ার হয়রানি, নির্যাতন ও জমী নিয়ে দ্বন্দ্ব ও ঝগড়ার জেরে গনেশ দাশের স্ত্রী দীপালি রানী (৪৫) বিষপান করে আত্মহত্যা করেন। এমতাবস্থায় অসহায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এলাকায় চরম নিরাপত্তা হীনতা ও আতংকে রয়েছেন বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিবেশী হারুন মিয়া বলেন, গনেশের বাড়িতে কি হয়েছে তা তিনি বা ছুটিতে বাড়ি আসা মালয়েশিয়া প্রবাসী ছেলে রমিজ কিছুই জানেন না। ঘটনার রাতে সকলে ঘরেই ঘুমিয়ে ছিলেন। এটি তাদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত বলেও দাবী হারুন মিয়ার। জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের বিষয়ে তিনি জমির সাব-কাওলা দলিল দেখিয়ে বলেন, কয়েক বছর আগে গনেশের কাছ থেকে জমি কিনে নিয়েছেন। এখন গনেশ বিভিন্ন কথা বলে জমির দখল ছাড়তে চাইছে না ।
এবিষয়ে বুড়িচং থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকুল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিক এস আই রাজিব কর সহ ফোর্স পাঠানো হয়েছে। এবং পরে নিজেও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এবিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে সত্যতা জাচাই করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ad

পাঠকের মতামত