49081

কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় বাংলাদেশ দিবস উদযাপন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: প্রতি বছরের মতো এবারও কলকাতা ৪৭তম আন্তর্জাতিক বইমেলার তৃতীয় দিনে বাংলাদেশ দিবস উদযাপন করা হয়েছে। শনিবার (২০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বইমেলা প্রাঙ্গনের এসবিআই অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ দিবস উপলক্ষে আয়োজন করা হয় বিশেষ সেমিনার সংযোগের সেতুবন্ধন, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও শিল্পের ভূমিকা।

বাংলাদেশ দিবস উপলক্ষে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমেদ, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা, কলকাতাস্থ বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস, বাংলাদেশে পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম, বাংলাদেশের সংঙ্গীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, কবি ও সাহিত্যিক সুবোধ সরকার, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক চিন্ময় গুহ, বইমেলার আয়োজক সংস্থা পাবলিশার্স এন্ড বুকসেলার্স গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়, সাধারণ সম্পাদক শুধাংশু শেখর দে, রামেন্দ্র মজুমদারসহ বিশিষ্টজনরা।

ads

বাংলাদেশ দিবস উপলক্ষে নূরুল হুদা বলেন, বাংলা ভাষায় যত গ্রন্থ আছে তা অন্য ভাষায় আছে কি না আমার জানা নেই। আমাদের একটা বিশ্ব ভাষা প্রয়োজন, যেখানে এই ভাষা সেই স্থান নিতে চলেছে বলে মনে হয়। সেখানেই বই মেলার স্বার্থকতা।

খলিল আহমদ বলেন, ঢাকায় বইমেলায় কলকাতা স্টল দেওয়া যায় কি না সেটা নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানাবো। তার অভিমত বইয়ের বিকল্প বই। সমাজের এক এক শ্রেণীর মানুষ এক এক ধরনের বই পড়ে থাকেন। বইমেলা বৃদ্ধি করছে বইয়ের চাহিদা। বইমেলা একজন লেখকের জীবিকা নির্বাহের তীর্থভূমি।

ads

রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর ১৯৭৫ সালে আমি শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন পড়তে গেলাম কখনই মনে হয়নি অন্য দেশে এসেছি। ভালো সময়, সুখের সময় কেটেছে এই বাংলায়। এক ভাষায় কথা বলে, আনন্দ, দুঃখ সব কিছুই এক। তাই দূরত্ব কৃত্রিম উপায়ে তৈরি করা। আমরা দূরে চলে গেছি অন্য কারণে। এখানকার অধিকাংশ মানুষের শিকড় বাংলাদেশ ফলে তারা যখন বিদেশে ঘুরে আসেন তখন তাদের মধ্যে কোনো দূরত্ব থাকে না। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় দূরত্ব কমেছে, সেতু বন্ধন জোরালো হচ্ছে। ইন্টারনেটের কারণে দূরত্ব বলে কিছু নেই। কিন্তু আমি আশঙ্কাগ্রস্ত যে যেভাবে এপার বাংলায় হিন্দি ও বাংলাদেশে পাশ্চাত্যের চাপ। একসময় রবীন্দ্রনাথকেই না হারিয়ে ফেলি আমরা।

কবি ও সাহিত্যিক সুবোধ সরকার বলেন, হাওয়া ছবি দেখার জন্য রবি ড্র সিডনি লম্বা লাইন। কি করে হলো? কারণ একটা ভালো গান ভালো ছবি যতটা সেতু বন্ধন করতে পারে তা অন্য কিছু পারে না। এ প্রসঙ্গে লিটল ম্যাগাজিনের প্রসংশা করেন তিনি।

পশ্চিমবঙ্গে বাংলা কোনদিন হারিয়ে যাবে না কারণ পাশেই আছে বাংলাদেশ। সেদেশে থেকে একটা ঢেউ সারাক্ষণ আছড়ে পড়ছে পশ্চিমবঙ্গে। ঠিক তেমনি ভাবে একটা ভালো গান যেমন এপার থেকে ওপারে যায় তেমনি ওপারের গান হলে চলে আসে এরাজ্যে। আজকে দর্শকরা সেই টানেই এখানে ছুটে এসেছেন। এই বইমেলায় বহু দেশের বই, পাঠক, প্রকাশক এসেছে। এই মুহূর্তে গোটা বিশ্ব একটা ঘটনার দিকে তাকিয়ে আছে। সেটা হচ্ছে রাম মন্দির। এই বই মেলা রাম মন্দিরকে চ্যালেঞ্জ। এই বইমেলা নতুন করে মানুষকে গড়ে দেবে।

ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় বলেন, সাহিত্য সংযোগের মাধ্যম হতে পারে বই। এই সংযোগ তখনই সুন্দর হতে পরে যখন বইয়ের আদান প্রদান হতে পারে। আমরা চাই বইয়ের আদা প্রদান হোক। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসায় তা পিছিয়ে যায়। আমরা নিশ্চিত চলতি বছরই জুন-জুলাই বাংলা সাহিত্য উৎসব ও বই মেলা হবে। যেখানে বইমেলার পাশাপাশি এখানকার সাহিত্যিক লেখকরা আলোচনায় অংশ নেবেন। সেদেশে এখানকার বইয়ের ক্ষুদা মিটুক। সেমিনার শেষে অনুষ্ঠিত হয় দুই বাংলার জনপ্রিয় শিল্পীদের পরিবেশিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

ad

পাঠকের মতামত