973

কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশিদের ‘থিয়েটার ফেস্টিভ্যাল’

কানাডার টরন্টো শহরে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো দুই দিনব্যাপী থিয়েটার ফেস্টিভ্যাল। ‘আন নব উল্লাস হিল্লোল’ শীর্ষক এই উৎসব চলে শনিবার (৬ জুলাই) ও রোববার (৭ জুলাই) ফেয়ারভিউ থিয়েটার হলে অনুষ্ঠিত হয়। অন্য থিয়েটার টরন্টো, বাংলাদেশ থিয়েটার টরন্টো এবং থিয়েটার ফোকস টরন্টোর আয়োজনে নাট্য উৎসবটি সঞ্চালনা করেন চয়ন দাস ও মেরী রাশেদীন।

আহমেদ হোসেনের নির্দেশনায় ‘অন্যথিয়েটার টরন্টো’ লুৎফর রহমান রিটনের ‘আত্মহননের পূর্বরাত্রিতে’ অভিনয় করেন ফারহানা শান্তা । ইমামুল হকের ভাবনা বিন্যাস আর পরিকল্পনায় ‘থিয়েটার ফোকস’ এর নিরীক্ষাধর্মী নাটক ‘টেলস অব বাংলাদেশি ডায়াস্পোরায়’ শিল্পীরা নিজের জীবনগল্পই যেন উপস্থাপন করেন।

ads

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা ‘ডিসি মেট্রো থিয়েটার’ পরিবেশন করে উইলিয়াম শেক্সপিয়রের ‘হ্যামলেট’  এর আলী যাকের রূপান্তরিত ‘দর্পণ’ নাটক। এটি নির্দেশনা দেন জাফর রহমান।

ads

দ্বিতীয় দিনে মঞ্চস্থ হয় ‘টরন্টো বেঙ্গলি ড্রামা গ্রুপ’ এর ‘হঠাৎ দেখা’। নাটকের নির্দেশক ছিলেন অপরাজিতা দাস। ইতিহাস, দেশ সমাজ মঞ্চস্থ করে আকতার হোসেনের রচনা এবং নির্দেশনায় ‘ইচ্ছাপূরণ’ আর ‘বাংলাদেশ থিয়েটার টরন্টো’ মঞ্চস্থ করে ‘এক যে ছিল দুই হুজুর’। নাটকটি রচনা করেন রবিউল আলম আর নির্দেশনা দেন হাবিবউল্লাহ দুলাল ও রবিউল আলম।

অন্যথিয়েটার টরন্টো বিমল বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘অতঃপর হরেন মন্ডল’ দিয়ে নাট্য উৎসব শেষ হয়।  নাটকটি নির্দেশনা দেন বাহারউদ্দিন খেলন এবং প্রয়োগে ছিলেন আহমেদ হোসেন।

উৎসবে নাট্যবিষয়ক দুটো সেমিনার দিয়ে নাট্য পরিবেশনা শুরু হয়। প্রথম দিনে ‘অভিবাসীর নাট্যচর্চা: বাঙালির রূপ-অরূপের খোঁজ’ বিষয়ে মূল নিবন্ধ পাঠ করেন মিথুন আহমেদ। প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন কবি আসাদ চৌধুরী ও হাসান মাহমুদ।

আয়োজকদের এ উদ্যোগের প্রশংসা করে কবি আসাদ চৌধুরী বলেন, “দেয়া আর নেয়ার সংস্কৃতির ভেতর দিয়েই আমাদের সংস্কৃতি আর নাটক ঋদ্ধ হবে। দেশ থেকে অনেক দূরের এমন আয়োজন প্রবাসীদের বাংলা নাট্যচর্চায় আগ্রহী করবে আর সেই সাথে আশা করি প্রবাসে বাংলা নাটকের জন্য দর্শক তৈরিতেও বিশেষ ভূমিকা রাখবে।”

দ্বিতীয় দিনে ‘বাংলা নাট্যচর্চা দেশে বিদেশে’ শিরোনামে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন আকতার হোসেন। এতে আলোচনায় অংশ নেন সিডনি থেকে আসা অতিথি নাট্যকর্মী অভিনেতা জন মার্টিন, টরন্টোর সংস্কৃতিকর্মী ইমামুল হক ও আহমেদ হোসেন।

জন মার্টিন বলেন, “প্রবাসে নাট্যচর্চার নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যে অন্যতম হলো কষ্টসাধ্য সাধনার মধ্য দিয়ে একটি নাটক তৈরির পর অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা একাধিক মঞ্চায়নের সুযোগ পায় না। একজন নাট্যকর্মী হিসেবে এটি আমাদের খুবই আহত করে।”

ইমামুল হক বলেন, “নানা সীমাবদ্ধতার ভেতরে থেকেও প্রবাস জীবনে বাংলা সংস্কৃতি ও নাট্যচর্চার জন্য কিছু নিবেদিত মানুষের জন্যই প্রবাসী বাঙালিরা এমন আয়োজনের মধ্য দিয়ে একসঙ্গে হতে পারলেন। নাট্যচর্চার ক্ষেত্রে দর্শক তৈরির কোনো বিকল্প নেই, আশা করি সম্মিলিত উদ্যোগে আমরা আগামীতে আমাদের নাটকের জন্য ভালো দর্শক ও পৃষ্ঠপোষক তৈরি করতে পারবো।”

উৎসবে ‘সুকন্যা নৃত্যাঙ্গন’ নৃত্য পরিবেশন করে।

ad

পাঠকের মতামত