
ল্যারি ফিঙ্ক: যিনি চাইলেই কিনতে পারেন অর্ধেক পৃথিবী!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তিটি কে? কোনো দেশের প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রী? সম্ভবত উত্তরটা আপনাকে অবাক করবে। তার নাম ল্যারি ফিঙ্ক। তিনি কোনো দেশের শাসক নন, কিন্তু তার হাতে যে পরিমাণ অর্থ নিয়ন্ত্রিত হয়, তা বিশ্বের অনেক বড় দেশের অর্থনীতিকেও হার মানায়।
ল্যারি ফিঙ্ক হলেন ব্ল্যাকরক (BlackRock) নামক একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান। এই প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ১০ ট্রিলিয়ন (১০ লক্ষ কোটি) ডলারের সম্পদ পরিচালনা করে! সহজ কথায়, চাইলেই অর্ধেক পৃথিবী কিনে নিতে পারেন এই ভদ্রলোক। বিশ্বের বড় বড় সব কোম্পানি, যেমন, অ্যাপল থেকে শুরু করে অ্যামাজন পর্যন্ত তাদের বিনিয়োগ রয়েছে। আর এই বিশাল সাম্রাজ্যের চালকের আসনে বসে আছেন ল্যারি।
তবে ল্যারির শুরুটা এমন ছিল না। কর্মজীবনের শুরুতে একটি ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকে কাজ করার সময় তার একটি ভুল সিদ্ধান্তে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার লোকসান হয়। এই বিরাট ধাক্কা তাকে চাকরি থেকে ছাঁটাই করে দেয়, কিন্তু শিখিয়ে দেয় জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষাটি, ঝুঁকি সামলানো।
আর জীবনের প্রতি পদে ফিঙ্ক এই শিক্ষাকে মেনে চলেছেন পবিত্র কোনো বাণী হিসেবে। সেই শিক্ষা থেকেই ১৯৮৮ সালে তিনি তার বন্ধুদের সাথে মিলে গড়ে তোলেন ব্ল্যাকরক। তাদের মূলমন্ত্র ছিল একটাই, অন্যের টাকা বিনিয়োগ করার আগে তার ঝুঁকিটা বোঝা এবং নিয়ন্ত্রণ করা। এই বিশ্বাসকেই পুঁজি করে ব্ল্যাকরক আজ বিশ্বের সবচেয়ে বড় সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
ল্যারি ফিঙ্ক শুধু টাকা লগ্নি করেই থেমে থাকেননি। প্রতি বছর তিনি বিশ্বের বড় বড় কোম্পানির প্রধানদের কাছে একটি চিঠি লেখেন। সেই চিঠিতে তিনি শুধু মুনাফার কথা বলেন না, বরং পরিবেশ রক্ষা এবং সমাজের প্রতি কোম্পানির দায়িত্বের কথাও স্মরণ করিয়ে দেন। তার একটি চিঠিই যথেষ্ট বিশ্বের তাবড় তাবড় কোম্পানির নীতি বদলে দেওয়ার জন্য। একারণে অনেকেই তাকে ‘ওয়াল স্ট্রিটের বিবেক’ বলেও ডাকেন।
ধীরে ধীরে সম্পদ দিয়ে সারা পৃথিবীকে গ্রাস করছে ব্ল্যাকরক। হয়ে উঠছে অসীম শক্তিশালী আর অপরাজেয় এক শক্তি। আর এমন সর্বগ্রাসী শক্তিই জন্ম দিচ্ছে শঙ্কার। কারণ, অনেকেই মনে করেন, একজন ব্যক্তির হাতে এত বেশি অর্থনৈতিক ক্ষমতা থাকাটা গোটা বিশ্বের জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ।