6450

কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের সম্পূরক বিধিমালা জারি, ভোটার ১০৯৫ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক: আর মাত্র ৯দিন পরেই জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট চেয়ে, আইনজীবীদের ও এলাকাগত বিভিন্ন সংগঠনের সাথে মতবিনিময়ের মাধ্যমে ভোট চেয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এরইমধ্যে নির্বাচন উপলক্ষে সম্পূরক বিধিমালা জারি করেছে নির্বাচন পরিচালনা সাব কমিটি। জেলা আইনজীবী সমিতির নোটিশ বোর্ডে টানানো ওই বিধিমালায় জানানো হয়েছে যে, কোন প্রার্থী রাত দশটার পর থেকে সকাল নয়টা পর্যন্ত কোনো ভোটারের বাড়িতে যাওয়া, থাকা কিংবা রাত দশটার পর থেকে সকাল ৯ টা পর্যন্ত মোবাইলে কল বা মেসেজ দিয়ে ভোট চাইতে পারবেন না। যদি কোন প্রার্থী এ বিধিমালা লঙ্ঘন করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে অর্থদণ্ডসহ বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আইনজীবী সমিতি সূত্রে জানা যায়, জেলা আইনজীবী সমিতির মোট সদস্য সংখ্যা ১৩০৯ জন। এরমধ্যে ভোটার ১০৯৫ জন। নির্বাচন পরিচালনা সাব কমিটির সদস্য শরীফ আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, অতীতের ন্যায় এবছর দুটি প্যানেল ভাগ হয়ে ১৭ টি পদের বিপরীতে মোট ৩৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। ২৫ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিন থাকলেও কোন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করেননি। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করেছে। ১২ই মার্চ সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে দুপুর সোয়া একটা থেকে দুইটা পর্যন্ত নামাজ ও মধ্যাহ্নভোজের জন্য বিরতি দেওয়া হবে। রাত থেকে শুরু হবে ভোট গণনা। ভোট গণনা শেষে পরদিন শুক্রবার ফলাফল ঘোষণা করা হবে।

নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ (সাদা দল) এবং জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদ (নীল দল) প্রতিদ্বন্দিতা করবেন।
সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের (সাদা দল) প্রার্থীরা হলেন, সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি আবদুল মমিন ফেরদৌস, সহ-সভাপতি পদে মোঃ শাহ আলম ও মোঃ জহিরুল হক, সাধারণ সম্পাদক পদে মোঃ হারুনর রশীদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে খন্দকার মারুফ, ট্রেজারার পদে মোঃ আব্দুল কাদের , লাইব্রেরী সেক্রেটারি পদে আনোয়ারুল হক (দীপু), এনরোলম্যান্ট অব এডভোকেটস্ এন্ড ফার্ণিচার সেক্রেটারি পদে নবেন্দু বিকাশ সর্বাধিকারী (দোলন), সহকারি এনরোলম্যান্ট অব এডভোকেটস্ এন্ড ফার্ণিচার সেক্রেটারি পদে তাহমিনা মুজাহিদ ও রিক্রিয়েশান, কালচারাল এফেয়ার্স এন্ড সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সেক্রেটারি পদে মোঃ জামিল আহমেদ (রাতুল) এবং সদস্য পদে আমির আফরোজ খান মৌসুমী, মোঃ দিদারুল হক চৌধুরী, হাসিনা বেগম, মোঃ কামাল হোসাইন (র্মিজা কামাল), কৌশিক সরকার, মোহাম্মদ আবু কাউছার ও সাইফুল ইসলাম।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদের (নীল দল) প্রার্থীরা হলেন, সভাপতি পদে ক্রিমিনাল বারের সাবেক সেক্রেটারি, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক এজিএস ও ২০১৪-২০১৫ কার্যকালের জেনারেল সেক্রেটারি মোঃ শরীফুল ইসলাম, সহ-সভাপতি-১ পদে মোঃ আব্দুল বারী, সহ-সভাপতি-২ পদে মো: সুলতান আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক পদে গতবছরের প্রার্থী মোঃ সামছুর রহমান ফারুক, সাধারণ সম্পাদক পদে মোঃ তৌহিদুর রহমান, ট্রেজারার পদে মোঃ জালাল উদ্দিন, লাইব্রেরি সম্পাদক পদে তরিকুল ইসলাম মজুমদার তারেক, এনরোলমেন্ট সেক্রেটারি পদে মোহাম্মদ এনামুল হক সরকার, সহ-এনরোলমেন্ট সেক্রেটারি পদে মোহাম্মদ ইয়াসিন, রেক্রিয়েশন সেক্রেটারি পদে মোঃ বিল্লাল হোসেন ভূঁইয়া, সদস্য পদে মো: শফি উল্লাহ, ফারহানা সেলিম, মোসাম্মৎ মাহমুদা খানম শিল্পী, মো: জামাল হোসেন, মো: লুৎফর রহমান রাজন, মোঃ মনির হোসেন পাটোয়ারী, মোহাম্মদ আবু আহমেদ প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন।

