61878

ইউক্রেনকে ঋণ দিতে ইউরোপীয় নেতাদের বৈঠক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেনকে জরুরি ভিত্তিতে বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা করতে বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বৈঠকে বসবেন ইউরোপীয় নেতারা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) দুর্বল বলে মন্তব্য করেছেন, তখন এই বৈঠকটি জোটের শক্তির একটি বড় পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে নিজেদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে ইইউ। তাই ইউক্রেনকে আর্থিকভাবে সহায়তা দিয়ে লড়াই সক্ষমতা জারি রাখা তাদের অন্যতম উদ্দেশ্য।

ads

ইউরোপীয় কমিশন ইতোমধ্যে প্রস্তাব করেছে, বেলজিয়ামে জব্দ রুশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পদকে জামানত হিসেবে ব্যবহার করে কিয়েভকে বিশাল ঋণ দেওয়া হোক। তবে বেলজিয়াম আইনি নিশ্চয়তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। অন্যদিকে ইতালিসহ আরও কিছু দেশ এই পদ্ধতিতে সংশয় প্রকাশ করেছে।

বৈঠকের বিষয়ে পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক বলেন, এখন আমাদের সামনে সহজ সিদ্ধান্ত—আজ ঋণ না দিলে আগামীকাল রক্ত ঝরা অব্যাহত থাকবে। শুধু ইউক্রেন না, ইউরোপের কথাও বলছি। সিদ্ধান্ত আমাদেরই।

ads

ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লিয়েন বলেন, পরবর্তী দুই বছরের জন্য ইউক্রেনের অর্থায়ন নিয়ে সমঝোতা না পেয়ে তিনি বৈঠক ছাড়বেন না।

এদিকে, রুশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, নিষিদ্ধ সম্পদ ব্যবহারের পরিকল্পনা অবৈধ এবং তারা নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় সব ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করবে। তারা চলতি সপ্তাহে মস্কোর আদালতে ইউরোক্লিয়ারের বিরুদ্ধে ২৩ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেছে।

বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী বার্ট দে ভেভার জানান, তিনি এখনও আইনি ঝুঁকিসংক্রান্ত উদ্বেগ দূর করতে পারে এমন নিশ্চয়তা পাননি এবং অর্থায়ন পরিকল্পনা বৈঠকের মাঝেই বদলাতে পারে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সরাসরি শীর্ষ বৈঠকে যোগ দেবেন। আগে ধারণা করা হয়েছিল তিনি ভিডিও কলে অংশ নেবেন।

ইইউ চাইলে বাজেটকে জামানত রেখে ঋণ নিতে পারে এবং তা ইউক্রেনকে ধার দিতে পারে। কিন্তু এতে ২৭ দেশের সর্বসম্মতি দরকার। তবে রুশপন্থি হাঙ্গেরি ইতোমধ্যে ভেটোর হুমকি দিয়েছে।

আরেকটি পথ হলো—ইচ্ছে থাকা দেশগুলো আলাদাভাবে বাজার থেকে ঋণ তুলে ইউক্রেনকে দিক। কিন্তু এতে জাতীয় ঋণ ও ঘাটতি বাড়বে এবং দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের নিশ্চয়তা পাওয়া যাবে না।

এ কারণে কূটনীতিকরা বলছেন, রুশ সম্পদ ব্যবহারই কার্যত “একমাত্র চাল”—কারণ এতে জাতীয় ঋণ বৃদ্ধি ছাড়াই ইউক্রেন বড় অঙ্ক পাবে।

কিন্তু এটি করতে হলে নেতাদের আগে বেলজিয়ামকে আশ্বস্ত করতে হবে, যেন রাশিয়া আন্তর্জাতিক আদালতে ক্ষতিপূরণ জিতলে বেলজিয়াম যাতে একা দায়ে না পড়ে।

এক ইইউ কূটনীতিবিদ বলেন, এটি (ইউক্রেনকে সহায়তায় ব্যর্থ হলে) ইউরোপের বিশ্বাসযোগ্যতার জন্য বড় আঘাত হবে এবং প্রমাণ করবে আমরা ট্রাম্পের ধারণার মতোই দুর্বল।

আরেক জ্যেষ্ঠ কূটনীতিবিদ বলেন, এ বৈঠক এমন নয়, যেখানে আমরা কোনও সমাধান ছাড়া বাড়ি ফিরতে পারি। তাই শুক্রবার সকালে একটি সমাধান থাকবে।

সূত্র: রয়টার্স

ad

পাঠকের মতামত