47917

ফিফার সঙ্গে ২০৩০ পর্যন্ত চুক্তি কাতার এয়ারওয়েজের

স্পোর্টস ডেস্ক: কাতারের মাটিতে ২০২২ সালে (২০ নভেম্বর-১৮ ডিসেম্বর) অবিস্মরণীয় এক বিশ্বকাপ আসর অনুষ্ঠিত হয়, যা ছিল মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশে প্রথম ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজন। তার এক বছরের মাথায় ফিফা আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা দিয়েছে, কাতার এয়ারওয়েজের সঙ্গে তাদের দীর্ঘ বন্ধনটা এখানেই শেষ হচ্ছে না। ২০৩০ সাল পর্যন্ত ফিফার গ্লোবাল এয়ারলাইনস সহযোগী হিসেবে থাকছে কাতার এয়ারওয়েজ। সম্প্রতি এ নিয়ে চুক্তি সই হয় দুই পক্ষের মধ্যে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফ্যান্তিনো ও কাতার এয়ারওয়েজের গ্রুপ চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার ইঞ্জিনিয়ার বদর মোহাম্মদ আল-মীর। চুক্তির স্থান হিসেবে বেছে নেয়া হয় আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত হামাদ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টকে। সেখানে বোয়িং ৭৮৭-৮ ও এয়ারবাস এ৩৫০-৯০০ বিমানকে পশ্চাৎপদে রেখে চুক্তিতে সই করেন দুই কর্মকর্তা। পরিশেষে তারা সেখানে ফটোসেশনে অংশ নেন।

ads

২০১৭ সালের মে মাস থেকে ফিফার গ্লোবাল পার্টনার হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে কাতার এয়ারওয়েজ। নতুন চুক্তিতে বিশ্বব্যাপী ফুটবলের প্রসার ও উন্নয়নে এ বিমান সংস্থাটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে বিশ্বাস ফিফার।

২০২০ সালে সফলভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করে মধ্যপ্রাচ্যের ছোট্ট দেশ কাতার। দেশটির অবিশ্বাস্য সুন্দর সব স্টেডিয়াম, অতুলনীয় আতিথেয়তা ও মাঠের নিখাদ নাটকীয়তার কারণে এ বিশ্বকাপ আসরটি ছিল ইতিহাসের অন্যতম সেরা। আর্জেন্টিনা-ফ্রান্স ফাইনালে রুদ্ধশ্বাস নাটকীয়তার পর শিরোপা ওঠে বিশ্বসেরা ফুটবলার লিওনেল মেসির হাতে। কাতারবাসীর গৌরবের এ বিশ্বকাপ আসর শেষ হওয়ার এক বছর পর ফিফার সঙ্গে নতুন চুক্তির ঘোষণা দিল কাতারের রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা কাতার এয়ারওয়েজ।

ads

ফিফা গ্লোবাল এয়ারলাইনস পার্টনার হিসেবে কাতার এয়ারওয়েজ সমর্থকদের সঙ্গে আরো গভীর সম্পর্ক তৈরিতে সমর্থ হবে, তা টুর্নামেন্ট চলাকালে কিংবা বিভিন্ন ডিজিটাল প্লাটফর্মে।

ফিফা প্রেসিডেন্ট ইনফ্যান্তিনো ইনস্টাগ্রাম বার্তায় বলেছেন, ‘ফিফা ও কাতার এয়ারওয়েজের সফল অংশীদারত্বটা আরো আট বছরের জন্য নবায়ন করার ঘোষণা দিতে পেরে আমি গর্বিত। এটা দারুণ এক অংশীদারত্ব, যা ফিফা ও একই সঙ্গে কাতার এয়ারওয়েজকে অনেক সাফল্য এনে দিয়েছে। দুই ভুবনের সেরা ফিফা ও কাতার এয়ারওয়েজের মধ্যকার এ চুক্তিটি বাস্তবায়ন করায় আমি কাতার এয়ারওয়েজের গ্রুপ চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার ইঞ্জিনিয়ার বদর মোহাম্মদ আল-মীর ও তার গোটা টিমকে ধন্যবাদ জানাই। ফিফা বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার এক বছরের মধ্যে আমি কাতারে বসেই খুশির এ খবরটি দিতে পারছি। সেখানেই আমরা আরেকবার উদযাপন করতে পারছি।’

