36195

কানাডায় চিটাগং অ্যাসোসিয়েশনের মিলনমেলা

নিউজ ডেস্কঃ কানাডায় বসবাসরত চট্টগ্রামবাসীদের ঢল নেমেছিল একটি পার্কে। টরন্টো শহর থেকে ১২৫ কিলোমিটার দূরে নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা নিকোলাস ওভাল প্যাভিলয়নে পিকনিকের আয়োজন করে চিটাগং অ্যাসোসিয়েশন কানাডা।

আর এ আয়োজন ঘিরেই যেন অভূতপূর্ব এক মিলনমেলায় পরিণত হয় চাটগাঁইয়াদের বনভোজন। আয়োজকদের দাবি, শহরের সবচেয়ে বড় ও সুশৃংখল অনুষ্ঠান ছিল এটি।

ads

টরন্টো থেকে বিশেষ বাসে কানাডার বিভিন্ন শহরে বসবাসরত চট্টগ্রামবাসীকে নিয়ে যাওয়া হয় পিটারবোরো শহরে। ফলে বাংলাদেশে দূরবর্তী কোনো শহরে পিকনিকে যাওয়ার স্মৃতিকে নতুন করে জাগিয়ে দেয় যেন এই বাসযাত্রা।

টরন্টোয় সফরে আসা চট্টগ্রামের ‘দৈনিক পূর্বকোণে’র পরিচালনা সম্পাদক জসিমউদ্দিন চৌধুরী অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অ্যাসোসিয়েশনের নেতাকর্মীরা এ সময় জসিমউদ্দিন চৌধুরীকে স্বাগত জানান।

ads

সংগঠনের সভাপতি সরওয়ার জামানের সভাপতিত্বে জসিমউদ্দিন চৌধুরীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিবু চৌধুরী, আলমগীর হাকিম, নাসিরউদ্দৌজা, সেলিনা হোসাইন, সৈয়দ শওকত, সেলিনা সরওয়ার, মো শামসুদ্দিন খালেদ সেলিম।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান সংগঠনের ট্রেজারার সনৎ বড়ুয়া, মো সোলায়মান, কফিল উদ্দিন পারভেজ, মো আজম, বিশ্বজিত পাল, আব্দুল মোমেন জুয়েল, আমিনুল ইসলাম, ড. মনজুর মোর্শেদ, ব্যারিস্টার আশরাফুল করিম রনি, ডা. সাগুফা আনোয়ার, শরীফা কামাল মসী প্রমুখ।

পিকনিক মানেই ভুরিভোজন, সাধারণভাবে এমনএকটা ধারনা থাকলেও চিটাগং অ্যাসোসিয়েশন অব কানাডার পিকনিকে খাওয়া দাওয়ার বাইরেও সব বয়সীদের জন্য নানা রকমের খেলাধূলা ও বিনোদনের ব্যবস্থা ছিল।

পিকনিকস্থলে পৌঁছানোর পরপরই সবাইকে সকালের নাস্তা পরিবেশন করা হয়। কায়সার কবিরের নেতৃত্ব আয়েশা, মৌসুমী, ফৌজিয়া, শওকত হোসাইনসহ অন্যান্য ভলান্টিয়াররা নাস্তা বিতরণ করেন। শিবু চৌধুরীর নেতৃত্বে খাবার রান্না ও বিতরণে নিরলস পরিশ্রম করেছেন একটি টিম যারা প্রশংসা অর্জন করেছেন।

নানা বয়সী ছেলেমেয়ের কলকাকলীত স্পোর্টস গ্রাউন্ড যেন কচিকাচাদের মেলায় পরিণত হয়। খেলাধূলার আয়োজনে ছিলেন ফারাহ হোসাইন ফৌজিয়া। তাদের সহযোগিতা করেন তরী, মুনতাহার, উজান। পুরস্কার স্পন্সর করেন চট্টগ্রামের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান শেঠ প্রপারটিস।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি ছিল নানা মনোমুগ্ধকর। স্লো বিটের সুরের মূর্ছনায় যেমন সবাই মোহিত ছিল, ঠিক তেমনি হাই বিটের গানের তালে ছোট বড় সব বয়সের উত্তাল নৃত্য এক অপূর্ব আনন্দময় দৃশ্যের অবতারণা করে। উপস্থিত অতিথিদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় চট্টগ্রাম আইডল সংগীত প্রতিযোগিতা।

সব আয়োজনে বিশেষ করে ইয়াং জেনারেশনের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। বিকেল না গড়াতেই পরিবেশিত হয় মিষ্টি, ঝাল মুডি, তরমুজ, ঐতিহ্যবাহী বেলা বিস্কুট সহকারে দিনব্যাপী ছিল চা বিতরণ। এর মাঝে অনুষ্ঠিত হয় দুই শত এর বেশি নারীর অংশগ্রহণে জমজমাট মিউজিকের তালে তালে পিলো পাস গেমস।

কানিজ ফাতেমার আয়োজনে রেফল ড্রয়ের টিকিট বিক্রি ছিল রেকর্ড পরিমাণ। বিনয়ের নেতৃত্বে দিনব্যাপী চা বিতরণ চলছিল। অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশনায় ছিলেন মৌসুমী বড়ুয়া, মুক্তা পাল, সিরাজী, আলো, শেখর, মারুফ।

সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনায় ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সব্যসাচী চক্রবর্ত্তী। পরিবারের এক সদস্যের আকস্মিক অসুস্থতার কারণে অনুপস্থিত পিকনিক কনভেনর শাহাবউদ্দিন বুলবুলকে সবাই স্মরণ করেন। তার দ্রুত আরোগ্যের জন্য দোয়া করেন।

স্পন্সর- বিশেষ করে টরেন্টো ঢাকা টরেন্টোর টিকিট নিশিথা ফুডসহ ২৩টি র্যাফল ড্রয়ের পুরস্কার বিতরণকারী ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে এবং চারটি বাস স্পন্সর কানন গার্ডিয়ান ফার্মেসি, রিয়েলেটর টিম সোলায়মান, রিয়েলেটর সরওয়ার জামান এবং রিয়েলেটর সনৎ বড়ুয়াকে সংগঠনের পক্ষ থেকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়।

সর্বশেষে ছিল দিনের অন্যতম আকর্ষণ র্যাফেল ড্র। প্রথম পুরস্কার টরেন্টো ঢাকা টরেন্টোসহ ২৩টি পুরস্কার ড্রয়ের মাধ্যমে আমন্ত্রিত অতিথিদের মাঝে বিতরণ করা হয়। সারাদিনের রৌদ্রের আলোছায়ায় মমতা মাখানো দিনের শেষে যখন গৌধুলীর আলোয় আলোকিত সন্ধ্যা নামছিল তখন সংগঠনের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা এই আয়োজনে যাদের অবদান ছিল তাদের ধন্যবাদ দেন।

অতিথি ও আয়োজনকারীদের ক্লান্ত চেহারায় ছিল তৃপ্তির আভাস। এই সুবিশাল আয়োজনে পর্যাপ্ত সুস্বাদু খাবার, অসংখ্য গেমস, সংগীতের মুর্ছনা, র্যাফেল ড্রয়ের পুরস্কার, সর্বোপরী হাজারো চট্টলাবাসীর উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। সন্ধ্যা নামার প্রাক্কালে রাত ৮টায় বনভোজনের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

ad

পাঠকের মতামত