61521

ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে বৈঠকে লন্ডনে জেলেনস্কি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধান ও শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিতে লন্ডনে পৌঁছেছেন প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ইউক্রেন সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনাটি এখনো পড়েই দেখেননি জেলেনস্কি—যা নিয়ে ট্রাম্প প্রকাশ্যে হতাশা ব্যক্ত করেন।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ফ্লোরিডায় মার্কিন ও ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদের তিন দিনের আলোচনার পরই ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে লন্ডনে এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আলোচনায় জেলেনস্কির প্রধান প্রতিনিধিরা যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি খসড়ায় ক্রেমলিনের দাবি মানা হয়েছে বলে মনে হওয়ায় কিছু সংশোধনের ওপর জোর দিয়েছেন।

ads

মায়ামিতে আলোচনার সময় মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ ও জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে নিজের আলোচকদের যোগদান প্রসঙ্গে জেলেনস্কি বলেন, আলোচনাটি ছিল “অত্যন্ত বাস্তবসম্মত এবং গঠনমূলক।” তিনি টেলিগ্রামে লেখেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভবিষ্যৎ আলোচনা কোন ফরম্যাটে চলবে এবং পরবর্তী পদক্ষেপগুলো কী হবে—এ বিষয়ে উভয়পক্ষ একমত হয়েছে। পাশাপাশি তিনি পুনরায় জানান, প্রকৃত শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইউক্রেন সততার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাবে।

এদিকে ট্রাম্প সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, শান্তি প্রস্তাব জেলেনস্কি এখনও মনোযোগ দিয়ে পড়েননি, যা তাকে হতাশ করেছে। মার্কিন পরিকল্পনার কিছু অংশ মস্কো প্রত্যাখ্যান করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এর আগে উইটকফ ও কুশনার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ক্রেমলিনে বৈঠক করেন, যেখানে ২২ দফায় সংশোধিত মার্কিন পরিকল্পনার বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়।

ads

লন্ডনে বৈঠকের আগে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ রাশিয়াকে কড়া সমালোচনা করে বলেন, ইউক্রেনকে স্থায়ী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। তার দাবি, এই নিশ্চয়তা ছাড়া কোনো টেকসই ও শক্তিশালী শান্তি সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, রাশিয়াকে শান্তির পথে বাধ্য করতে আন্তর্জাতিক চাপ জারি থাকতে হবে।

লন্ডনে জেলেনস্কির সঙ্গে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী, জার্মান চ্যান্সেলর ও ফরাসি প্রেসিডেন্টের ত্রিপক্ষীয় আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। তবে ইউক্রেন কী ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা পেতে পারে—এ নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা বজায় আছে। এরই মধ্যে ট্রাম্প ক্ষমতায় ফিরে ইউক্রেনের প্রতি কঠোর অবস্থান নিয়েছেন এবং বারবার জেলেনস্কিকে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের যথাযথ মূল্যায়ন না করার অভিযোগ করেছেন।

অন্যদিকে, ট্রাম্প নিজেও হতাশ যে পুতিনকে যুদ্ধ বন্ধে রাজি করানোর তার উদ্যোগ—যেমন আলাস্কায় সম্ভাব্য শীর্ষ সম্মেলন—অকার্যকর হয়েছে। তিনি সম্প্রতি রাশিয়ার তেল কোম্পানিগুলোর ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছেন। একই দিনে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার ওয়াশিংটন সফরে যাচ্ছেন, যেখানে তিনি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে ইউক্রেন ইস্যুতে আলোচনা করবেন।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, কুপারের সফর যুক্তরাজ্য–মার্কিন অংশীদারত্বকে আরও জোরদার করবে এবং ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় উভয় দেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করবে। তবে আলোচনার মাঝেও মস্কোর হামলা থামেনি। রোববার রাত থেকে সোমবার পর্যন্ত রুশ বাহিনীর আঘাতে কমপক্ষে ৯ জন ইউক্রেনীয় আহত হয়েছেন বলে কিয়েভ জানিয়েছে। তথ্যসূত্র : রয়টার্স

ad

পাঠকের মতামত