17911

২০২৭ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে জিএসপি পাবে বাংলাদেশ

নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের ঘোষণা আসতে পারে আগামী ২০২৪ সালে। এতে ইউরোপসহ বিশ্বের অনেক দেশে শুল্কমুক্ত সুবিধা বন্ধ হয়ে যাবে। তবে আগামী ২০২৭ সাল পর্যন্ত অগ্রাধিকার বাজার সুবিধা (জিএসপি) দেবে যুক্তরাজ্য।

দুই ধাপে তিন বছর করে বাংলাদেশ এই সুবিধা পাবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট ডিকসন।

ads

বুধবার তার বাসায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্মেলন বিষয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

ডিকসন বলেন, রপ্তানিভিত্তিক বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিকে বিকশিত করার ক্ষেত্রে সহযোগিতার অংশ হিসেবে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হলেও দুই ধাপে তিন বছর করে যুক্তরাজ্যের বাজারে জিএসপি সুবিধা পাবে। প্রথম ধাপে ২০২৪ সাল আর দ্বিতীয় ধাপে ২০২৭ সাল পর্যন্ত জিএসপি সুবিধা পাবে। অর্থাৎ আগামী ছয় বছর যুক্তরাজ্যের বাজারে বাংলাদেশ অগ্রাধিকারমূলক সুবিধা পেতে থাকবে।

ads

তিনি আরও বলেন, ‍বাংলাদেশে বিনিয়োগে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এর মধ্যে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমম্বয়হীনতা, পদ্ধতিগত অনিশ্চয়তা, চুক্তি বাস্তবায়নের শর্তাবলি ও দুর্নীতি দূর করার পাশাপাশি ট্যাক্সেশনে জটিলতা রয়েছে। এই বিষয়গুলোর সুরাহা হওয়া জরুরি।

আর এসব বিষয় সুরাহার ক্ষেত্রে পূর্বশর্ত হচ্ছে রাজনৈতিক অঙ্গীকার বলে উল্লেখ করেন রবার্ট ডিকসন।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) জোটের সঙ্গে গত ১ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে পশ্চিম ইউরোপের দেশ যুক্তরাজ্য। ‘ব্রেক্সিট’ নামে খ্যাত এই বিচ্ছেদের পর নতুন করে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়তে হচ্ছে দেশটিকে। ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্য ৬০টি দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষর করেছে। তবে ২০২৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ এই সুবিধা পাবে বিধায় এফটিএ নিয়ে এখনো ভাবছে না সরকার। এলডিসি থেকে উত্তরণে বাংলাদেশ ২০১৮ সালে প্রাথমিক যোগ্যতা অর্জন করেছে। ২০২১ সালে চ‚ড়ান্ত সুপারিশ পেলে নিয়ম অনুযায়ী ২০২৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে মিলবে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি। যদিও মহামারী করোনার কারণে চ‚ড়ান্ত সুপারিশের সময়সীমা বাড়ানোর জন্য গত জানুয়ারিতে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির (সিডিপি) কাছে আবেদন করেছে বাংলাদেশ।

স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার স্বীকৃতি দেয় জাতিসংঘ। তবে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার এই প্রক্রিয়া বেশ দীর্ঘ। একটি দেশ উন্নয়নশীল দেশ হতে পারবে কি না, সেই যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয় দেশটির মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ, জলবায়ু ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা– এই তিনটি সূচক দিয়ে। উন্নয়নশীল দেশ হতে প্রথমেই ওই তিনটি সূচকের দুটিতে নির্ধারিত মান অর্জন করতে হয়। তবে এই মান সব সময় এক থাকে না, এটি পরিবর্তন করা হয়। উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার আরেকটি উপায় আছে। সেটি হলো, নির্ধারিত মাথাপিছু আয়ের দ্বিগুণ মাথাপিছু আয় হলেও একটি দেশ উন্নয়নশীল দেশ হতে পারে।

দুটিতে মান অর্জন করলে একটি দেশকে এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার প্রাথমিক যোগ্যতা অর্জন করার ঘোষণা দেওয়া হয়। তিন বছর পরপর এই মূল্যায়ন করে সিডিপি। প্রাথমিক যোগ্যতা অর্জনের পরের তিন বছর ধারাবাহিকতা দেখে থাকে সিডিপি। তিন বছর পরের মূল্যায়নে ওই সূচকগুলোতে ধারাবাহিকতা থাকলে অর্থাৎ, তিনটির মধ্যে অন্তত দুটিতে মান অর্জন করলে চূড়ান্তভাবে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার সুপারিশ করে সিডিপি। এখানেই শেষ নয়। আরও তিন বছর পর জাতিসংঘের সাধারণ সভায় দেওয়া হয় উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার চ‚ড়ান্ত অনুমোদন।

ad

পাঠকের মতামত