ads

সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের সভাপতি প্রার্থী আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক আইনমন্ত্রী এডভোকেট আব্দুল মতিন খসরুর ছোট ভাই আব্দুল মমিন ফেরদৌস গত নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয় লাভ করেন। মনোনয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি এবছরও সভাপতি পদে নির্বাচন করছেন। অন্যদিকে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মোঃ হারুনর রশীদও মনোনয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পুনরায় সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করছেন। তারা দুজনেই জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। সভাপতি প্রার্থী আব্দুল মমিন ফেরদৌস ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হারুনর রশীদ বলেন, জেলা আইনজীবী সমিতি ও সাধারণ আইনজীবীদের জন্য আমরা বিগত এক বছর নিরলসভাবে কাজ করেছি। আইনজীবী সমিতির নয়তলা ভবনের প্লাস্টার কাজ সম্পন্ন করেছি। চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে আইনজীবীদের বসার জন্য জায়গা আদায় করেছি। নতুন আইনজীবীদের বসার জন্য ২০টি টেবিল ও ২০০ চেয়ার নির্মাণ করেছি। নিয়মিত কল্যাণ তহবিল থেকে ১ হাজার ৯৫জন সদস্যকে ৪৫ হাজার ১০০ টাকা করে প্রদান করেছি। তাছাড়া জেলা আইনজীবী সমিতির জন্য বায়নাকৃত ১২ শতক জায়গা আমাদের কার্যকালে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করে সাফ কবলা দলিল হয়েছে। ক্রয়কৃত ওই ১২ শতক জায়গার বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ এবং ওই জায়গার ওপর অত্যাধুনিক সুবিধা সম্বলিত একটি বিশাল মিলনায়তন সহ ১০ তলা ভবনের ডিজাইন ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। আমরা নির্বাচিত হতে পারলে অতি দ্রুত ওই ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করব। জেলা আইনজীবী সমিতির হিসাব ব্যবস্থায় যে সনাতনী পদ্ধতি চলছে তা পরিবর্তন করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আরো নিশ্চিত করার লক্ষ্যে হিসাব ব্যবস্থা‌ ডিজিটালাইজড করা হবে। তাছাড়া সমিতির আয় অনুসারে কল্যাণ তহবিলের টাকা সুষম বন্টন ও বৃদ্ধি নিশ্চিত করা হবে।
এদিকে, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদ থেকে সভাপতি প্রার্থী মোঃ শরীফুল ইসলাম বলেন, আমি নির্বাচিত হতে পারলে সাধারণ আইনজীবীদের কল্যাণে আবারো কাজ করার সর্বাত্মক চেষ্টা করব। জেনারেল সেক্রেটারি থাকাকালীন সময়ে জেলা বারের ঐতিহ্য ও সুনাম অক্ষুন্ন রেখে কাজ করেছি।‌ আদালত প্রাঙ্গণ থেকে টাউট বাটপার নির্মূলে প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করেছি। আমি সাধারণ সম্পাদক হওয়ার আগে কোন আইনজীবী মারা গেলে তাৎক্ষণিক ওই আইনজীবীর পরিবারকে ২০ হাজার টাকা দেয়া হতো এবং মৃত্যু দাবি পরিশোধ করার সময় সে ২০ হাজার টাকা কেটে রাখা হতো। আমি নির্বাচিত হওয়ার পর ২০ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয় এবং মৃত্যুদাবির পরিশোধ কালীন সময়ে ওই টাকা কর্তন না করার নিয়ম চালু করা হয়। অপরদিকে কোন আইনজীবী অসুস্থ হলে জেলা বার থেকে ১০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়ার নিয়ম ছিল। আমি সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর ১০ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকায় উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছিলাম। এখন আইনজীবীরা অসুস্থ হলে ওই ৩০ হাজার টাকাই অনুদান পেয়ে থাকে। তাছাড়া কোন আইনজীবী মারা গেলে আদালতে বিচারকার্য সারাদিন বন্ধ থাকতো। আমি সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর মামলাজট কমানোর লক্ষ্যে পূর্ণদিবস থেকে অর্ধ দিবস করতে সক্ষম হই। তিনি আরো বলেন, আমি সভাপতি নির্বাচিত হতে পারলে জেলা বারের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হবে এবং আইনজীবীদের স্বার্থ রক্ষার্থে নিজেকে উৎসর্গ করবো।

ads
ad

পাঠকের মতামত