40095

জরুরি বৈঠকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের উদ্বেগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জেরুজালেমে ইসরাইল মন্ত্রীর পবিত্র আল আকসা মসজিদ সফর ইস্যুতে জরুরি বৈঠক করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। বৃহস্পতিবারের (৫ জানুয়ারি) ওই বৈঠকে ইসরাইলি মন্ত্রীর আল আকসা সফর নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা। সেই সঙ্গে পবিত্র এ মসজিদ প্রাঙ্গণে স্ট্যাটাস কো তথা স্থিতাবস্থা বজায় রাখার ওপর জোর দিয়েছে।

গত মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) কড়া নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে আল আকসা মসজিদ এলাকা পরিদর্শন করেন ইসরাইলের নতুন জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ও উগ্র ইহুদি ধর্মীয় নেতা ইতামার বেন গেভির। এ সময় সেখানে ১৫ মিনিট অবস্থান করেন এই ইহুদি নেতা।

ads

এরপর এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, হামাসের হুমকিতে মাথা নত করবে না ইসরাইল। একই সঙ্গে আল-আকসা ইহুদিদের কাছে ‘টেম্পল মাউন্ট’ নামে পরিচিত হওয়ায় এ স্থান সবার জন্যই উন্মুক্ত বলে দাবি করেন তিনি। বেন গেভিরের ওই সফরের পর আল আকসায় দলে দলে প্রবেশ করছে ইসরাইলি ইহুদিরা।

বেন গেভিরের এই কাণ্ডে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। ফিলিস্তিনের পাশাপাশি নিন্দা জানিয়েছে মিশর, জর্ডান, সৌদি আরব, তুরস্ক ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ সত্তাহ একে ‘নজিরবিহীন উসকানি’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘বেন গেভিরের এই সফর আল আকসাকে ‘ইহুদি টেম্পল’-এ রুপান্তরিত করার ঘৃণ্য চেষ্টা।

ads

এমন পরিস্থিতি বেন গেভিরের সফর নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়। বৈঠকের আহ্বান জানায় আরব দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত ও নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য চীন।

পবিত্র মক্কা ও মদিনার দুই মসজিদের পর আল আকসা মসজিদ সারা বিশ্বের মুসলিমদের কাছে তৃতীয় পবিত্র স্থান। এ মসজিদে শত শত বছর ধরে স্ট্যাটাস কো তথা স্থিতাবস্থা বজায় রয়েছে। যা শুধুমাত্র মুসলিমদের প্রবেশ ও নামাজ পড়ার অনুমতি দেয়।

ইহুদিদের কাছেও এটি পবিত্র স্থান। তাদের কাছে এটি ‘টেম্পল মাউন্ট’ হিসেবে পরিচিত। তবে এখানে তাদের প্রবেশের অনুমতি নেই। তবে ইসরাইলের উগ্র ও কট্টরপন্থি ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলো বহুদিন ধরে চলে আসা সেই রীতি বদলে ফেলার চেষ্টা করছে।

বৃহস্পতিবার আল আকসা ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক বসে। বৈঠকে বৈঠকে জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মনসুর নিরাপত্তা পরিষদকে বেন গেভিরের উসকানিমূলক কাণ্ডের বিরুদ্বেধ ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান। ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আল আকসায় প্রবেশের মধ্যদিয়ে ইসরাইল রেডলাইন তথা সীমা অতিক্রম করেছে। আর কোন রেডলাইন অতিক্রম করলে নিরাপত্তা পরিষদ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’

জাতিসংঘের রাজনৈতিক বিষয়ক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা খালেদ খিয়ারি কাউন্সিলকে জানান, ২০১৭ সালের পর প্রথমবারের মতো ইসরাইলি কোনো মন্ত্রী আল আকসা মসজিদ পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, ‘এ সফর কোনো সহিংসতার পর হয়নি। তবে বিদ্যমান স্থিতাবস্থায় পরিবর্তনে বেন-গেভিরের অতীত সমর্থনের জন্য এটি বিশেষ উসকানিমূলক।’

ইসরাইলি মন্ত্রীর আল আকসা সফরে উদ্বেগ জানিয়েছেন তবে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এ ছাড়া জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস পবিত্র এ স্থান ও এর আশপাশে উত্তেজনা বাড়াতে পারে এমন পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকতে সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

এ বৈঠকের আগে জাতিসংঘে ইসরাইলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইহুদিদের তাদের পবিত্র স্থান পরিদর্শনের অনুমতি দেয়া হয়েছে। এটি প্রত্যেক ইহুদির অধিকার। ইসরাইল স্থিতাবস্থার কোনো ব্যত্যয় করেনি এবং এমন কোনো পরিকল্পনাও নেই।’

ad

পাঠকের মতামত