59844

জাপান-ভারতের অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে অঙ্গীকার মোদি–ইশিবার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে আজ শুক্রবার টোকিও এসে পৌঁছেছেন। স্থানীয় সময় বিকেলে তিনি জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইশিবা শিগেরুর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এরপর বৈঠক শেষে তাঁরা কর্ম–পরিচালনা নৈশভোজে যোগ দেন।

এর আগে দিনের প্রথমার্ধে জাপান-ভারত অর্থনৈতিক ফোরাম আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দুই প্রধানমন্ত্রীর প্রথম সাক্ষাৎ হয়। দুজনই সেখানে যৌথ মুখ্য বক্তা হিসেবে ভাষণ দেন।

ads

ভাষণে ইশিবা বলেন, জাপান-ভারত সম্পর্ক জোরদারের বিষয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনার অপেক্ষায় রয়েছেন।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অগ্রসর প্রযুক্তি ও ভারতের চমৎকার প্রতিভার মিলন ঘটানোর মধ্য দিয়ে দুই দেশের অর্থনীতি নাটকীয়ভাবে সম্প্রসারিত হতে পারে। দুই দেশ মিলিতভাবে সরবরাহ–শৃঙ্খল তৈরি করা অব্যাহত রেখেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), সেমিকন্ডাক্টর তৈরি, মহাকাশ গবেষণা এবং পরিচ্ছন্ন জ্বালানি খাতেও জাপান ও ভারতের মধ্যে সহযোগিতা বজায় আছে। ভবিষ্যতে তা আরও জোরদার হবে।’

ads

ভাষণে মোদি তাঁর দেশে জাপানের বিভিন্ন কোম্পানিকে আরও বেশি বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বিদেশি কোম্পানি আকৃষ্ট করতে আমার সরকার কর সংস্কার ও নিয়ন্ত্রণ শিথিলের পদক্ষেপ বাস্তবায়ন অব্যাহত রেখেছে। জাপানকে প্রযুক্তি কেন্দ্র (পাওয়ার হাউস) এবং ভারতকে প্রতিভার কেন্দ্র আখ্যায়িত করে দুই শক্তি সম্মিলিতভাবে চলতি শতাব্দীর প্রযুক্তিবিপ্লবকে এগিয়ে নেবে।’

জাপান-ভারত অর্থনৈতিক ফোরামের অনুষ্ঠানের পর বিকেলে ইশিবা ও মোদির মধ্যে শীর্ষ বৈঠকে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হয়। বৈঠকের শেষে কর্ম-পরিচালনা নৈশভোজে যোগ দেওয়ার আগে ইশিবা ও মোদি আগামী পাঁচ বছরে ভারতে জাপানের বিনিয়োগ ১০ ট্রিলিয়ন ইয়েন বা ৬ হাজার ৮০০ কোটি ডলারে উন্নীত করার রূপরেখা উন্মোচন করেন। এটাকে তাঁরা ‘যৌথ দূরদৃষ্টি’ রূপরেখা বলে উল্লেখ করেন।

এই রূপরেখায় বলা হয়, আগামী পাঁচ বছরে দুই দেশের মধ্যে পাঁচ লাখ কর্মী বিনিময় করা হবে। ২০০৮ সালে গৃহীত জাপান-ভারত যৌথ নিরাপত্তা সহযোগিতা হালনাগাদ করা এবং দুই দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মধ্যে আয়োজিত মহড়া সম্প্রসারিত করাও এই রূপরেখার অন্তর্ভুক্ত।

ভারত থেকে যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি করা পণ্যে অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। জাপানের ওপরও অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। অর্থাৎ দুই দেশ ওয়াশিংটনের শুল্ক–হামলার মুখে রয়েছে। তাই ইশিবা-মোদির শীর্ষ বৈঠকের দিকে অনেকের নজর ছিল।

আগামীকাল শনিবার ইশিবা ও মোদি শিনকানসেন বুলেট ট্রেনে চড়ে জাপানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জেলা মিইয়াগি সফর করবেন। ভারত জাপানের শিনকানশেন দ্রুতগতির রেলসেবা প্রযুক্তির অন্যতম প্রধান ক্রেতা। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী সেখানে টোকিও ইলেকট্রন কোম্পানির প্রধান একটি সেমিকন্ডাক্টর তৈরির কারখানা পরিদর্শন করবেন।

বিশ্লেষকদের অনেকে দুই প্রধানমন্ত্রীর মিইয়াগি সফরকে ভারতে সেমিকন্ডাক্টর কারখানা নির্মাণের সম্ভাবনা যাচাইয়ের পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।

দুই দিনের সফর শেষে মোদি সেখান থেকে চীন সফরে যাবেন। সেখানে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে তাঁর যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।

ad

পাঠকের মতামত