9568

করোনাকাল: জ্বর হলে কি করবেন?

নিউজ ডেস্ক: একটু গা গরম হলেই এখন টেনশন। সঙ্গে কাশি ও গলাব্যথা থাকলে তো কথাই নেই। কোভিড!

আতংকে মানুষ ভুলেই গেছেন সাধারণ ইনফ্লুয়েন্জার কথা।ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে যে নিয়ম করে আসে প্রতিবছর।এবছরও সেই নিয়মের ব্যতিক্রম হয়নি এবং তা বাড়ছে ক্রমাগত। সাধারণ ফ্লুয়ের সঙ্গে এবছর যোগ হয়েছে বাড়তি ভয়। কিন্তু সত্যিই কি ভয় পাওয়ার কিছু আছে?

ads

ইনফ্লুয়েন্জা ভাইরাসের সংক্রমণ হলে হালকা থেকে মাঝারি জ্বরের সঙ্গে গা ম্যাজম্যাজ একটু সর্দি ভাব কখনও নাক দিয়ে পানি পরা বা নাক বন্ধের মতো উপসর্গ থাকে। কাশিও হতে পারে তবে তা এমন যাতে মনে হয় কফ বের করে দেয়ার জন্য কাশছে, কিন্তু কফ বেরোচ্ছে না। এ অবস্থায় চিন্তার কিছু নেই। ঘরে বিশ্রামে থাকুন। গরম পানির ভাপ নিন। হালকা খাবার ও পর্যাপ্ত তরল খাবার খান। জ্বর বাড়লে প্যারাসিটামল টেবলেট খান। মাল্টিভিটামিন টেবলেট ও খেতে পারেন। মাস্ক পরে বাড়ির অন্যদের থেকে দূরে থাকুন, ইনফ্লুয়েন্জার কারণে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।ফলে পরিবারের অন্য কারও সূত্রে করোনা ঘরে এলে সবার প্রথমে তা রোগীর শরীরে সংক্রমণ ঘটাতে পারে।

ইনফ্লুয়েন্জা জ্বর ও কষ্ট সাধারণত ২–৩ দিন থাকতে পারে।তারপর কমে যায় বা কমতে শুরু করে। কিন্তু তা না হয়ে ৪–৫ দিন পরও জ্বর থাকলে ও জ্বর বাড়তে শুরু করলে রোগী দূর্বল হয়ে পড়েন। কিংবা ডায়রিয়া সর্দি কমে গিয়ে শ্বাসকষ্ট বা কাশির মাত্রা যদি বাড়তে শুরু করে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে কোভিডের পরীক্ষা করা উচিত।

ads

খুব বেশি জ্বর হবে এমন কোনও কথাও নেই। হালকা গরম থেকেও শরীরে বাঁধতে পারে ভাইরাল ফ্লু। জ্বরের সঙ্গে মাথাব্যথা দূর্বল লাগা খাদ্যে অরুচী এগুলো অসুস্থতার লক্ষণ। জ্বরের সঙ্গে গা হাত ব্যথা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই থাকে। এলার্জির প্রবনতা থাকলে নাক দিয়ে পানি ঝরা বা সর্দি কাশি দেখা দিতে পারে।

তাহলে কি জ্বর হলেই পরীক্ষা করে নেয়া ভালো? কারণ পরে যদি ধরা পড়ে যে কোভিড ছিল, ততদিনে তো অনেকের মধ্যে রোগ ছড়িয়ে যাবে।

একবার পরীক্ষা হলেই তা নিয়ে নিশ্চয়তার কিছু নেই। তাই জ্বর একদিন দু’দিন থাকলেই তা নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তা ছাড়া এমনিতেও কো মর্বিডিটি না থাকলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কোভিড এতো হালকাভাবে থাকে প্যারাসিটামল সহ কিছু সাধারণ ওষুধ ও একটু বিশ্রামে থাকলেই সব ঠিক হয়ে যায়।

বর্তমানে পরিস্থিতি যা দাড়িয়েছে, তাতে সাবধান না হলে এমনিতেও সবার হবে। কাজেই সতর্ক থাকুন। বাড়িতে কারও জ্বর হলে সে ইনফ্লুয়েন্জা হোক কি কোভিড তাকে সবার থেকে আলাদা করে দিন। রোগী ও পরিবারের সবাই তিন স্তর বিশিষ্ট কাপড়ের মাস্ক পরুন। বার বার হাত ধুয়ে নিন।ইনফ্লুয়েন্জাও যথেষ্ট ছোঁয়াচে।

একটি কথা সব সময় মনে রাখা দরকার যে কোনও একটি সংক্রমণ কিন্তু অন্য সংক্রমণকে ডেকে আনতে পারে।কাজেই সাবধানতার কোনও বিকল্প নেই। সুতরাং জ্বর হলে টেনশন করবেন না। তাতে শরীর আরও দূর্বল হবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দু’তিন দিনে সমস্যা কমে যাবে। কাজেই সাবধানে থাকুন এবং প্রয়োজনবোধে টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করুন। নিকটস্থ যে কোনও রেজিষ্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

মনে রাখবেন, করোনার এই নিদানকালে সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী হবেন গর্ভবতী মা, নবজাতক শিশু এবং বয়স্ক জনগোষ্ঠী।

ডা. মুজিবুর রহমান মুজিব                                   পরিচালক, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

ad

পাঠকের মতামত