9716

করোনাকাল: অনিশ্চিত সময়

নভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের সুনির্দিষ্ট কোনও ওষুধ এখন পর্যন্ত চিকিৎসকদের হাতে আসেনি, চলছে গবেষণা। মাত্র ছ’মাস বয়সী করোনা ভাইরাস ঘুম কেড়ে নিয়েছে প্রায় সকলের।

যত দিন যাচ্ছে মুষ্টিমেয় কয়েকটি দেশ ছাড়া বাকি সর্বত্র সংক্রমণ বাড়ছে হু হু করে। এখনও পর্যন্ত নির্দিষ্ট কোনও ওষুধ না থাকায় চিকিৎসা যা হচ্ছে সবই উপসর্গভিত্তিক। জ্বর কমানোর জন্য ওষুধ শ্বাসকষ্ট হলে অক্সিজেন। জটিলতা বেড়ে গেলে হিসেব নিকেশ করে পরীক্ষামূলকভাবে বিভিন্ন ওষুধ দেয়া হচ্ছে। কখনও কখনও ভাইরাসটির রোগের এন্টিভাইরাল ফেভিপিরাভির, রেমডিসিভির কখনও এন্টেবায়োটিক।

ads

প্রদাহ মারাত্মক বেড়ে শরীরের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গগুলোর উপর বিরুপ প্রভাব পড়তে শুরু করলে প্রদাহ কমানোর ওষুধ।অথবা এর পাশাপাশি প্রয়োজন অনুসারে কিছু সাপোর্ট দিতে হচ্ছে। যেমন: রোগী নিজ থেকে শ্বাস নিতে না পারলে অক্সিজেন দেয়া ।কিডনি খারাপ হলে ডায়ালাইসিস করা হচ্ছে। আর ক্রমাগত সাপোর্ট পেতে পেতে এক সময় রোগী তার জীবনীশক্তির দৌলতে বেঁচে উঠছেন। এক কথায় বলতে গেলে করোনা ভাইরাসকে অকার্যকর করার কোনও ওষুধ এখন পর্যন্ত নেই।

এমনিতেই মানুষ অসহায়। রোগ হলে কোথায় যাবেন, কী করবেন, কতটা চিকিৎসা হবে তা নিয়ে আতঙ্কিত। তার উপর যে ভাবে অজানা ওষুধের সাহায্যে তার মোকাবিলা করার চেষ্টা চলছে তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। নতুন ওষুধ নিয়ে অবশ্যই পরীক্ষা নিরীক্ষা হবে। তবে তা হবে গবেষণাগারে। মানুষের উপর নয়। যত দিন না বিজ্ঞান নিশ্চিত করে সেই ওষুধের কার্যকারিতা ও নিরাপত্তার কথা জানাবে তত দিন অপেক্ষা করতে হবে।

ads

মূল প্রতিরোধ মাস্ক, সাবান, স্যানিটাইজারে ভরসা করে।বিজ্ঞান সম্মতভাব আপাতত এই সংক্রমণ ঠেকানোর অন্যতম হাতিয়ার হল সামাজিক দূরত্ব। দু’জন মানুষের মধ্যে কম করে ৬ ফুট দূরত্ব থাকা দরকার।

কাগজে কলমে সীমিত পরিসরে লকডাউন থাকলেও দোকান হাটবাজার শপিং মল হোটেল রেঁস্তোরা সব খুলে গিয়েছে। যার কারণে স্বাস্হ্য বিধি সমূহ মেনে চলা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আর যে কোনও বিধি মানার ব্যাপারে আমাদের সহজাত উদাসীনতা সর্বজনবিদিত। আগামী কিছু দিনে সংক্রমণ মারাত্মক ভাবে বেড়ে যাবে তা নিয়ে সন্দেহের কোনও অবকাশ নেই। আমরা এখন যে পর্যায়ে এসে দাড়িয়েছি তাতে সবাই যদি দলে দলে অসুস্থ হতে থাকি, হাসপাতালে বেড পাওয়া যাবে কী? রোগের প্রাথমিক অবস্থায় বাড়িতে আলাদা ভাবে থাকা যায়। কিন্তু ক’জন মানুষের আলাদা ভাবে থাকার মতো পরিস্থিতি ও সচেতনতা আছে?

আমরা কমবেশী সবাই জানি এ রোগ মারাত্মক ছোঁয়াচে।কোভিড ১৯ নিয়ণ্ত্রণে ওষুধ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের প্রতিরোধ ব্যবস্থা (নন ফার্মাকোলজিক্যাল ইন্টারভেনশন) এবং সংক্রমণ না ছড়ানোর উপায়গুলো বেশ পুরনো এবং স্বীকৃত।এসব বিজ্ঞান সম্মত কর্মকৌশল সঠিকভাবেই প্রয়োগ করা গেলে রোগীর দৈনিক ক্রম উর্ধগতি ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব।

কোভিড ১৯ বৈশ্বিক স্বাস্থ্যগত সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংকট। প্রতিটি দেশ এটি নিয়ণ্ত্রণে জ্ঞানের আলোকে অগ্রসরমান। কোভিড ১৯ মহামারি নিয়ণ্ত্রণে ওষুধ বিহীন জনস্বাস্থ্য উপদেশ দৃঢভাবে অনুসরন, ব্যাপক পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্তকরণ, আইসোলেশন, কন্টাক্ট ট্রেসিং ও
সংগনিরোধ সুচারুরুপে পালনের জন্য কমিউনিটি সম্পৃক্ততার বিকল্প নেই।

ad

পাঠকের মতামত