9373

দেখার কেউ নেই, ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশু শ্রমিক

নিউজ ডেস্ক: ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশু শ্রমিক নিয়োজিত থাকলেও দেখার কেউ নেই! ওইসব শিশু শ্রমিকের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পেলেও নেই কোন উদ্যোগ। জেলা, উপজেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে কলকারখানা, হোটেল-রেস্তোরাঁ, চায়ের দোকান, ইটপাথর ভাঙা ইটাখোলায়, ওয়েলডিং কারখানা ছাড়াও রিকশাভ্যান চালানোর মতো কঠিন শ্রমে নিয়োজিত রয়েছে ওইসব শিশু শ্রমিক। এসব শিশুর বয়স ১০ থেকে ১২ বছর। এ বয়সে এসব শিশুর হাতে থাকার কথা ছিল বই, খাতা, কলম। কিন্তু নিয়তি এবং আইন না মানার প্রবণতার কারণে স্কুলে যাওয়া-আসা এবং খেলাধুলা থেকে দূরে পড়ে আছে এসব শিশুরা। তবে শিশুদেরকে কঠিন শ্রমে নিয়োজিত করার পেছনের কারণ সংসারের অসচ্ছলতা কারো কারো অভিভাবক না থাকা এবং অসচেতনতা।

হোটেলে বয়ের কাজ করা এক শিশু ইয়াকুব হোসেন জানায়, সংসারের অসচ্ছলতার কারণে স্কুল বাদ দিয়ে মুরগির ফার্মে কাজ নিয়েছি। ইয়াকুব হোসেন আরো জানায়, সে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কাজ করে। বিনিময়ে পায় তিন বেলা খাবার এবং মাসে ৬শ টাকা বেতন যা বর্তমানে অতি নগণ্য। সে ৩য় শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করার সুযোগ পেয়েছিল। অর্থের অভাবে ইয়াকুবের মতো হাজারো শিশুরা সুশিক্ষা থেকে একদিকে যেমন চরমভাবে বঞ্চিত হচ্ছে অপরদিকে পরিবারের অসচ্ছলতার কারণে অনেক স্কুলগামী শিশু ছাত্র শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তবে গ্রাম পর্যায়ে পিতা-মাতার অসচেতনতার জন্য কিছু শিশু শিক্ষার্থী বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়ছে বলে অভিজ্ঞ মহল মত পোষণ করেন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ শিশুশ্রম জরিপের তথ্যানুযায়ী, দেশে ৫ থেকে ৭ বছরের শিশুর সংখ্যা ৩ কোটি ৯৬ লাখ ৫২ হাজার ৩৮৪, যার মধ্যে কর্মক্ষম শিশুর সংখ্যা হলো সাড়ে ৩৪ লাখ, যাদের বয়স পাঁচ থেকে ১৭ বছর বয়সের মধ্যে। এদের মধ্যে ১৭ লাখ শিশু রয়েছে, যাদের কাজ শিশুশ্রমের আওতায় পড়েছে। বাকি শিশুদের কাজ অনুমোদনযোগ্য। আর প্রায় ১৩ লাখ ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে নিয়োজিত। এসব শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত থাকার কারণে তাদের শারীরিক, মানসিক ও নৈতিক বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, যা দেশের সংবিধানের মৌলিক ধারার সাথে সাংঘর্ষিক। জরিপের তথ্যানুযায়ী মোট কর্মক্ষম শিশুদের মধ্যে গ্রামীণ এলাকায় ২৪ লাখ ৭০ হাজার, শহরে ৫ লাখ ৭০ হাজার এবং সিটি করপোরেশনে ৪ লাখ ৩০ হাজার। এদের মধ্যে ছেলে শিশু হলো ২১ লাখ এবং মেয়ে শিশুর সংখ্যা হলো সাড়ে ১৩ লাখ। এসব শিশু শ্রমিক কাজ করছে বাসাবাড়িতে, কৃষিতে, উৎপাদনমুখী শিল্পে, নির্মাণ শিল্পে, খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়, পরিবহনে।

ads
ad

পাঠকের মতামত