ষড়যন্ত্র করেও নেত্রীর হৃদয় থেকে আমাকে মুছতে পারেনি: এমপি বাহার
মাইনুল হক: আমার বিরুদ্ধে সেই ৮৪ সাল থেকে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল, এখনও সেই ষড়যন্ত্র চলছে। আমি খুব তরুণ বয়সে কুমিল্লা পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলাম। দ্বিতীয় বার যখন পৌরসভার নির্বাচন করেছিলাম, তখন সভাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল আমাকে পরাজিত করার জন্য। সাবাই বলেছিল বাহার ঠেকাও, কিন্তু পারে নাই। আমি ছাত্রলীগ করতাম একসময়। জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুকে ঘাতকরা ১৯৭৫ সালে হত্যা করে। সেই ১৯৭৫ সালে আমি ছাত্রলীগ ছেড়ে আওয়ামীলীগে যোগদান করি। সেই সময় আমি কুমিল্লায় আওয়ামীলীগের প্রতিটি নেতার সাথে যোগাযোগ করি। সেই শহর আওয়ামীলীগের কমিটিতে আমাকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছিল। আওয়ামীলীগকে সুসংগঠিত করার জন্য আমি কাজ করেছি। আজকে কুমিল্লা শহরের প্রতিটি পাড়ায় এবং মহল্লায় আওয়ামীলীগের কর্মী তৈরী হয়েছে আওয়ামীলীগের দুর্ঘ তৈরী হয়েছে। আমি আজকের এই সম্মেলন থেকে বলতে পারি এই কুমিল্লার মাটি শেখ হাসিনার ঘাঁটি। এই কুমিল্লার মাটি বঙ্গবন্ধুর ঘাঁটি। বাংলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গবন্ধু কণ্যা শেখ হাসিনার আদর্শকে লালন করে কাজ করতে হবে। আমাদের প্রতিটি কর্মীর কর্মকান্ডের সাথে দলের সুনাম জড়িত। বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার সুনাম জড়িত। তাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করে শেখ হাসিনার যোগ্য কর্মী হিসেবে কাজ করতে হবে। ত্যাগের মহিমায় দলকে গড়তে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৬ সপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭ ঘটিকায় কুমিল্লা মানগরীর ছোটরা মালেকা মমতাজ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মহানগর ০২নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ আয়োজিত ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কুমিল্লা-০৬ সদর আসনের সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী আ.ক.ম বাহাউদ্দিন বাহার এসব কথা বলেন।
কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্বা আ.ক.ম বাহাউদ্দিন বাহার এমপি আরও বলেন, কুমিল্লাবাসীর জন্য একটি সুখবর। অচিরেই কুমিল্লা আসবেন আমাদের প্রিয় নেত্রী জাতির জনক বঙ্গন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয় ও নতুন সাজে সজ্জিত কুমিল্লা ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত স্টেডিয়াম উদ্বোধন করবেন নেত্রী। নেত্রীকে স্বাগত জানাতে সবাই প্রস্তুতি নিন।
আমি কুমিল্লার আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনকে সুসংগঠিত করতে চাই। আমাকে দল থেকে সরিয়ে দিতে নানামূখি ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। ২৩ বছর দলে পদ বঞ্চিত ছিলাম। তবুও যখনই প্রয়োজন হয়েছে দলের জন্য নেত্রীর জন্য জীবন বাজি রেখে রাজপথে নেমেছি। শত ষড়যন্ত্র করেও শেখ হাসিনার হৃদয় থেকে আমাকে মুছে দিতে পারেনি। আজ কুমিল্লার ঘরে আওয়ামী লীগ,যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ তৈরী হয়েছে। কুমিল্লা মুক্তিযুদ্ধের পথিকৃত। রাজনীতির পথিকৃৎ। পথিকৃৎ কুমিল্লার ঐহিত্য সমুন্নত রাখতে হবে। আমরা নেতা বানাবো মানুষের জন্য কাজ করার জন্য। দলের পদ ভাঙ্গিয়ে কারো উপর নির্যাতন করা যাবে না। ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর কুমিল্লা শহরে ওয়ার্ডে ঘুরে সংগঠন তৈরী করেছি। কুমিল্লার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সারা জীবন সততার সাথে কাজ করে আসছি। আমার কর্মীদেরও সততার সাথে কাজ করতে হবে। কোন এক সময় কুমিল্লায় আওয়ামীলীগ এত বেশী শক্তিশালী ছিলনা। আজ এই কুমিল্লার প্রতিটি স্থানে, প্রতিটি জনপদে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামীলীগ, মহানগর যুবলীগ, মহানগর স্বেচ্ছসেবকলীগ ও মহানগর ছাত্রলীগ সহ প্রতিটি অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা আগের তুলানায় অনেক বেশী শক্তিশালী ও সু-সংগঠিত সংগঠন। তখন আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ করা মানুষ পাওয়া কঠিন ছিল। আজকে যেমন আমাকে ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে রাজনীতি করতে হচ্ছে সেদিনও ষড়যন্ত্র ছিল। আজ কুমিল্লার ঘরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বে”ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ তৈরী হয়েছে। দীর্ঘ তেইশটি বছর আওয়ামীলীগ থেকে আমাকে পদ বঞ্চিত রাখা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে বিচ্যুত হইনি। একসময় পকেট কমিটি দিয়ে কুমিল্লায় আওয়ামী লীগ চলতো। আমরা দলের ত্যাগী-পরীক্ষিত কর্মীদের দিয়ে কমিটি গঠন করেছি এবং করছি। আমরা নেতা বানাব মাস্তানী করার জন্য নয়, মানুষের জন্য কাজ করার জন্য। মানুষের মনে কষ্ট দেওয়ার জন্য নয়, সেবা করার জন্য। আর আজকে যাদেরকে কমিটিতে রাখা হবে তাদের ত্যাগের মহিমা নিয়ে রাজনীতি করতে হবে। কেউ ভিজিটিয় কার্ড ব্যবহার করে বলবেন না আমি ওয়ার্ডের সভাপতি, আমি ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক। তাহলে কমিটি বাতিল করে দিব।
কুমিল্লা মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত এর সভাপতিত্বে এড. নুরুর রহমানের এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত, মহানগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি কুমিল্লা জেলা পিপি এডভোকেট জহিরুল ইসলাম সেলিম, সহ-সভাপতি আব্দুল আলিম কাঞ্চন, কুমিল্লা জেলা মহানগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও কুমিল্লা জেলা স্বাচিপের সভাপতি আব্দুল বাকী আনিছ, সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র জমির উদ্দিন খান জম্পি, মহানগর আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক সাদেকুর রহমান রানা, মহানগর স্বে”ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেকুর রহমান পিয়াস ,মহানগর ছাত্রলীগের আহবায়ক আবদুল আজিজ শিয়ানুক প্রমূখ। এসময় মঞ্চে উপ¯ি’ত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাজাহান সাজু, প্রচার সম্পাদক জহিরুল কামাল,কুমিল্লা আইনজীবি সমিতির সভাপতি সভাপতি এড. আবদুল মমিন ফেরদৌস, শ্রমিক লীগ নেতা হাসান খসরু, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হাই বাবলু, সদস্য সাবেক কাউন্সিলর কাইয়ুম খান বাবুল খোরশেদ আলম, হাজী আবদুল মালেক, হাজী এনায়েত উল্লাহ, মিজানুর রহমান, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আলমগীর হোসেন, হাবিবুল আল আমিন সাদি সহ মহানগর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় প্রবীন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হাজী বাহার বক্তব্য শেষে মহানগর ০২নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের কমিটির নাম ঘোষণা করেন। ০২নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের নব-গঠিত কমিটিতে ছোটরা এলাকার নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে সভাপতি ও আব্দুল হামিদকে সাধারন সম্পাদক করে ৬৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির নাম ঘোষণা করেন।