বন্ডি হামলার পর অস্ত্র কেনাবেচা কর্মসূচি ঘোষণা অস্ট্রেলিয়ার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বন্ডি বিচে প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার পর দেশে অস্ত্রের সংখ্যা কমাতে নতুন করে গান বাইব্যাক (অস্ত্র পুনঃক্রয়) কর্মসূচি ঘোষণা করেছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। এটি ১৯৯৬ সালের পোর্ট আর্থার হত্যাকাণ্ডের পর চালু হওয়া কর্মসূচির পর সবচেয়ে বড় উদ্যোগ বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
রোববার অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে পরিচিত সৈকত বন্ডি বিচে একটি ইহুদি উৎসবে বন্দুকধারীদের হামলায় ১৫ জন নিহত এবং ডজনখানেক মানুষ আহত হন। পুলিশ জানায়, হামলাকারীরা ‘ইসলামিক স্টেটের আদর্শে’ অনুপ্রাণিত ছিল। ঘটনাটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে সন্ত্রাসী হামলা হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে।
পুলিশের অভিযোগ, হামলাটি একটি পিতা–পুত্র জুটি চালায়। ২৪ বছর বয়সি নাভিদ আকরামকে ১৫ জন হত্যাসহ মোট ৫৯টি অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগও রয়েছে। তার বাবা সাজিদ হামলার সময় নিহত হন।
হামলার পরদিন ফেডারেল সরকার ও সব রাজ্য–টেরিটরির প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত ন্যাশনাল ক্যাবিনেট অস্ত্র আইন কঠোর করার বিষয়ে একমত হয়। শুক্রবার গণমাধ্যমকে প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ জানান, বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় ৪০ লাখের বেশি আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে—যা পোর্ট আর্থার হত্যাকাণ্ডের সময়ের তুলনায় বেশি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জানি, অভিযুক্তদের একজন বৈধ অস্ত্র লাইসেন্সধারী ছিলেন এবং শহরতলিতে বসবাস করেও তার কাছে ছয়টি বন্দুক ছিল। এমন পরিস্থিতিতে এত অস্ত্র রাখার কোনো যুক্তি নেই।
অস্ট্রেলিয়ান ফেডারেল পুলিশ কমিশনার ক্রিসি ব্যারেট বলেন, অস্ত্রের সংখ্যা কমাতে হলে বাইব্যাক কর্মসূচি সেই উদ্যোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
ঘোষিত কর্মসূচির আওতায় অপ্রয়োজনীয়, নতুন করে নিষিদ্ধ ও অবৈধ অস্ত্র সরকার কিনে নেবে। ব্যয় ফেডারেল সরকার ও রাজ্য–টেরিটরি সরকারগুলো সমানভাবে (৫০–৫০) বহন করবে। সরকারের ধারণা, এতে লক্ষাধিক অস্ত্র সংগ্রহ করে ধ্বংস করা হবে।
এছাড়া ন্যাশনাল ক্যাবিনেট যেসব সিদ্ধান্তে একমত হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে—
একজন ব্যক্তির কাছে রাখা অস্ত্রের সংখ্যা সীমিত করা
খোলা-মেয়াদের লাইসেন্স ও বৈধ অস্ত্রের ধরন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ
অস্ত্র লাইসেন্স পেতে অস্ট্রেলীয় নাগরিকত্ব বাধ্যতামূলক করা
জাতীয় আগ্নেয়াস্ত্র রেজিস্টার দ্রুত বাস্তবায়ন
অস্ত্র নিয়ন্ত্রকদের জন্য অপরাধসংক্রান্ত গোয়েন্দা তথ্যের প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি
এদিকে শুক্রবার নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ জানায়, ‘চরমপন্থি ইসলামী আদর্শে’ বিশ্বাসী সন্দেহে সিডনিতে আটক সাতজনকে মুক্তি দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে; তবে তারা নজরদারিতে থাকবেন। বৃহস্পতিবার লিভারপুল এলাকায় নাটকীয় অভিযানে ভিক্টোরিয়া থেকে আসা ওই ব্যক্তিদের আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে একটি ছুরি উদ্ধার হলেও কোনো আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া যায়নি।
এনএসডব্লিউ পুলিশ কমিশনার ম্যাল ল্যানিয়ন বলেন, আটক ব্যক্তিদের সঙ্গে বন্ডি হামলার নিশ্চিত কোনো যোগসূত্র নেই। তবে বন্ডি বিচসহ কয়েকটি স্থান তারা পরিদর্শনের পরিকল্পনা করছিল। তিনি বলেন, নির্দিষ্ট হুমকির প্রকৃতি পরিষ্কার না হলেও সম্ভাব্য সহিংসতার ঝুঁকি এতটাই ছিল যে আমরা তা উপেক্ষা করতে পারিনি।









