‘বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে অনেক আগেই দেশ উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতো’
নিউজ ডেস্ক: ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে অনেক আগেই বাংলাদেশ উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতো। তবে তাকে শহীদ করে দেশের অগ্রগতি রোধ করা যায়নি, কারণ তার দূরদর্শী কন্যা শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়নের এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।
জাতীয় শোক দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন দূতাবাস ভবনে আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের স্মরণ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভূমিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার ও আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশের অনাবাসী রাষ্ট্রদূত সাঈদা মুনা তাসনিমের সভাপতিত্বে স্মরণ আলোচনাটি অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, যুক্তরাজ্যের ক্ষুদ্র ব্যবসা, গ্রাহক ও শ্রম বাজার বিষয়ক মন্ত্রী এবং লন্ডন বিষয়ক মন্ত্রী পল স্কালি সম্মানিত অতিথি হিসেবে জুম ভিডিও কনফারেন্সিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অনেক সাফল্যের গল্প রয়েছে, বিশেষ করে রয়েছে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দ্রুত বিকাশ ও সমৃদ্ধির আখ্যান।
এসময় ভূমিমন্ত্রী ছোটকালে তার বাবার সঙ্গে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা হবার একটি ঘটনা স্মৃতিচারণ করেন।
সাইফুজ্জামান চৌধুরী আশা প্রকাশ করেন, দু’দেশের মধ্যে উচ্চ-পর্যায়ের সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য ২০২১ সালে কূটনৈতিক সম্পর্কের পঞ্চাশতম বর্ষ উদযাপন করবে।
একাত্তরে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যুক্তরাজ্যের ইতিবাচক ভূমিকার জন্য ভূমিমন্ত্রী কৃতজ্ঞচিত্তে ধন্যবাদ জানান।
এইচ টি ইমাম বঙ্গবন্ধুকে এক অপ্রতিম বিশ্বনেতা হিসেবে অভিহিত করে বলেন, তিনি বিশ্ব পরিমণ্ডলে আমাদের গর্বিত করেছেন। বঙ্গবন্ধু হয়তো তার রূপকল্প বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি, তবে সৌভাগ্যবশত তার কন্যা বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলায় বিনির্মাণের কাজ করছেন।
ব্রিটিশ মন্ত্রী পল স্কালি বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন এবং জাতীয় শোক দিবস পালনে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার অ্যাডওয়ার্ড হিথের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সম্পর্কটি যুক্তরাজ্যের অভ্যন্তরীণ দলীয় রাজনীতিকে অতিক্রম করে লেবার ও কনজারভেটিভ উভয় রাজনৈতিক দলেই সমান গুরুত্ববহন করতো। মাত্র সাড়ে তিন বছরের ক্ষমতায় বঙ্গবন্ধুর দেশ গঠনের অভূতপূর্ব তৎপরতা এবং বিগত দশকে বিশ্ব আর্থসামাজিক-অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী।
যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাঞ্জেলা রায়নার, ব্রিটিশ সংসদ সদস্য, বাংলাদেশের বিষয়ে সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য দূত রুশনারা আলী বিশেষ অতিথি হিসেবে স্মরণ আলোচনা সভায় যোগ দেন।
এছাড়াও বিশিষ্ট সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী, যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের শীর্ষ সংগঠক সুলতান মাহমুদ শরিফ, ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতা সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক, বঙ্গবন্ধুর পরিবারের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও প্রতিবেশী নওয়াজ আহমেদ, বিবিসি বাংলা প্রধান সাবির মুস্তাফা বিশেষ অতিথি হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সভায় অংশ নিয়েছিলেন।
যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড এবং ইইউর বিভিন্ন দেশ থেকে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি স্মরণ সভায় ভিডিও কনফারেন্সিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে যোগ দিয়ে জাতির পিতা ও ১৫ আগস্টে সংঘটিত বিয়োগান্ত ঘটনায় শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
ডেপুটি হাইকমিশনার মুহাম্মদ জুলকার নাইন, প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রশিদ, মিনিস্টার (কনস্যুলার) মো. লুৎফুল হাসান, মিনিস্টার (প্রেস) আশেকুন নবী চৌধুরীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্মরণ সভায় অংশগ্রহণ করেন।