কাতার এয়ারওয়েজ ছাড়াও ফিফার সহযোগী হিসেবে রয়েছে এডিডাস, কোকা-কোলা, ওয়ান্ডা, হুন্দাই ও ভিসার মতো বিশ্বখ্যাত সব ব্র্যান্ড।

এডিডাস: ফিফার সঙ্গে জার্মান স্পোর্টসওয়্যার কোম্পানি এডিডাসের চুক্তিটি পাঁচ দশকেরও বেশি পুরনো। ১৯৭০ সাল থেকে ফিফা বিশ্বকাপের বল সরবরাহ করে আসছে তারা। এছাড়া অফিশিয়াল, রেফারি, বল ক্রু, ভলান্টিয়ারসহ ফিফা-অ্যাফিলিয়েটেড সব ইভেন্টে ইউনিফর্ম সরবরাহ করে এডিডাস। তাদের সঙ্গে ফিফার সর্বশেষ চুক্তি হয় ২০১৩ সালে, মেয়াদ ২০৩০ সাল পর্যন্ত।

কোকা-কোলা: ১৯৫০ সালের বিশ্বকাপ থেকে উপস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টাভিত্তিক বেভারেজ কোম্পানি কোকা-কোলার। ১৯৭৮ সালের বিশ্বকাপে অফিশিয়াল স্পন্সর হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয় কোকা-কোলা। ২০০৬ আসর থেকে বিশ্বকাপের আগে ‘ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ ট্রফি ট্যুর’ আয়োজন করে থাকে এ কোম্পানিটি। ফিফার সঙ্গে তাদের চুক্তি ২০৩০ সাল পর্যন্ত এবং ফিফার সব টুর্নামেন্ট কাভার করে কোকা-কোলা।

ওয়ান্ডা গ্রুপ: প্রথম চীনা কোম্পানি হিসেবে ২০১৬ সালের মার্চে ফিফার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় ওয়ান্ডা গ্রুপ। ফিফার শীর্ষ স্পন্সর হিসেবে এটি ফিফার অধিভুক্ত সব ধরনের টুর্নামেন্টে করপোরেট কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকতে পারছেন। ফিফার সঙ্গে তাদের চুক্তি ২০৩০ সাল পর্যন্ত।

হুন্দাই মোটরস-কিয়া: দক্ষিণ কোরিয়ার পারিবারিক মালিকানাধীন হুন্দাই মোটর গ্রুপের হুন্দাই মোটরস ও কিয়া ফিফার অন্যতম স্পন্সর। ১৯৯৯ সালে ফিফার সঙ্গে চুক্তি হয় হুন্দাইয়ের। তখন ১৩টি টুর্নামেন্টের জন্য তারা চুক্তি করে। এর মধ্যে অন্যতম ২০০২ সালে বিশ্বকাপ, যা জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া যৌথভাবে আয়োজন করে। ফিফা ও হুন্দাই মোটর গ্রুপের বর্ধিত চুক্তির অংশ হিসেবে ২০০৬ বিশ্বকাপে নাম লেখায় কিয়া।

ভিসা: ২০০৭ সাল থেকে ফিফার সহযোগী হিসেবে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ফাইন্যান্সিয়াল প্রোভাইডার ভিসা। ফিফা-অধিভুক্ত সব স্টোর ও ইভেন্টে পেমেন্ট সার্ভিস প্রদান করে থাকে ভিসা এবং ফুটবল সংস্থাটির সঙ্গে মিলে সমর্থকদের নিয়ে নানা কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকে এ কোম্পানিটি। —কাতার এয়ারওয়েজ

ad

পাঠকের মতামত