12178

বরুড়ার “কৃষ্ণ সাগর” দিঘিটিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে দেখতে চায় বরুড়াবাসী

বরুড়া প্রতিনিধি: বরুড়া উপশহরের প্রাণকেন্দ্রে বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স /হাসপাতাল ও সুন্নিয়া আলীয়া মাদ্রাসা, বরুড়া-কুমিল্লার প্রধান সড়ক ঘেষেই ”কৃষ্ণ সাগর”নামের একটি বড় দিঘি আছে। কৃষ্ণ সাগরটি বরুড়ার পুরাতন দিঘির মধ্যে অন্যতম। এ দিঘির পূর্বপাড়েই “বরুড়া কেন্দ্রীয় ঈদগাহ” এবং বরুড়া সরকারী বা বেসরকারী ভাবে কোন হেলিকপ্টার আসলে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ এর একাংশের মাঠটি হেলিপেট হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কৃষ্ণ সাগরটি ঐতিহাসিক একটি দিঘি হিসেবে বরুড়া সদরে ‍ সুপরিচিত।

কুমিল্লা মহানগরের প্রাণকেন্দ্রে ধর্মসাগর নামেও একটি ২৩.১৮ একরের আয়তন বিশিষ্ট বড় দিঘি নগরীর সৌন্দয্য ও মনোরম পরিবেশে আবহমান কাল থেকেই কুমিল্লায় সুপরিচিত। এটিকে নগরীর ফুসফুসও বলা হয়। ধর্মসাগরের আদলে আমাদের বরুড়ার সদরের ”কৃষ্ণ সাগর” সাজাতে পারলে এটা হবে বরুড়ার আদর্শের প্রতীক ও অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। যা বরুড়ার প্রগতির দিকে ধাবিত হবার প্রত্যয়টিকে গতিশীল করে শিক্ষা ও সংস্কৃতিমনা এবং পর্যটন শিল্পকে অন্যন্য উ্চ্চতায় নিয়ে যাবে। তাতে বরুড়ার ইতিহাসের পাতায় স্থান করে ঐতিহাসিক ”কৃষ্ণ সাগর”টি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে সুপরিচিতি লাভ করবে। বরুড়ার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে কৃষ্ণ সাগর অনাদিল কাল থেকেই। কৃষ্ণ সাগরের তীর ঘেষেই কেন্দ্রীয় ঈদগাহ এবং সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের একটি বড় প্রকল্প বিভাগীয় শহর, জেলা শহর ও উপজেলা শহরে মু্ক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হৃদয়ে ধারন করার নিমিত্তে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাতিকে অগ্রগামী ও প্রগতির দিকে ধাবিত করার জন্য “বরুড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সটি” কৃষ্ণ সাগরের উত্তর পাড় ঘেষেই বরুড়া কেন্দ্রীয় ঈদগাহের ঠিক উত্তর-পূর্ব কোনেই নির্মাণাধীন প্রকল্পটি অবস্থিত। এটি বরুড়া উপজেলার মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মৃতি ও ইতিহাসকে সংরক্ষণ ও নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে নেয়ার জন্য যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে। “কৃষ্ণ সাগর”টিকে যথাযথ পরিকল্পনায় নিয়ে একটি মনোরম ও দৃষ্টি নন্দন পার্ক বিনোদন বা পর্যটন কেন্দ্র যাই বলি না কেন। তাকে প্রাধান্য দিয়ে নিলে বরুড়ার সদরের আবাসিক এলাকার আধুনিক ও মানসম্মত জীবন যাপনের একটি পার্ক বা বিনোদন কেন্দ্র হলে সেটা উপশহরের মানুষগুলো স্বস্তি পাবে। বরুড়া উপশহরের কর্মময় জীবনে হাঁপিয়ে ওঠা মানুষ একটু স্বস্তির জন্য সকাল বিকেল ছুটে আসেন। স্বাস্থ্য সচেতন লোকজন সকালে ও সন্ধ্যায় কৃষ্ণ সাগরের পূর্ব পাড় বরুড়া কেন্দ্রীয় ঈদগাহে হেঁটে বেড়ান নির্মল বায়ুর প্রত্যাশায়।

