
বায়ু দূষণে প্রতি বছর ৪৫ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু: জাতিসংঘ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বায়ু দূষণের কারণে বিশ্বে প্রতি বছর ৪৫ লাখের বেশি মানুষ সময়ের আগেই মারা যাচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিল্পায়ন, যানবাহন নির্গমন ও বনাঞ্চলের ধ্বংসের কারণে ক্ষতিকর কণার মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে, যা মানবদেহের ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, এটি শুধু স্বাস্থ্যকেই নয়, পরিবেশ ও অর্থনীতিকেও বিপদে ফেলছে। খবর আলজাজিরার।
শুক্রবার প্রকাশিত বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডাব্লিউএমও) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘন ঘন বন্যা হচ্ছে এবং বায়ু দূষণে ক্ষতিকর কণা এমনকি অন্য মহাদেশের বায়ুর মানও মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। সংস্থার প্রতিবেদনে এই দূষককে ‘মিশ্র দূষক’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে, যা মানুষের স্বাস্থ্য, পরিবেশ এবং অবকাঠামোর জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।
ডব্লিউএমও তাদের পঞ্চম বার্ষিক বায়ু মান ও জলবায়ু বুলেটিনে জানিয়েছে, আমাজন, কানাডা ও সাইবেরিয়ার বড় ধরনের বন্যাহার প্রমাণ করেছে যে, বায়ুর মান কত বিস্তৃতভাবে প্রভাবিত হতে পারে।
সংস্থার উপ-সচিব কো ব্যারেট বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন ও বায়ু দূষণকে আলাদাভাবে সমাধান করা যায় না। আমাদের এগুলো একসাথে মোকাবিলা করতে হবে, যাতে আমাদের গ্রহ, সমাজ এবং অর্থনীতি সুরক্ষিত থাকে।”
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ক্ষুদ্র কণা, বিশেষত যেগুলোর ব্যাসার্ধ দুই পয়েন্ট পাঁচ মাইক্রোমিটার বা তার কম, মানুষের ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রে প্রবেশ করতে পারে এবং মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। বায়ু দূষণের কারণে মানুষের স্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি কৃষি এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি কমানোর জন্য উন্নত পর্যবেক্ষণ এবং কার্যকর নীতি প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
জাতিসংঘের গ্লোবাল আবহাওয়া বিভাগের প্রধান পাওলো লাজ বলেন, “যখন দেশগুলো দূষণ কমানোর পদক্ষেপ নেয়, তখন তা আবহাওয়ার তথ্যের মাধ্যমে স্পষ্ট দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ, চীনের শহরগুলো দশ বছরের মধ্যে নাটকীয়ভাবে বায়ুর মান উন্নত করেছে। এটি সত্যিই চমকপ্রদ।”
তিনি আরো বলেন, “একটি পদক্ষেপের মাধ্যমে সব সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়, তবে সঠিক পদক্ষেপ নিলে তা কার্যকর হয়।”