রোহিঙ্গাদের জরুরি সহায়তায় ২৫ লাখ ইউরো দিলো ইতালি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইতালি আজ বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবনরক্ষকারী সহায়তা ও সুরক্ষার জন্য ২৫ লাখ ইউরো অনুদান দিয়েছে। যা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য দেশটির প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) ইউএনএইচসিআর এই তথ্য জানায়।
নতুন এই অর্থসহায়তা দিয়েছে ইতালির পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মন্ত্রণালয় এবং এর অভিবাসন নীতিবিষয়ক মহাপরিচালক দফতর। এই সহায়তা কমিউনিটিভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ সুরক্ষা কার্যক্রমকে টেকসই রাখতে, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও শিশু সুরক্ষা জোরদার করতে এবং নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র প্রদানের মাধ্যমে শরণার্থীদের অধিকার সংরক্ষণে সহায়তা করবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) প্রতিনিধি ইভো ফ্রেইসেন বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় ইতালি একটি দৃঢ় অংশীদার হিসেবে পাশে রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইতালির জনগণের এই উদার অনুদান রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জরুরি চাহিদা মেটাতে এবং বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবিরে তাদের জীবনযাপনে নানা ধরনের সংকট ও ঝুঁকি মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ সুরক্ষা দেবে। ক্রমবর্ধমান মানবিক চাপের এই সময়ে কমিউনিটিভিত্তিক সুরক্ষা সেবা, মর্যাদা ও আত্মনির্ভরতা রক্ষায় অপরিহার্য ভূমিকা রাখছে।’
বাংলাদেশে ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো বলেন, ‘এই ভয়াবহ মানবিক সংকটের শুরু থেকেই তা মোকাবিলায় পরিচালিত যৌথ সাড়াদান পরিকল্পনার আওতায় ইতালি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করছে। যা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মর্যাদাপূর্ণ জীবন নিশ্চিত এবং ভবিষ্যতের জন্য আশাবাদী করে তুলতে সাহায্য করে। এই পরিপ্রেক্ষিতে, আমরা বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানাই— দেশটি সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়ে এই দীর্ঘমেয়াদি সংকটের একটি সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।’
রোহিঙ্গা সংকট বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘায়িত শরণার্থী সংকটগুলোর একটি। যা ইতোমধ্যে ৮ বছর পার করে ফেলেছে। প্রায় ১১ লাখ ৬০ হাজার শরণার্থী বর্তমানে কক্সবাজার ও ভাসানচরের ঘনবসতিপূর্ণ ক্যাম্পে বাস করছেন। যেখানে তারা খাদ্য, বাসস্থান, বিশুদ্ধ পানি, স্বাস্থ্যসেবা ও অন্যান্য মৌলিক চাহিদার জন্য প্রায় সম্পূর্ণভাবে মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। তাদের মধ্যে আনুমানিক ১ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা ২০২৪ সালের শুরুর দিক থেকে রাখাইন রাজ্যে চলমান সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছেন; যা বাংলাদেশে মানবিক সহায়তার প্রয়োজনকে আরও বৃদ্ধি করেছে।
ইতালির অর্থ সহায়তা এমন এক সময়ে এলো, যখন বিশ্বব্যাপী মানবিক সহায়তা ক্রমাগত কমছে। তাই কোন চাহিদা রেখে কোন চাহিদা পূরণ করা হবে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া মানবিক সংস্থাগুলোর জন্য অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে শরণার্থীদের স্বাস্থ্য, কল্যাণ ও আত্মনির্ভরশীলতার ক্ষেত্রে অর্জিত সাফল্য ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।