ads

এলাকার মহিবুল্লাহ ভূঁইয়া বাবুল বলেন, তিনি বরুড়া বাজারের পাশে পরিবার পরিজন নিয়ে থাকেন। ঈদগাহের মাঠে সকাল বিকেল নিয়মিত হাটেন। অনেক লোকজনের হেঁটে বেড়ানো, ছোটদের ফুটবল খেলা সহ নানা বয়সীর লোকজন সকাল বিকাল আসে। বরুড়া কেন্দ্রীয় ঈদগাহটি সমসাময়িক সময়ের বরুড়ার আবাসিক ও বরুড়ার পাশের অনেক গ্রামের লোকজন সকাল বিকাল বেড়াতে আসে। কৃষ্ণ সাগরের পশ্চিম পাড়েই বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি অবস্থিত। কৃষ্ণ সাগরের দক্ষিণ পাড়ে বরুড়া সুন্নিয়া আলীয়া মাদ্রাসা অবস্থিত। বরুড়ার শিক্ষা ও সংস্কৃতি এবং বরুড়াকে আলোকিত করার নিমিত্তে বরুড়ার আপামর জনসাধারণ এবং বরুড়ার বিজ্ঞ ও অভিজ্ঞজন বিশেষ করে রাজনীতিবিদ, সরকারী উচ্চ পর্যায়ের নীতিনির্ধারণকারী আমলা, সুশীল সমাজের বিশিষ্ট্য ব্যক্তিবর্গ, বরুড়ার সকল সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, সাংবাদিকবৃন্দসহ বরুড়ার সকল পর্যায়ের সচেতন নাগরিকগণের “কৃষ্ণ সাগর”টিকে সংস্কার করে পরিবেশ বান্ধব ও মনোরম পরিবেশে সাজিয়ে বিনোদন পার্ক বা পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার আবেদন জানাচ্ছি।

ইতিহাস থেকে জানা যায় প্রায় সাড়ে তিন কোটি বছরের পূর্বের “পৌরাণিকগ্রন্থে উল্লেখিত লমলম” সাগরের লালমাই পাহাড়ের পাদদেশেই সমতটের রাজধানী হিসেবে সুপরিচিত কুমিল্লা জেলা সদর থেকে মাত্র ২৬ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে বরুড়া উপজেলা অবস্থিত । বিখ্যাত কার্জনখাল বয়ে গেছে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে,যা প্রতিবছর সবুজ-সোনালি ফসল কৃষাণ কৃষাণী মুখে এনে দেয় কাশফুলের হাসি।বরুড়াতে রয়েছে কৃষ্ণ সাগর, মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি সৌধ, নবাব ফয়জুন্নেছা বাড়ি।অন্যদিকে,এই মাটিতে জন্মেছে বহুগুণী মানুষ। যতটুকু যানা যায়, ধর্মীয় প্রভাব এবং সংস্কৃতিক ঐতিহ্য এ দুটি বিষয়কে সমন্বয় করে বরুড়া উপজেলার নামকরণ করা হয়েছে।বরুড়া ১৯৪৮ সালের ২৪ মার্চ থানা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালের ২৪ মার্চ এটি উপজেলায় উন্নিত হয়।উপজেলার আয়তন ২৪২ কিলোমিটার এবং জনসংখ্যা প্রায় ৫লক্ষ। বরুড়া উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা, ১৫টি ইউনিয়ন ও ৩৩৫ টি গ্রাম রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম বরুড়া থানার আওতাধীন।

ads

বরুড়া উপজেলা ঐতিহাসিকভাবে এবং বর্তমান বাস্তবতায় জাতীয় পর্যায়ে যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। বরুড়া উপশহরের সৌন্দর্য বাড়াতে কৃষ্ণ সাগরটিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে তৈরী করে দিঘির চারদিকে হাঁটার জন্য আধুনিক ও মানসম্মত “ওয়াকওয়ে” করার জন্য সরকারের নিকট দাবি জানান বরুড়ার সচেতন নাগরিকগণ।

ad

পাঠকের মতামত