1241

মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া পাঁচজন কয়েদির সাজা কার্যকরের উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। এর ফলে ১৬ বছর পর প্রথমবারের মতো দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হতে যাচ্ছে। খবর বিবিসি।

২০০৩ সালের পর এই মৃত্যুদণ্ডের সাজা কার্যকর করতে যাচ্ছে দেশটির বিচার বিভাগ। দেশটির ডানপন্থী ও ডেমোক্রেটিক নেতারা এ সাজার সমালোচনা করে মৃত্যুদণ্ড বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছেন।

ads

বৃহস্পতিবার দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার এক বিবৃতিতে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় জেল কর্তৃপক্ষকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ কয়েদির সাজা কার্যকর করার জন্য সময় নির্ধারণ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বর এবং ২০২০ সালের জানুয়ারিতে এই পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে। যাদের মৃত্যুদণ্ডের সাজা কার্যকর হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের ধর্ষণ এবং হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হয়।

উইলিয়াম বার বলেন, উভয় দলের প্রশাসনের অধীনে নিকৃষ্ট সব অপরাধীর সাজা মৃত্যুদণ্ড হোক, এটা প্রত্যাশা করে বিচার বিভাগ। একইসঙ্গে বিচার বিভাগ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে আসছে, যা আমরা সবকিছুর ঊর্ধ্বে রাখতে চাই। ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের প্রতি আমরা দায়বদ্ধ। বিচার ব্যবস্থার পদ্ধতি মেনে ভুক্তভোগীরা নিজেদের ক্ষতির বিচার চেয়ে এসেছেন। এজন্য আমরা তাদের কাছে ঋণী।

ads

এর আগে ২০০৩ সালে ৫৩ বছর বয়সী লুইস জোনস জুনিয়রের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয়ভাবে এ সাজা কার্যকরে অলিখিত স্থগিতাদেশ ছিল। প্রায় ১৬ বছর পর বৃহস্পতিবার অ্যাটর্নি জেনারেলের নতুন ঘোষণার মাধ্যমে সে স্থগিতাদেশ বাতিল হয়েছে। উপসাগরীয় যুদ্ধে অংশ নেওয়া লুইস ১৯ বছর বয়সী সৈন্য ট্রেসি জো ম্যাকব্রাইডকে হত্যা করেছিলেন। ওই অপরাধে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় তার মৃত্যুদণ্ড হয়।

আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন কাছাকাছি সময়ের মধ্যে পরপর পাঁচটি মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘোষণায় উদ্বেগ জানিয়েছে।

নিয়ম অনুযায়ী, মার্কিন বিচার ব্যবস্থায় যে কোনো অপরাধের বিচারই কেন্দ্র কিংবা রাজ্যের আদালতে চলতে পারে। তবে মুদ্রা জালিয়াতি কিংবা মেইল চুরির সুনির্দিষ্ট কিছু অপরাধের বিচার স্বয়ংক্রিয়ভাবেই কেন্দ্রীয় আদালতের এখতিয়ারে চলে যায়। ১৯৭২ সালে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট এক সিদ্ধান্তে সব মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বাতিল করে দিলে কেন্দ্র ও রাজ্য পর্যায়ে সর্বোচ্চ সাজা হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান অচল হয়ে পড়ে।

চার বছর পর সুপ্রিম কোর্ট কিছু কিছু রাজ্যে মৃত্যুদণ্ডের বিধান ফিরিয়ে আনে, পরে ১৯৮৮ সালে তৎকালীন মার্কিন সরকার কেন্দ্রীয়ভাবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সুযোগ রেখে আইন পাস করে। ২০১৮ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আদালত ৭৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিলেও এখন পর্যন্ত মাত্র তিনজনের সাজা কার্যকর করেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ডেথ পেনাল্টি ইনফরমেশন সেন্টার।

দেশটিতে এখন মৃত্যুদণ্ড পাওয়া কয়েদির সংখ্যা ৬২ বলেও জানিয়েছে তারা।

ad

পাঠকের মতামত