35312

অনিয়মিত অভিবাসীদের স্থায়ী করছে জার্মানি

নিউজ ডেস্ক : অনিয়মিত অভিবাসীদের স্থায়ী করতে নতুন উদ্যোগ হাতে নিয়েছে জার্মানি। দেশটির সংসদ বুধবার একটি নতুন প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে। ‘ডুলডুং’ বা বহিষ্কারের নির্দেশের উপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা নিয়ে অবস্থান করা অভিবাসীদের দেশটিতে স্থায়ীভাবে থাকতে এবং চাকুরির বাজারে সম্পৃক্ত হতে সহায়তা করবে এই প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

ডুলডুং সাধারণত তাদের দেয়া হয় যাদের আন্তর্জাতিক সুরক্ষার আবেদন বাতিল হয়েছে বা যারা জার্মানিতে থাকার পূর্ণ অনুমতি পাননি৷ এক্ষেত্রে এমন মানুষরা গুরুত্ব পান যাদের আশ্রয় আবেদন বাতিল হলেও দেশে ফেরত পাঠানো নিরাপদ নয়৷ আশ্রয়প্রার্থী অন্তঃসত্ত্বা নারী কিংবা আশ্রয়ের আবেদন করার পর যারা পড়াশোনা বা কোনো প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তাদেরও ডুলডুং দেয়া হয়৷

ads

এছাড়া ডুলডুং তাদেরও দেয়া হয় যাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া কোনো কারণে স্থগিত হয়ে গেছে। এটা সাধারণত সীমিত সময়ের জন্য প্রযোজ্য হয়৷ তবে প্রায়ই দেখা যায় যে একজন অভিবাসী এতগুলো ডুলডুং পান যে সবমিলিয়ে জার্মানিতে তার থাকার মেয়াদ পাঁচ বছর বা তার বেশি সময় হয়ে যায়৷ এরকম অনিয়মিত অভিবাসীরা এই সময়ে সাধারণত কাজও করেন৷

নতুন আইনে এরকম অনিয়মিত অভিবাসীদের প্রাথমিকভাবে এক বছরের থাকার অনুমতি দেয়া হবে৷ পরীক্ষামূলক এই বছরে তাদের প্রমাণ দিতে হবে যা তারা জার্মান ভাষা শিখছেন এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী৷ যদি প্রথম বছরে তারা দুটোই প্রমাণ করতে পারে তাহলে পরবর্তীতে তাদের দীর্ঘমেয়াদে ভিসা দেয়া হবে৷ এক লাখ ৩০ হাজারের মতো অভিবাসী প্রাথমিকভাবে এই সুবিধা পাবেন বলে সরকারি নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে৷ ‘‘এই মানুষদের, যারা একটা লম্বা সময় জার্মানিতে অবস্থানের মাধ্যমে দেশটিতে নিজেদের জীবন গড়ছেন, বসবাস আইনের আওতায় বৈধভাবে বসবাসের জন্য প্রয়োজনীয় শর্তাবলী পূরণ করার সুযোগ দেয়া হবে,’’ লেখা হয়েছে নথিতে৷

ads

তবে অপরাধীদের এই সুযোগ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার৷ জার্মানির ব্ল্যাক ফরেস্ট শহর ফ্রাইবুর্গে কর্মরত এনজিও কর্মী উলরিশ স্নাইডার সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন৷ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কারিতাসের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন এরকম একটি আইনের অপেক্ষা করছি আমরা৷ কারণ এটা এমন মানুষদের জন্য সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে যারা একসময় ফেরত যেতে বাধ্য হওয়ার হুমকির মধ্যে জার্মানিতে জীবনযাপন করছিলেন৷’’

জার্মান অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী রবার্ট হ্যাবেক সরকারের এই উদ্যোগকে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে ‘‘প্রাগম্যাটিক এবং স্মার্ট’’ আখ্যা দিয়েছেন৷ কারণ ইউরোপের দেশটি এখন হসপিটালিটিসহ নানা খাতে কর্মী সংকটে ভুগছে৷ ‘‘এইসব মানুষের দক্ষতা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হলে সেটি আমাদের দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার বিপরীতে একটি পাপ হিসেবে বিবেচিত হবে,’’ বলেন তিনি৷

তবে, দেশটির বিরোধী দল সিডিইউ/সিএসইউ শুরু থেকে এই আইনের সমালোচনা করেছে৷ এর ফলে সুরক্ষা পাবে না জেনেও জার্মানিতে আসা মানুষগুলো দীর্ঘমেয়াদে জার্মানিতে থাকতে পারবে বলে এক ধরনের মানসিকতা অনেকের মধ্যে তৈরি হবে বলে মনে করেন সিডিইউর সাংসদ রাল্ফ ব্রিংকহাউস৷ বিষয়টি সামগ্রিক অভিবাসন প্রক্রিয়ার উপর নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করতে পারে বলে মনে করেন তিনি৷ সূত্র: ইনফোমাইগ্রান্টস।

ad

পাঠকের মতামত