42868

জার্মানির সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পেলেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার প্রায় ১৬ মাস পর জার্মানির সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পেয়েছেন সাবেক চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল। সোমবার বার্লিনে জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ভাল্টার স্টেইনমায়ারের সরকারি বাসভবন বেলভিউ প্রাসাদে আঙ্গেলা ম্যার্কেলকে গ্র্যান্ড ক্রস অব দ্য অর্ডার অব মেরিট পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।

পুরস্কার দেওয়ার অনুষ্ঠানে জার্মানির প্রেসিডেন্ট স্টেইনমায়ার সাবেক চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের প্রশংসা করে বলেন, ‘তিনি একজন একজন অতুলনীয় রাজনীতিবিদ, যিনি অনেক সংকটের মধ্য দিয়ে জার্মানিকে সফলভাবে পরিচালনা করেছিলেন। ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকাকালে আপনি অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জের মধ্যে আমাদের দেশকে অর্থনৈতিক সাফল্যে সহায়তা করেছেন।’

ads

প্রেসিডেন্ট স্টেইনমায়ার আরও বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে আঙ্গেলা ম্যার্কেল জার্মানির সেবা করেছেন, প্রজ্ঞা, আবেগ ও উচ্চাকাঙ্ক্ষার সঙ্গে জার্মানির গণতন্ত্রের এবং জনগণের মঙ্গলের জন্য তিনি কাজ করেছেন। তিনি অক্লান্তভাবে এবং কখনো কখনো শেষ শারীরিক শক্তি দিয়ে দেশের জন্য কাজ করে গেছেন।

আঙ্গেলা ম্যার্কেল এ পুরস্কারের জন্য স্টেইনমায়ারকে ধন্যবাদ জানান। এ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জার্মানির বর্তমান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন ও আঙ্গেলা ম্যার্কেলের স্বামী ইয়াকিম সাউয়ার।সাধারণভাবে রাজনীতিকদের এ পুরস্কার দেওয়া হয় না। এর আগে জার্মানির সাবেক চ্যান্সেলর কনরাড অ্যাডেনাউয়ার ও হেলমুট কোহল এ পদক পেয়েছিলেন।হামবুর্গে জন্মগ্রহণকারী আঙ্গেলা ডরথিয়া ম্যার্কেল ১৯৫৪ সালে সমাজতান্ত্রিক ধ্যানধারণায় বিশ্বাসী তাঁর ধর্মযাজক বাবা হোর্স্ট কেসনার এবং মা ইংরেজি ও ল্যাটিন ভাষার শিক্ষিকা হেরলিন্ড কেসনারের সঙ্গে পশ্চিম থেকে পূর্ব জার্মানিতে চলে যান।

ads

১৯৮৯ সালের শেষের দিকে যখন পূর্ব জার্মানির সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা ভেঙে বহুদলীয় গণতন্ত্রের সূচনা হচ্ছিল, সেই সময় সেখানে গণতান্ত্রিক জোটের মুখপাত্র হয়েছিলেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল। পরে ১৯৯০ সালে পূর্ব জার্মানির সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী প্রধানমন্ত্রী লোথার ডে মেসায়ারের সরকারের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেই ছিল পদার্থবিদ্যার কৃতী ছাত্রী আঙ্গেলা ম্যার্কেলের রাজনীতিতে হাতেখড়ি।১৯৯০ সালে দুই জার্মানি একত্র হলে আঙ্গেলা ম্যার্কেল হেলমুট কোহলের মন্ত্রিসভায় ১৯৯১ সালে নারী ও যুববিষয়ক এবং ১৯৯৪ সালে পরিবেশ ও পরমাণু নিয়ন্ত্রণবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে ১৯৯৮ সালে ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও ২০০০ সাল থেকে দলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। রক্ষণশীল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন পার্টিতে হেলমুট কোহল–পরবর্তী অনেক ঝানু রাজনীতিক থাকলেও আঙ্গেলা ম্যার্কেল তাঁর আপন প্রতিভা ও কৌশলের জোরে সবাইকে পাশ কাটিয়ে জার্মানির রাজনীতিতে নিজের অবস্থান শক্ত করেন। তিনি ২০০৫ সালের ২২ নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত জার্মানির চ্যান্সেলর পদে ক্ষমতায় ছিলেন।

ad

পাঠকের মতামত