12671

বাংলাদেশে অষ্টভুজাকৃতির মন্দিরটি একমাত্র কুমিল্লাতেই বিদ্যমান

ডেস্ক নিউজ: কুমিল্লা একটি প্রাচীন জনপদ যেখানে অনেক ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন বিদ্যমান।যে স্হাপনাটি নিয়ে আলোচনা করব সেটির নাম সপ্তরত্ন মন্দির।তবে জগন্নাথদেবের মন্দির বা জগন্নাথ মন্দির নামে পরিচিতি রয়েছে।

কুমিল্লা মহানগরীর কেন্দ্রস্হল থেকে চার কিলোমিটার পূর্ব দিকে কুমিল্লা–বিবিরবাজার সড়কের কাছে জগন্নাথপুর নামক স্হানে এই মন্দিরটির অবস্হান। মন্দিরের নাম থেকেই ঐ স্হানের নাম, এমন কি ইউনিয়নের নামও জগন্নাথপুর। পূর্ববর্তী কুমিল্লা-চট্টগ্রাম সড়ক থেকে ও এই মন্দিরটি পথচারীদের দৃস্টিগোচর হয়। এই মন্দিরে জগন্নাথ, বলরাম ও শুভদ্রার আর্কষনীয় মুর্তি ছিল। যা প্রতি বছর রথযাত্রায় এই মন্দির থেকে এক কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্হিত গুন্ডিচা মন্দিরে হাতীর সাহায্যে রথে করে টেনে আনা হতো বলে জনশ্রুতি আছে। সপ্তরত্ন মন্দিরের পাশেই আরো দুটো প্রাচীন স্হাপনা রয়েছে যেখানে বর্তমানে ইসকনের পরিচালনায় জগন্নাথদেবের মন্দির স্হাপিত রয়েছে।

ads

এই মন্দিরটি ত্রিপুরার মহারাজা রাধা কিশোর মানিক্য স্হাপন করেন। তার রাজত্ব কালের সময়, স্হাপনার দেয়ালে অংলকৃত টেরাকোটার ডিজাইনে এটি ষোড়শ শতকের স্হাপত্যকর্ম বলে অনুমান করা হয়। দেশ বিভাগের পর আকর্ষণীয় মুর্তি তিনটি ত্রিপুরার মেলাঘরে নিয়ে যাওয়া হয় বলে মুখরোচক আলোচনা রয়েছে।

চারতলা বিশিষ্ট মন্দিরের উপরের অংশ ত্রিকোনাকার বিশিষ্ট। চুড়ায় ধাতু নির্মিত কলসাকৃতির একটি প্রতিকৃতি এখনো উজ্জ্বলৌমান। তিনতলা পর্যন্ত প্রত্যেক তলার বাহিরের অংশ জ্যামিতিকভাবে অষ্টাভুজা কৃতির। নীচতলার অংলকরন ও টেরাকোটা গুলি নস্ট হয়ে গেলেও উপরের তলার কিছু লতা ও ফুলপাতার টেরাকোটাগুলি ঐতিহ্য কে স্মরন করিয়ে দেয়। মন্দিরের নীচতলা থেকে একটি সিঁড়ি নীচের দিকে নেমে গেছে, এতে মনে হয় নীচের অবকাঠামোটি হয়ত কালের বিবর্তনে মাটির নীচে চাপা পড়ে আছে।

ads

এই ধরনের অষ্টভুজাকৃতি মন্দির বাংলাদেশের আর কোথাও আছে বলে জানা যায়নি।

এই প্রাচীন মন্দিরটি সামনে সাইনবোর্ড বলে দেয় এটি প্রত্নতাত্বিক বিভাগের তত্বাবধানে রয়েছে। একসময় দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকলেও এখন বন্ধ করে রাখা হয়েছে।

শহরের অতি নিকটবর্ত্তী এই প্রত্নতাত্বিক ও ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্হানটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ জনসাধারণের নিকট উন্মুক্ত করে দিত তবে সরকার ও রাজস্ব আয় করতে পারত। আগামী প্রজন্মও এই বাংলাদেশের একমাত্র অস্টভুজাকৃতির স্হাপত্য নির্দশন দেখার সুযোগ পেত। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ, স্হানীয় সংসদ সদস্য ও প্রশাসন একটু ভুমিকা নিবেন কি?

লেখক: অধ্যাপক রাহুল তারণ পিন্টু

ad

পাঠকের মতামত