২০২১ সালের জুনে পদ্মাসেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ২০২১ সালের জুনের মধ্যেই পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল করবে। তিনি বলেন, ‘পদ্মাসেতু প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৭৩ শতাংশ। কাজ যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ হবে। তবে ফিনিশিংসহ অন্যান্য কার্যসম্পাদন করতে আরো ৫-৬ মাস সময় লাগবে। আশা করছি ২০২১ সালের জুনের মধ্যেই পদ্মাসেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু করবে।’
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের ঋণ পরিশোধের জন্য অর্থ বিভাগ ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের মধ্যে ঋণচুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
চুক্তিপত্রে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পক্ষে সেতু বিভাগের পরিচালক (অর্থ) ড. মো. মনিরুজ্জামান এবং অর্থ বিভাগের পক্ষে অতিরিক্ত সচিব মো. এখলাছুর রহমান চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
সেতুমন্ত্রী জানান, দ্রুতগতিতে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ এগিয়ে চলছে। মূল সেতুর ৪২টি পিয়ারের মধ্যে ৩১টি পিয়ারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে, বাকী ১১টি আগামী ডিসেম্বর নাগাদ শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এছাড়া মূল সেতুর সব পাইল ড্রাইভিং কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এ পর্যন্ত মাওয়া সাইটে ২৭টি স্প্যান এসেছে, যার মধ্যে ১৪টি স্প্যান বসানো হয়েছে। পদ্মা সেতু নির্মাণের সার্বিক অগ্রগতি শতকরা ৭৩ ভাগ।
পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সরকার বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষকে ২৯ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকার ঋণ দিয়েছে। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষকে এ ঋণ অর্থ বিভাগের মাধ্যমে প্রদান করা হয়েছে। পদ্মা সেতু নির্মাণের পর প্রাপ্ত আয় থেকে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সরকারকে সুদসহ অর্থ পরিশোধ করবে।
এছাড়া ঋণ চুক্তি মোতাবেক বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে অর্থবিভাগ তথা বাংলাদেশ সরকারকে ঋণ পরিশোধ করবে। উক্ত ঋণ পরিশোধের মেয়াদ হবে ৩৫ বছর। ১ শতাংশ সুদ হারে সুদসহ ঋণ পরিশোধ করা হবে। ঋণ পরিশোধের সিডিউল অনুযায়ী প্রতি অর্থবছরে প্রায় সর্বনিম্ন ৮২৬ কোটি থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ বঙ্গবন্ধু সেতু প্রকল্পে তিনটি দাতা সংস্থার কাছ থেকে গৃহীত ঋণ বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বাসেক) ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সম্পাদিত ঋণ চুক্তি অনুযায়ী ঋণের আসল ও সুদসহ প্রতি বছর ৪ কিস্তিতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে পরিশোধ করছে। বাসেক প্রতি অর্থবছরে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা এ বাবদ বাংলাদেশ সরকারকে পরিশোধ করে আসছে। আগামী ২০৩৩-৩৪ অর্থবছরে এই ঋণ সুদসহ সম্পূর্ণ পরিশোধ হবে।
চট্টগ্রামে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল (কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ প্রকল্প) এর ব্যয়ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সরকারকে পরিশোধ করবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, অর্থ বিভাগের সচিব আব্দুর রউফ তালুকদারসহ অর্থ বিভাগ, সেতু বিভাগ এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।